সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: বাঘের আতঙ্ক অব্যাহত। আগের মতোই লালগড়ের জঙ্গলে মিলল খুবালানো ছাগল ও ভেড়ার মৃতদেহ। বৃহস্পতিবার থেকে ছাগল ও ভেড়াটি নিখোঁজ ছিল। তার উপর আতঙ্ক বাড়িয়েছে গ্রামের এক বৃদ্ধার বয়ানে। জঙ্গলে গিয়ে নাকি দু’টি বড় আকারের জন্তু দেখেছেন তিনি। সব মিলিয়ে ফের ২০১৮ সালের মার্চের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের (Royal Bengal Tiger) আতঙ্কই যেন ফিরে এসেছে লালগড়ে।
শুক্রবার লালগড়ের কন্যাবালি গ্রামের বাসিন্দা বছর পঁচাত্তরের বৃদ্ধা বিমলা মাহাতো জঙ্গলে যান। তাঁর দাবি, দু’টি বড় জন্তু দেখতে পেয়েছেন। তিনি বলেন “দু’টি বড় ধরনের জন্তু ছিল। ধীরে ধীরে হেঁটে জঙ্গলের রাস্তা ধরে পেরিয়ে যাচ্ছিল। ওরা হুড়ার (নেকড়ে বাঘ) নয়। হুড়ার চিনি। আমরা তো জঙ্গলে সব সময়ই যাই। আমার দিকে হাঁ করে তেড়ে আসে। কোনও মতে পালিয়ে বাঁচি।” অন্যদিকে কন্যাবালি গ্রামের গেপাল কিস্কুর একটি ছাগলের মৃতদেহ এদিন জঙ্গলে পাওয়া গিয়েছে। তার জেরে বাঘের উপস্থিতির বিষয়টি যেন আরও জোরাল হয়েছে।
[আরও পড়ুন: রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানবন্দর তৈরিতে উদ্যোগী নবান্ন, কলকাতার আশপাশে শুরু জমির খোঁজ]
গ্রামবাসীরা রীতিমতো আতঙ্কিত। তাঁরা জঙ্গলে কোনও কাজ করতে যেতে ভয় পাচ্ছেন। কন্যাপাল গ্রামের বাসিন্দা হরশংকর মাহাতো বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে অজানা জন্তুর পায়ের ছাপ পাওয়া যাচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে না কী জন্তু সেটি। গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত। ২০১৮ সালের স্মৃতি ফিরে আসছে। গ্রামের একটি ছাগল, ভেড়ার দেহ মিলেছে।”
এদিকে বনদপ্তর মনে করছে জন্তুটি নেকড়ে। কিন্তু গ্রামবাসীদের দাবি, এটি বাঘ বা অন্য বড় কোন জন্তু হবে। ২০১৮ সালে প্রথম দিকে পায়ের ছাপ পাওয়া গিয়েছিল। পরে গ্রামের গবাদি পশুর উপর আক্রমণ এবং তাদের খুবলানো দেহ উদ্ধার হয়েছিল। বনদপ্তরের তরফে ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানো হয় জঙ্গলে। আশঙ্কাই যেন সত্যি হয়। ধরা পড়ে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ছবি। সেই আতঙ্ক যেন আবার ফিরে এসেছে লালগড়ে।