গোবিন্দ রায়: প্রাইমারি টেটে (Primary TET) নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত বাগদার রঞ্জন ওরফে চন্দন মণ্ডলের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। অথচ বাড়িতেই নেই তিনি। হাই কোর্টের নির্দেশের পরই চন্দনের বাড়িতে গেলেও তাঁর দেখা মেলেনি। পরিবারের সদস্যরা বলছেন, চন্দন বাড়িতে নেই। কোথায় আছেন, তা তাঁরা জানেন না। কীর্তিমানকে নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ প্রতিবেশীরাও। সবমিলিয়ে ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে ‘রঞ্জন রহস্য’।
সম্প্রতি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হওয়া অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণদপ্তরের প্রাক্তন মন্ত্রী উপেনের ফেসবুক পোস্টটি আদালতের নজরে আনেন মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। যেখানে মন্ত্রী উপেন সরাসরি চন্দন মণ্ডলের নাম উল্লেখ না করলেও, জনৈক ‘বাগদার রঞ্জন’এই দুর্নীতির হোতা বলে উল্লেখ করেছিলেন। এর পরই রাজ্যজুড়ে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে ‘রঞ্জন’। ঠিক কী বলেছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী?
[আরও পড়ুন: ভবানীপুর জোড়া খুন কাণ্ডে গ্রেপ্তার ২, তিনদিনের মাথায় খুলল রহস্যের জট]
২০২১ সালে নিজের ফেসবুক পোস্টে উপেন জানান, জনৈক বাগদার ‘রঞ্জন’ ওরফে ‘চন্দন’ প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বিক্রি করেন বলে জানতে পেরেছেন তিনি। প্রাথমিকের জন্য ১০ লক্ষ এবং উচ্চ প্রাথমিকের জন্য় ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা করে নেন ওই ‘রঞ্জন’। মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দর উঠেছে। তবে এই ‘রঞ্জন’ আসলে কে, তা সেই সময় খোলসা করেননি উপেন। একইসঙ্গে ‘রঞ্জন’কে সৎ ব্যক্তি বলেও উল্লেখ করেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। কারণ, তাঁকে টাকা দিয়ে কেউ চাকরি পাননি, এমন অভিযোগ নেই।
এর পরই লাইমলাইটে চলে আসেন বাগদার মামাভাগিনা এলাকার চন্দন মণ্ডল। স্থানীয় সূত্রে খবর, পেশায় প্রাথমিক স্কুলের অশিক্ষক কর্মী। তাঁর বাড়িতে অনেক লোকের আনাগোনা ছিল বলে জানিয়েছেন বাগদা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান গোপাল চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, “আমরা জানি অনেক লোকের যাতায়াত ছিল চন্দনের বাড়িতে। অনেকে চাকরি পেয়েছেন। শুনেছি টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়া হত। কিন্তু চন্দন চাকরি দিতেন কিনা সে বিষয়ে আমার জানা নেই।” আবার এই এলাকার বিজেপি নেতা দুলাল বরের দাবি, চন্দনের সঙ্গে সরাসরি তৃণমূলের উপরস্তরের নেতৃত্বের যোগাযোগ ছিল। সেই সূত্র ধরেই তাঁর এত প্রতিপত্তি। কিন্তু যাকে নিয়ে এত চর্চা, তাঁরই হদিশ নেই।