গৌতম ভট্টাচার্য: ক্রিকেট ইতিহাসের পাতা ওল্টালে অস্ট্রেলিয়ার সব ক্রিকেট মাঠই সাড়ম্বর উপস্থিতির জানান দেয়। এই এখন যেমন অ্যাডিলেড। সেই অ্যাডিলেড, যেখানে অনেক অনেক রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ হয়েছে। বহু ক্রিকেটার দুরন্ত পারফরম্যান্স করে ক্রিকেট বইয়ে আজীবন সদস্যপদ পেয়ে গিয়েছেন। তাই, অ্যাডিলেডে পা রাখলে কেন জানি, শরীরটা শিউরে ওঠে।
চমৎকার মাঠ। সবুজ যেন ঢেউ খেলে যায় ঘাসে ঘাসে। ছড়ানো গ্যালারি। যতবারই অ্যাডিলেডে আসি, মনে হয় এই প্রথম এলাম। এত চেনা, অথচ কত অচেনা! কিন্তু এই সব রোমান্টিকতা নিয়ে ভারতীয় ড্রেসিংরুম আদৌ মোহিত বলে মনে হয় না। সিডনিতে হারের পর এখানে জিতলে একদিনের সিরিজে ভেসে থাকা যাবে। নাহলে, সব যাবে।
[আপত্তিকর মন্তব্যের জের, পুরোনো ভিডিও নিয়ে বেকায়দায় বিরাট]
পরিস্থিতি একটু যে চাপের, সেটা না বললেও চলে। এমনিতে সিরিজ এখন ০-১। এটা অবশ্যই চাপের। আরও বড় চাপ হার্দিকদের ঘটনায়। হার্দিক এই দলের অপরিহার্য অংশ। বিশ্বকাপ ভাবনাতেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা জুড়ে রয়েছেন। কিন্তু তাঁর ভাগ্য কোন দিকে গড়াচ্ছে, সেটা বোঝা যাচ্ছে না। হার্দিককে নিয়ে আপাতত প্রবল লড়াইয়ের মধ্যে রয়েছেন দুই সিওএ কর্তা বিনোদ রাই ও ডায়না এডুলজি। প্রথমজন চান নিয়মের মধ্যে থেকে হার্দিককে একটু নরম-সরম শাস্তি দেওয়া হোক। যা তাড়াতাড়ি মিটিয়ে ফেলা হোক যাতে, তিনি আবার ভারতীয় দলে ফিরতে পারে। হার্দিক না থাকায় দলের ব্যালান্স নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু এডুলজির এত নরম হওয়ার কোনও প্রমাণ এখনও পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি চান, হার্দিক ও রাহুলের কড়া শাস্তি।
এই যখন অবস্থা তখন, সিরিজে টিকে থাকতে হলে কাল অ্যাডিলেডে জিততে হবে ভারতকে। আগের ম্যাচে যারা ৩৪ রানে হেরেছিল। রোহিত শর্মা আগেরদিন একদিনের ক্রিকেটে নিজের ২২তম শতরান পেয়েছেন। কিন্তু হিটম্যান দলকে জিতিয়ে আসতে পারেননি। রোহিত আর ধাওয়ান ঠিকঠাক শুরু করতে পারলে চিন্তা থাকে না ভারতের। কিন্তু প্রথম ম্যাচে ধাওয়ান ও তিনে নামা বিরাট কোহলি ব্যর্থ হয়েছেন। এর মধ্যে আবার ধোনিকে নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তাঁকে ব্যাটিং অর্ডারে উপরে তোলা হয়েছে। আগের দিন তিনি ৫১ রানও করেন। এই রান করতে ধোনি ৯৬টি বল খেলেছেন। ফলে, প্রশ্ন উঠছে যে, ধোনি এত বল নষ্ট করলেন কেন? রোহিত শর্মা যতই তাঁর দলের প্রাক্তন অধিনায়কের পাশে দাঁড়ান, ধোনির স্লো ব্যাটিং কিন্তু আলোচনার বিষয় হচ্ছে।
[হার্দিক-রাহুলদের বদলি ঘোষণা করল বিসিসিআই, সুযোগ পেলেন নাইট তারকা]
রায়াডুও আগের ম্যাচে ব্যর্থ হয়েছেন। এরমধ্যে আবার যেটুকু পার্ট টাইম বোলিং করছিলেন, সেটাও এখন চাপে পড়ে গেল । রায়াডুর বোলিং অ্যাকশন নিয়ে রিপোর্ট হয়েছে। তাঁকে ১৪ দিনের মধ্যে পরীক্ষা দিতে হবে। ভারতীয় শিবির অবশ্য বোলার রায়াডুকে নিয়ে আদৌ চিন্তিত নয়। কিন্তু বোলিং নিয়ে চিন্তা থেকেই যাচ্ছে। আগের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া প্রায় তিনশো রান করে ফেলেছিল। এটা চিন্তার বিষয়। এদিকে, বিজয় শঙ্কর এদিন বিকেলে অ্যাডিলেড পৌঁছলেন। জেটল্যাগের পর তাঁকে অবশ্য মঙ্গলবারই ম্যাচে নামিয়ে দেওয়ার তেমন সম্ভাবনা নেই।
The post অ্যাডিলেডে মঙ্গলবার বিরাটদের মরণ-বাঁচন ম্যাচ appeared first on Sangbad Pratidin.