শুভজিৎ মণ্ডল: কন্টাই পুরসভা থেকে নথি উধাও, প্রকল্পের নামে টাকা নয়ছয়, সারদাকর্তার থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় – এই সব মামলার তদন্ত এগোতে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে (Presidency Jail) গিয়ে সুদীপ্ত সেনকে দীর্ঘক্ষণ জেরা করলেন কাঁথি থানার পুলিশ। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে জেরা করা হয় তাঁকে। কাঁথি থানার পুলিশ সূত্রে খবর, সুদীপ্ত সেন জেরায় সহযোগিতা করেছেন। দু থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে শেষ হবে তদন্ত। তারপরই সব প্রকাশ্যে আসবে। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মত, শুভেন্দু অধিকারীর উপর চাপ বাড়াতেই সোজা প্রেসিডেন্সি জেলে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হল। এর আগে একাধিকবার সুদীপ্ত সেনের (Sudipta Sen) মুখে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার কথা শোনা গিয়েছে। তার নিষ্পত্তি করতেই এদিন সারদাকর্তাকে জেরা করে কাঁথি পুলিশ।
রবিবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে আসেন কাঁথি (Kanthi)থানার আইসি অমলেন্দু বিশ্বাস। সঙ্গে ছিলেন আরও চার তদন্তকারী আধিকারিক। যে সেলে সুদীপ্ত সেন রয়েছেন, সেখানে গিয়ে কাঁথি পুরসভার সেসময়কার টাকাপয়সা লেনদেন নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কীভাবে পুরসভার ফাইল উধাও হল, কোন কোন খাতে কত টাকা নেওয়া হয়েছিল, কাকে টাকা দিয়েছিলেন – এসব প্রশ্ন করেন তদন্তকারীরা।
[আরও পড়ুন: পাঠ্যবই থেকে পার্থর নাম সরানোর দাবি অনুপম হাজরার, পালটা দিল তৃণমূল]
বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ বেরিয়ে আসেন তদন্তকারীরা। কাঁথি থানার আইসি (IC) অর্থাৎ তদন্তকারী দলের প্রধান অমলেন্দু বিশ্বাস সাংবাদিকদের মুখোমুখি বলেন, ”সুদীপ্ত সেন তদন্তে সহযোগিতা করেছেন। সেসময় কাঁথি এলাকায় প্রকল্পের নামে টাকা গরমিল হয়েছে, সে বিষয়টা ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। তবে এখনও অনেক কিছু জানা বাকি। তদন্ত যথেষ্ট দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। ২ থেকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত শেষ হবে বলে আমরা আশা করছি।” তদন্তকারী আধিকারিক বারবারই উল্লেখ করেন, সুদীপ্ত সেন সহযোগিতা করছেন।
[আরও পড়ুন: শুভেন্দুর গড়ে ফের ধাক্কা! কাঁথিতে সমবায় সমিতির ভোটে খাতাই খুলতে পারল না BJP]
এর আগে একাধিকবার সুদীপ্ত সেনের মুখে শোনা গিয়েছিল শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) নাম। তিনি অভিযোগ করেন, কাঁথি পুরসভা এলাকায় নির্মাণের জন্য তাঁর থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা নিয়েছিলেন শুভেন্দু। চেক, ড্রাফটের মাধ্যমে টাকা লেনদেন হয়। এমনকী শুভেন্দুর ভাই সৌমেন্দুর নামেও টাকা দেওয়া হয়েছিল বলে সুদীপ্ত সেন জানিয়েছিলেন। তারপর থেকেই তৃণমূল নেতারা প্রশ্ন তোলেন, কেন সারদাকর্তা শুভেন্দুর নাম বারবার বলা সত্ত্বেও তাঁর বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত হচ্ছে না? রবিবার কাঁথি পুলিশের তদন্তকারী দল প্রেসিডেন্সিতে এসে সুদীপ্তবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ শুভেন্দুর উপরই চাপ বাড়ানোর কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে।
সুদীপ্ত সেনকে জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ”সারদা কর্তা বিভিন্ন বয়ান দিয়েছিলেন কোর্টে। কীভাবে শুভেন্দু তাঁকে কাঁথি নিয়ে গিয়ে কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন, আমরা সেটা জানি। জেরায় কী বেরবে, সেটা তদন্তকারীরা বলবেন।”