সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: শিশুকন্যাকে অপহরণের চেষ্টায় গ্রেপ্তার ঝাড়গ্রামের (Jhargram) এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। অপহরণের মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। শনিবার দুপুরে ঝাড়গ্রাম শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ডোমপাড়া এলাকার এই ঘটনা ঘিরে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম নেপাল বর্মন। একজন শিক্ষক হয়ে কেন অপহরণের (Kidnap) মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লেন তিনি, সে বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে পাচারচক্রের যোগ আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে ঝাড়গ্রাম পুলিশ।
জানা গিয়েছে, নেপাল বর্মনের বাড়ি সবংয়ে। ঝাড়গ্রামের পুকুরিয়া এলাকায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক (Primary Teacher) তিনি। পুরাতন ঝাড়গ্রাম এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে স্ত্রী এবং কন্যাকে নিয়ে থাকতেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার বেলা বারোটা নাগাদ ওই ব্যক্তি ডোমপাড়ায় গিয়ে শিশুটিকে নিয়ে পালান। ওই শিশু কন্যাটির মা রেবতী খামরুই মল্ল জানিয়েছেন, তিনি স্নান করতে গিয়েছিলেন। তার আগে তাঁদের পাড়াতেই এক আত্মীয়ের বাড়িতে মাস চারেকের শিশুটিকে রেখে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে আর দেখতে পাননি। অভিযুক্ত ওই শিক্ষক হঠাৎ করে পাড়ায় এসে যে বাড়িতে শিশুটি ছিল, সেই পরিবারের মানুষজনের ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে শিশুটিকে কোলে নিয়ে চম্পট দেয়।
[আরও পড়ুন: হিন্দু বনাম হিন্দুত্ববাদী মন্তব্যের জের, রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে মামলা আসানসোলের আইনজীবীর]
এদিকে, খবর জানাজানি হতেই পাড়া-প্রতিবেশীরা খোঁজখবর শুরু করে এবং ওই ব্যক্তিকে পালিয়ে যেতে দেখেন। ঝাড়গ্রাম থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে জঙ্গল এলাকাটি ঘিরে ঘিরে ফেলে পুলিশ। স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে টিয়াকাটি জঙ্গল এলাকায় শিশু-সমেত ওই ব্যক্তিকে ধরে ফেলে এবং পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত কেন শিশুটিকে নিয়ে পালচ্ছিল, তার সদুত্তর দিতে পারেনি। রবিবার তাকে আদালতে তোলা হবে।
[আরও পড়ুন: এবার মতুয়া নিয়ে চাপে বিজেপি, দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন ৫ মতুয়া বিধায়ক]
কেন নিজের স্ত্রী, সন্তান থাকা সত্ত্বেও নেপাল বর্মন আরেক শিশুকে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল, তা নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনার সঙ্গে কোনও শিশু পাচার চক্রের (Child Trafficking) যোগ রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এই বিষয়ে ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ ঘোষ জানিয়েছেন, “ওই ব্যক্তি ঝাড়গ্রামের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন স্ত্রী ও কন্যা সন্তানকে নিয়ে। ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপহরণের মামলা রুজু করা হয়েছে। আদালতে পুলিশি হেফাজতের আবেদন করা হবে। কেন এই কাজ করেছেন, তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এর সঙ্গে কোনও পাচারচক্রের যোগ রয়েছে কিনা, তাও দেখা হচ্ছে।”