সুরজিৎ দেব , ডায়মন্ড হারবার: দিনকয়েক আগে বেসুরো গাওয়া ডায়মন্ড হারবারের বিধায়ক দীপক কুমার হালদারের সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠক করলেন প্রশান্ত কিশোরের চার প্রতিনিধি। আলোচনায় কোনও সমাধানসূত্র এখনও না বের হলেও বিধায়ক জানিয়েছেন, তৃণমূলেই তিনি ছিলেন, তৃণমূলেই আছেন।
কয়েকদিন আগে ডায়মন্ড হারবারের বিধায়ক সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন তাঁর অভিমানের কথা। বলেছিলেন, ২০১৬ সালে বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার পর গত সাড়ে চার বছর ধরে তাঁকে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। এরপরই জল্পনা শুরু হয়েছিল তৃণমূল (TMC) -এর অন্দরে। ডায়মন্ড হারবারে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় তাঁর অনুপস্থিতি সেই জল্পনা আরও উসকে দেয়। তাই মঙ্গলবার বিধায়কের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে ডায়মন্ড হারবারে আসেন প্রশান্ত কিশোরের প্রতিনিধিরা। দু’পক্ষের মধ্যে আধঘণ্টা ধরে চলে এই বৈঠক।
[আরও পড়ুন: বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে ‘বিজেপির মার্কামারা’ বলে কটাক্ষ মমতার, জবাব দিলেন ভিসি]
যদিও পিকের দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাঁর আলোচনার বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি ডায়মন্ড হারবারের বিধায়ক দীপক হালদার (Dipak Haldar)। বলেন, ‘এটা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়, প্রকাশ্যে কিছু বলব না।’ যদিও বিধায়কের গলায় এদিনও ছিল অভিমানের সুর। বলেন, ‘১৯৮৫ সাল থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক হয়ে যুব কংগ্রেসের কর্মী হিসেবে কাজ করেছি। ১৯৯৩ সালে পঞ্চায়েতে জনপ্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছি। ২০১১ ও ২০১৬ সালে দু’বার তৃণমূলের টিকিটে জিতে ডায়মন্ড হারবারের বিধায়ক হয়েছি। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো কাজ করেছি। আজ আমাকে নিয়ে দলে এই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় তাই বড় কষ্ট হয়। তবে তৃণমূলেই ছিলাম, এখনও তৃণমূলেই আছি।’
যদিও ভবিষ্যতে তৃণমূলেই থাকবেন কি না সে বিষয়ে স্পষ্টভাবে কিছু জানাননি বিধায়ক। জানান, ‘আদৌ আর রাজনীতি করব কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে আগামী ১৫ জানুয়ারির পর।’ এবারের ভোটে তৃণমূল তাঁকে প্রার্থী করলে তিনি দলের টিকিটে লড়তে প্রস্তুত কি না জানতে চাইলে অভিমানী বিধায়ক বলেন, ‘দলের টিকিটে জিতেও তো এতদিন কাজ করার সুযোগ পাইনি। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়ে মর্যাদার সঙ্গে কাজ করার সুযোগই যদি না পেলাম তবে ডায়মন্ড হারবারের মানুষের কাছে জবাবদিহি করব কীভাবে? তবে মানুষের ওপর আস্থা রাখি। তাঁরাই আমার গণদেবতা। তাঁরা যা চাইবেন, তাই করবে।’
গত ২৭ ডিসেম্বর সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় অনুপস্থিতির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিধায়কের জবাব, ‘ওই সভায় উপস্থিত থাকার জন্য হোয়াটসঅ্যাপে আমাকে একটা মেসেজ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু, দলের পক্ষ থেকে কোনও চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়নি। সেই বিষয়টিও আমাকে যথেষ্ট কষ্ট দিয়েছে। তাই আর যাইনি।’