সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফি বছর বন্যা, না হলে খরা। অল্প বৃষ্টিতে ভেসে যাচ্ছে একের পর এক জনপদ। আর বৃষ্টি না হলে বিকল্প জলের ব্যবস্থা নেই। ফসল মাঠেই শুকোচ্ছে। স্বাধীনতার ৭০ বছর পরও প্রাকৃতিক বিপর্যয় সামলানোর কোনও বন্দোবস্ত করতে পারেনি দেশ। এর আগে নানারকম চেষ্টা হলেও নতুন করে উদ্যোগ নেওয়া হয়ছে। এই পরিকল্পনায় দেশের বৃহত্তম নদীগুলিকে জুড়ে দেওয়া হবে। এর জন্য খরচ হবে প্রায় ৮৭০০ কোটি মার্কিন ডলার।
[মোদির বিজ্ঞাপনে খরচ ২১ হাজার কোটি টাকা, তোপ শিব সেনার]
গোটা পরিকল্পনার মূলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দেশের ৬০টি নদীকে সংযুক্ত করা হবে। যার মধ্যে রয়েছে গঙ্গা, গোদাবরী, মহানদীর মতো গুরুত্বপূর্ণ নদীগুলি। প্রধানমন্ত্রীর ধারণা, এর ফলে আর বন্যার জলে চাষের জমি আর প্লাবিত হবে না। খরার জন্য দিতে হবে না বিশেষ প্যাকেজ। এবছরে বন্যায় শুধু ভারত নয়, প্রতিবেশী নেপাল এবং বাংলাদেশেও নাজেহাল। সূত্রের খবর, এই প্রকল্পে যাতে গতি পায় তার জন্য প্রধানমন্ত্রী নিজে তদ্বির করছেন। শুধু বন্যা আটকানো নয়, নদী সংযুক্তিকরণ হলে বিদ্যুৎ উৎপাদনও বাড়বে বলে কেন্দ্র মনে করছে। এই সিদ্ধান্তে পরিবেশবিদ এবং পশুপ্রেমীদের যে বিরোধিতা আসবে তা বুঝতে পেরে কেন্দ্র বেশ কিছু রক্ষাকবচও রেখেছে। এই নিয়ে কেন্দ্রের জলসম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী সঞ্জীব বালিয়ান জানান, এবছরের মধ্যে নদী সংযুক্তকরণের কাজ শুরু হবে। উত্তরপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশের মধ্যে প্রবাহিত কেন-বেতোয়া নদীকে সবার আগে জোড়া হবে। ওই মন্ত্রকের মতে দেশের বৃহত্তম যে নদীগুলিতে প্রচুর জল থাকে সেগুলিতে বাঁধ দিয়ে শুখা নদী এবং খালে জল পাঠানো হবে। এর ফলে খরা এবং বন্যার সমস্যা অনেকটাই কমবে।
[রাম রহিমের জন্মভূমিতে ক্ষুব্ধ ভক্তরা, ধর্ষক বাবার ছবি পড়ে নর্দমায়]
পরিকল্পনা নেওয়া হলেও তার প্রয়োগ যে কতটা কঠিন তা বুঝতে পারছে কেন্দ্র। কারণ বাঁধ দেওয়া বা এই সংক্রান্ত কাজে বহু মানুষের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। ইতিমধ্যে দুই নদীর সংযুক্তিকরণ নিয়ে উত্তরপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশ সরকারের টানাপোড়েন তীব্র হয়েছে। জলবণ্টন নিয়ে কর্নাটক, তামিলনাড়ু সরকারের গণ্ডগোল সহজে মেটার নয়। বেশ কিছু নদী বিশেষজ্ঞের ধারণা এত লাভের থেকে ক্ষতি বেশি। কারণ বিষয়টি এত সহজ মনে হলেও তার রূপায়ণে ঝামেলা কম নয়। জলের জোগান ঠিকমতো থাকবে না। এর ফলে বাস্তুতন্ত্র ঘেঁটে যাবে। পরিবেশপ্রেমীদের একাংশ এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় আন্দোলনে নামতে চলেছেন। ২০০২ সালে প্রথম এনডিএ সরকারের সময় নদী সংযুক্তিকরণের তোড়জোড় হয়েছিল। বেশ কিছু রাজ্য এর বিরোধিতা করায় অটলবিহারী বাজপেয়ী পিছু হটেছিলেন। মোদিও সেই পথের পথিক। তাঁর দাওয়াই আদৌ সফল হয় কিনা তা নিয়ে এখন থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।