shono
Advertisement

Breaking News

Prakash Karat

বিজেপি বিরোধিতায় গয়ংগচ্ছ মনোভাব সিপিএমে! 'বৃদ্ধতন্ত্র' কাটানোর দাবি কারাটের

বুধবার থেকে তামিলনাড়ুর মাদুরাইতে শুরু হচ্ছে সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস।
Published By: Amit Kumar DasPosted: 11:56 AM Apr 01, 2025Updated: 11:56 AM Apr 01, 2025

বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: শুধু ভোটের সময় বিজেপি ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) বিরোধিতা করলে চলবে না। বছরভর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও সংঘের বিরোধিতায় নামতে হবে পার্টিকে। সংঘের বিরোধিতায় পার্টির অন্দরে গয়ংগচ্ছ মনোভাব রয়েছে বলে স্বীকার করে নিলেন সিপিএম পলিটব্যুরোর আহ্বায়ক প্রকাশ কারাট। তাঁর স্বীকারোক্তি, দীর্ঘদিন ধরেই পার্টি বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছে। সিপিএমকে এর থেকে মুক্ত হতে হবে বলে জানান তিনি।

Advertisement

আগামীকাল অর্থাৎ বুধবার থেকে তামিলনাড়ুর মাদুরাইতে শুরু হচ্ছে সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস। সেখানে পাঁচদিন ধরে সীতারাম ইয়েচুরির উত্তরসূরি খোঁজার পাশাপাশি আগামী দিনে পার্টির রাজনৈতিক রণকৌশল ও সংগঠনকে মজবুত করার ফর্মুলা নিয়ে আলোচনা হবে। ঠিক তার আগে পার্টির অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিয়ে কারাত মুখ খোলায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, সংঘ সম্পর্কে তার উপলব্ধি এত দেরিতে কেন? তিনি যখন ছ’বছর দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তখন কেন সংঘ বিরোধিতায় মুখ খালেননি বা পার্টিকে পথ দেখাননি।

পার্টি বিজেপি, আরএসএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বলে। কিন্তু তা শুধুমাত্র ভোটের সময়। আরএসএস সাংস্কৃতিক, সামাজিক ক্ষেত্রে কাজ করে চলেছে। কিন্তু, সেখানে পার্টি কোথায়? প্রশ্ন তুললেন প্রকাশ কারাত। ২৪-তম পার্টি কংগ্রেসের ঠিক মুখে এই ভাষাতেই গেরুয়া বিরোধী আন্দোলনের অন্তঃসারশূন্যতা ও নিজেরই দলের কার্যকলাপ নিয়ে মুখ খুললেন কারাট। কারাট সাম্প্রতিক অতীতে দলের সাফল্য ও ব্যর্থতা নিয়েও মুখ খোলেন। এমনকী লোকসভা ভোটের আগে গঠিত বিরোধীদের ইন্ডিয়া জোটের উপরও আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, “পলিটব্যুরোর অনেক সদস্যই বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছেন। তাঁদের দল কার্যভার থেকে মুক্তি দেবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা হবে পার্টি কংগ্রেসে। পলিটব্যুরোতে আসার মতো নতুন ও যোগ্য নেতার অভাব নেই। এমনকী বর্তমানের অনেককে দল অব্যাহতি দিলেও শিক্ষিত-মেধাবী, যোগ্য নেতার খরা দেখা দেবে না।”

গেরুয়া শিবিরের বিরোধিতা প্রসঙ্গে কারাটের মত, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সিপিএমের আন্দোলন কেবলমাত্র ভোটভিত্তিক হয়ে থাকা উচিত নয়। গণভিত্তি এবং ভোটশক্তি বৃদ্ধি করতে হবে। কীভাবে তা সম্ভব তা নিয়ে পার্টি কংগ্রেসে বিস্তারিতে আলোচিত হবে। এদিন তিনি স্বীকার করেন, পার্টির নিজস্ব শক্তি সেভাবে বিকশিত হতে পারেনি। এর জন্য কিছু কারণ ও বিষয়কে আমরা চিহ্নিত করেছি। তা নিয়েও পার্টি কংগ্রেসে আলোচনা করে সঠিক পথের সন্ধানের চেষ্ঠা হবে।

এবার পার্টি কংগ্রেসের মূল বিষয়বস্তু হল রাজনৈতিক প্রস্তাব। এই প্রসঙ্গে কারাট জানান, কোন রাজনৈতিক কৌশলগত রণকৌশল নেওয়া হবে তা নিয়েও কংগ্রেসে আলোচনা হবে। কারণ যে প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে তার উপর বেশ কিছু সংশোধনী এসেছে। তিনি জানান, দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, সাংগঠনিক রিপোর্ট। গত তিন বছরের কার্যাবলির ফলাফল নিয়ে আলোচনা হবে কংগ্রেসে। ইন্ডিয়া জোট ও দেশের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সঙ্গে যাওয়া নিয়ে কারাট বলেন, “আমাদের বরাবরের লক্ষ্য ছিল আরএসএস এবং বিজেপির বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ লড়াই। দেশের ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্র রক্ষার লড়াইয়ে ইন্ডিয়া জোট গড়ে উঠেছিল ভোটের আগে। কিন্তু কর্তৃত্ববাদী মোদি সরকারকে সম্পূর্ণ পরাস্ত করতে না পারলেও আমরা আংশিক সাফল্য পেয়েছি। কারণ এই জোট গড়ে ওঠায় মোদির বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য যদি নির্বাচনই হয়, তাহলে বলতে পারি সেটা কোনও লক্ষ্যই নয়। তাই সিপিএমকে নিজের শক্তিতে এই হিন্দুত্ববাদী শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।” সেইসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ বা ত্রিপুরায় দলের হারানো সম্মান পুনরুদ্ধার করাই কেবলমাত্র সিপিএমের লক্ষ্য নয় বরং আমরা গোটা দেশে কীভাবে এগিয়ে যেতে পারব তার একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। সেই সাংগঠনিক প্রক্রিয়াই হবে পার্টি কংগ্রেসে। আমাদের লক্ষ্য, দলের ভিত ও নিজস্ব শক্তিকে ফিরে পাওয়া।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • সংঘের বিরোধিতায় পার্টির অন্দরে গয়ংগচ্ছ মনোভাব রয়েছে বলে স্বীকার করে নিলেন সিপিএম পলিটব্যুরোর আহ্বায়ক প্রকাশ কারাট।
  • কারাটের বার্তা, বছরভর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও সংঘের বিরোধিতায় নামতে হবে পার্টিকে।
  • শুধু ভোটের সময় বিজেপি ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) বিরোধিতা করলে চলবে না, বলে বার্তা পলিটব্যুরোর আহ্বায়কের।
Advertisement