সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিন কয়েক ধরে নাগাড়ে দাম বাড়তেই কমছে আম গেরস্তের আলু কেনার অভ্যেস। চন্দ্রমুখী তো বটেই, জ্যোতি আলুও যিনি আগে বাজারে এলেই কেজি দুয়েক ঝোলায় ভরতেন তিনিও এখন একটু সমঝে কিনছেন। তবে চাহিদা কমলেও দাম কমছে না। আড়তদাররা জানাচ্ছেন, পাইকারি বাজারে জ্যোতি আলুর দাম এক টাকা কমেছে। তবে তার প্রভাব খুচরো বাজারে এসে পড়েনি। যে কারণে এখনও খুচরো বাজারে জ্যোতি বিকোচ্ছে বাজারভেদে ৩০-৩২ টাকা আর চন্দ্রমুখী ৪০-৪২ টাকায়। এখনই আলুর দাম কমার কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। দেরিতে হলেও জ্যোতির দাম কিছুটা কমলেও কমতে পারে। কিন্তু চন্দ্রমুখী ৪০ টাকার কম হবে না। তাঁদের বক্তব্য, হিমঘরেই এবার আলু ঢুকেছে অনেক বেশি দামে। তারপর হিমঘরের ভাড়া, শ্রমিকের খরচ রয়েছে। খুচরো বাজারে ব্যবসায়ীদের লাভের ব্যাপার রয়েছে। সবমিলিয়ে দাম কমার এখনই তেমন কোনও সম্ভাবনা দেখছেন না কেউ।
হেঁশেলের তরকারিতে কমেছে আলুর পরিমাণ। ছোট রেস্তোরাঁয় বিরিয়ানির দোকানে আলু দেওয়া বন্ধ। সবেতেই আলুতে টান। কারণ সেই দামের ছ্যাঁকা। “আগে রোজ যেখানে ৬৫-৭০ কেজি আলু বিক্রি হত, এখন তাই কমে ৫০ থেকে ৫৫ কেজি হচ্ছে। অনেকেই আলু কম কিনছেন।”–শুক্রবার গড়িয়াহাট বাজারে বসে বলছিলেন আলু ব্যবসায়ী শ্যামল সর্দার। পাশের দোকানদারের গলাতেও একই সুর। চাহিদা কমলে তো দাম কমে জিনিসের। তাহলে?
[আরও পড়ুন: দীর্ঘদিন পর দলীয় কর্মসূচিতে সিপিএম নেতা গৌতম দেব, তুঙ্গে জল্পনা ]
আড়তদাররা জানাচ্ছেন, চাষিদের কাছ থেকে হিমঘরে এবার জ্যোতি আলু ঢুকেছে ১৮ টাকা কেজিতে। আর চন্দ্রমুখী ২৫ টাকা। সেই আলু যখন হিমঘর থেকে বেরোনো শুরু করছে, তার দাম ৬ থেকে ৭ টাকা বেড়ে যাচ্ছে। কারণ হিমঘর ভাড়া থেকে শ্রমিকের মজুরি আলু বাছাই সবই তাতে যুক্ত হচ্ছে। অর্থাৎ হিমঘর থেকে এবার চন্দ্রমুখী আলুর বাজারে রওনা দেওয়ার সময়ই দাম হয়ে যাচ্ছে ৩২ টাকা আর জ্যোতির ২৫ টাকা। এরপর পরিবহণ খরচ ও অন্যান্য খরচ নিয়ে পাইকারি বাজার ঘুরে সেই আলু যখন খুচরো বাজারে আসছে তখন চন্দ্রমুখীর দাম ৪০-৪২ এবং জ্যোতির ৩০,৩২ টাকা হয়ে যাচ্ছে। যেহেতু আলু হিমঘরে থাকে, তাই বাজারে চাহিদা কমলেও মাল নষ্ট হওয়ার কোনও ভয় নেই। তাই চাহিদা কমলে অন্য জিনিস যেমন নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় দাম কমিয়ে আড়তদার বা ব্যবসায়ীরা ছেড়ে দেন, আলুর ক্ষেত্রে তা হয় না। যতক্ষণ না নতুন আলু বাজারে উঠবে, ততক্ষণ স্টোর হওয়া আলু কম দামে ছাড়ার কোনও প্রশ্ন থাকছে না। আর নতুন আলুর চাষ হয় বছরশেষে। তবুও পাইকারি বাজারে জ্যোতি আলুর দাম এক টাকা কমেছে। কিন্তু তার প্রভাব এখনও খুচরো বাজারে এসে পড়েনি। পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির চেয়ারম্যান লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, “আলুর দাম বাড়ায় তার চাহিদা কিছুটা কমেছে। পাইকারি বাজারে জ্যোতি আলুর এক টাকা দামও কমেছে। কিন্তু খুচরো বাজারে সেই দাম কমেনি। যেহেতু চাষিদের থেকেই এবার আলু অনেক বেশি দামে হিমঘরে ঢুকেছে। সেই কারণে খুব একটা দাম কমবে না।” আলুর এই চড়া দামের জন্যই বিভিন্ন রেস্তরাঁয় আলু ছাড়াই পরিবেশন করা হচ্ছে বিরিয়ানির।