অভিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: মঙ্গলবার রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Rajib Banerjee) ফেসবুক পোস্ট ঘিরে উসকেছিল দলবদলের জল্পনা। আর তার পরের দিনই রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে পোস্টারে ছেয়ে গেল ডোমজুড়। ‘তৃণমূল ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, দলে তাদের কোনও ঠাঁই নেই।’ রাজীবকে দলে না ফেরানোর দাবি তুলে এই পোস্টারই পড়েছে ডোমজুড়ের যত্রতত্র।
একুশে বিধানসভা নির্বাচনে অভাবনীয় সাফল্যের পরই দলত্যাগীদের মধ্যে তৃণমূলে (TMC) ফেরার হুজুগ দেখা যাচ্ছে। তারই মধ্যে ডোমজুড়ের প্রাক্তন বিধায়কের পোস্ট ঘিরে শুরু হয় তীব্র জল্পনা। বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে রাজীব লিখেছিলেন, “সমালোচনা তো অনেক হল। মানুষের বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আসা নির্বাচিত সরকারের সমালোচনা ও মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতা করতে গিয়ে কথায় কথায় দিল্লি আর ৩৫৬ ধারার জুজু দেখালে বাংলার মানুষ ভালভাবে নেবে না। আমাদের সকলের উচিত রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কোভিড (COVID-19) ও ইয়াস- এই দুই দুর্যোগে বিপর্যস্ত বাংলার মানুষের পাশে থাকা।” অর্থাৎ বিভিন্ন ইস্যুতে লাগাতার রাজ্যের সমালোচনা করা এবং মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতা করতে গিয়ে কেন্দ্রের নেওয়া পদক্ষেপে বিরক্তিই প্রকাশ করলেন রাজীব। একইসঙ্গে বিজেপির উগ্র হিন্দুত্ববাদ নিয়ে যে তিনি অসন্তুষ্ট, তাও স্পষ্ট করে দেন। আর এরপরই তৃণমূল কর্মীরা রাজীবকে দলে না ফেরানোর দাবি তুলেছেন। এদিন ডোমজুড়ের বিভিন্ন স্থানে পোস্টার লাগিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁরা আরজি জানিয়েছেন, তৃণমূলে যেন কোনও গদ্দার, মীরজাফরদের জায়গা দেওয়া না হয়।
[আরও পড়ুন: পুরুলিয়ায় প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলরের উপর হামলা, গ্রেপ্তার BJP বিধায়কের ভাই-সহ ২]
রাজীবের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, তোলাবাজির মতো একাধিক অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা। তাঁকে যাতে দলে না ফেরানো হয়, তার জন্য আগেভাগেই পোস্টারে বিরোধিতা করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী অরূপ রায়ের বক্তব্য, “প্রয়োজনের সময় যারা দলকে বিপদে ফেলে চলে যায়, সেই গদ্দারদের কোনও জায়গা নেই। দলে কোনও বিশ্বাসঘাতককে চাই না। মানুষ ওকে ৪২ হাজারের বেশি ভোটে হারিয়ে সেটা বুঝিয়েই দিয়েছে।”
এদিকে, নিজের ফেসবুকে বিজেপির বিরোধিতা করায় গেরুয়া শিবিরেরও কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছে রাজীবকে। তাঁকে তীব্র খোঁচা দেন সৌমিত্র খাঁ। “৪২ হাজার ভোটে হারার পর এসব কথা মনে পড়ল? ভোট পরবর্তী হিংসার সময় কোথায় ছিলেন? আপনি নীরব না থেকে বিজেপি কর্মীদের পাশে থাকলে ভাল হয়। নাহলে গাড়ির পিছনে যে ছবিটা আছে সেটা আবার সামনের সিটে নিয়ে আসুন।” লেখেন সৌমিত্র। সবমিলিয়ে দুই শিবিরেই কার্যত কোণঠাসা রাজীব।