সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: ৯ মাসের ব্যবধান মাত্র। এক শিবির থেকে অন্য শিবিরে যাতায়াতে ফের একবার খবরের শিরোনামে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajib Banerjee)। রবিবার ত্রিপুরায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) সভায় তিনি তৃণমূলে ফিরেছেন। নিজের ভুল স্বীকার করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘মা’ সম্বোধন করেছেন তিনি। রাজীবের এই প্রত্যাবর্তন নিয়ে ইতিমধ্যেই গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে দুই শিবিরেই। তাঁর দলে ফেরাকে ভালভাবে নিচ্ছেন না তৃণমূলেরই একাংশ। এ বিষয়ে শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যাপক ক্ষুব্ধ। রাজীবকে ‘আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলে তোপ দেগেছেন। রাজীব ছিলেন বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য। তাই তাঁর দলত্যাগের দায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপর চাপিয়েছেন বিজেপি নেতারা। ‘পাপ’ বিশেষণে তাঁকে কটাক্ষ করলেন অনুপম হাজরা।
রবিবার দুপুরে ত্রিপুরার সভায় রাজীবের ‘ঘর ওয়াপসি’র পর সর্বপ্রথম প্রতিক্রিয়া দিলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল (TMC) সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। আক্ষেপ করতে গিয়ে তিনি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতা আওড়ালেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ”রাজীবকে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব জয়েন করিয়েছে। এটা দলের সিদ্ধান্ত। মেনে নিতে হবে। কিন্তু আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত একজন – যাঁর তিন, চারটে বাড়ি আছে, দুবাইতে টাকা লেনদেন হয়, তাঁকে কীভাবে জয়েন করানোর সিদ্ধান্ত নিল দল?” তাঁর আরও বক্তব্য, ”অভিষেক বলেছিলেন, দলের নেতাদের কারও মনে আঘাত করে বিশ্বাসঘাতকদের দলে নেওয়া হবে না। আমি দলের একজন সাংসদ। আমার খারাপ লাগছে এতে। কিন্তু দলে থাকতে হলে তো শীর্ষ নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত মেনেই চলতে হবে।” সাংসদের মতে, ”এখন আমার সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘কেউ কথা রাখেনি’ কবিতাটা মনে পড়ছে।”
[আরও পড়ুন: স্ত্রী ও শ্বশুরের ‘নিপীড়নে’র শিকার হয়েই খুন! মনোহরপুকুর কাণ্ডে চাঞ্চল্যকর দাবি ধৃত স্বামীর]
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির আমন্ত্রিত সদস্য। এই অবস্থায় তাঁর দলত্যাগের জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকেই দায়ী করেছেন বিজেপি নেতারা। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Mazumder)বক্তব্য, ”রাজীবকে সম্মান দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু সম্মানটা তিনি রাখতে পারলেন না। ইস্তফাপত্র দিয়ে যেতে পারতেন। জাতীয় কর্মসমিতির সদস্যপদটা ছেড়ে যেতে পারতেন।”
[আরও পড়ুন: ‘অব কি বার, ২৫ পার’, লোকসভায় বঙ্গ বিজেপির টার্গেট বেঁধে দিলেন সুকান্ত-দিলীপরা]
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা অনুপম হাজরার (Anupam Hazra) কটাক্ষ, ”এটা হওয়ারই ছিল। ২ মে’র পর থেকেই তিনি তৃণমূল শিবিরে যাওয়ার জন্য পা বাড়িয়ে ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গে এন্ট্রি নিতে পারেননি বলে ত্রিপুরায় গিয়ে এন্ট্রি নিয়েছেন। তবে যা হয়েছে, ভাল হয়েছে। পাপ যত তাড়াতাড়ি বিদায় হয়, ততই ভাল।” দিলীপ ঘোষও তাঁকে ‘দালাল’ বলে চিহ্নিত করে ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, দলবদলকারী অন্যদেরও দল থেকে তাড়ানো হবে।
সূত্রের খবর, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে ত্রিপুরার দায়িত্ব দিতে চলেছে তৃণমূল। অন্যদিকে, রাজীবের দলবদলের পর জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে বসতে চলেছে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। নতুন কমিটি গঠন নিয়ে আলোচনা হতে পারে।