সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৭২ দিনের ডোকলাম বিতর্ক কেটে যাওয়ার পর গতমাসেই চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ঘরোয়া বৈঠক সেরে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৈঠকে নেওয়া হয়েছিল বেশ কিছু সিদ্ধান্ত। ওটা সরকারি বৈঠক ছিল না, তবে শনিবার সরকারি ভাবে বৈঠক করলেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান। সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে দু’দিনের সফরে চিনের কুইংডাও শহরে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পৌঁছেই চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করলেন তিনি। ছ’সপ্তাহের মধ্যে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের এই নিয়ে দ্বিতীয় বৈঠক থেকে প্রমাণিত, সম্পর্কের টানাপোড়েন কাটাতে তাঁরা কতটা উদ্যোগী এবং দু’দেশের স্থিতিশীল, দৃঢ় সম্পর্ক বিশ্বকে পথ দেখাতে পারে।
[তালিবানি নাশকতা থেকে বাঁচতে অনলাইন ব্যবসায় মন দিচ্ছেন আফগানরা]
গত বছরের ডোকলাম অচলাবস্থা ও নানা ঘটনার জেরে পরস্পরের প্রতি আস্থায় চিড় ধরেছিল। তৈরি হয়েছিল উত্তেজনা। দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে আরও বোঝাপড়া-সহ আস্থাবর্ধক অন্যান্য পদক্ষেপ নিয়ে কথা হয়েছে তাঁদের৷ বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার এই বৈঠককে ‘আন্তরিক’ ও ‘ভবিষ্যতের লক্ষ্যে বড় পদক্ষেপ’ বলে মন্তব্য করেছেন৷ অন্যদিকে, ভারতে চিনের রাষ্ট্রদূত ডুই ঝাওহুই বলেন, ইউহান বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের রূপায়ণ নিয়ে দুই নেতার মধ্যে কথা হয়েছে। আগামিদিনের ইন্দো-চিন সম্পর্ক বৃদ্ধির ‘নীল নকশা’ নিয়ে কথা বলেছেন মোদি-জিনপিং। শনিবার বিকালে মোদি কুইংডাও নামার কিছুক্ষণ বাদেই তাঁর সঙ্গে করমর্দন করেন জিনপিং। তাঁরা একসঙ্গে ছবিও তোলেন। জিনপিংয়ের সঙ্গে ইউহান বৈঠকের কথা উল্লেখ করে মোদি বলেন, ভারত ও চিনের জোরদার, স্থিতিশীল সম্পর্ক একটি শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল বিশ্ব গঠনে অনুপ্রেরণা দিতে পারে। বৈঠকের পর ব্রহ্মপুত্র নদ সম্পর্কিত তথ্য ভারতকে জানানো ও বাসমতী ছাড়া অন্য ধরনের চাল চিনে রফতানির জন্য বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার নিয়মে সংশোধন সংক্রান্ত দু’টি মউ স্বাক্ষর হয়েছে। এই নিয়ে গত চার বছরে মোদি-জিনপিং ১৪ বার বৈঠক করলেন বলে জানিয়েছেন চিনের রাষ্ট্রদূত।
[ট্রাম্পের সঙ্গে ঐতিহাসিক বৈঠকে কিমকে নিরাপত্তা দেবে চিনা সেনার অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান]
বৈঠকের আগে দু’দেশের শীর্ষ কর্তারাও বলেছিলেন, গত ২৭-২৮ এপ্রিল ইউহানে তাঁদের অঘোষিত বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলি কতদূর রূপায়ণ হল, তা খতিয়ে দেখতে পারেন মোদি, জিনপিং। সেবার তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, পরস্পরের সেনাবাহিনীকে ‘কৌশলগত পথ’ দেখাবেন, যাতে ভবিষ্যতে ডোকলামের মতো পরিস্থিতি এড়ানো যায়। পাশাপাশি, বোঝাপড়া গড়তে তারা যেন যোগাযোগ জোরদার করে। দু’দেশের অর্থনীতি, জনতার স্তরে সম্পর্ক বাড়ানোর উপায় নিয়েও কথা হয়েছিল তাঁদের। ডোকলামের ঘটনায় দু’দেশের সম্পর্কে চিড় ধরেছিল। গত বছরের ১৬ জুন থেকে টানা ৭২ দিন পরস্পরের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ছিল ভারত ও চিনের সেনা জওয়ানরা। ভুটান সীমান্তে বিতর্কিত এলাকায় চিনা সেনাদের রাস্তা তৈরির কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। ডোকলাম ছাড়াও পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রসংঘে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে গিয়ে বারবার চিনের বাধায় থমকে গিয়েছে ভারত। পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠীর সদস্য হতে নয়াদিল্লির উদ্যোগে চিনের বিরোধিতা, চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ-সহ আরও নানা ইস্যুতে ক্ষতি হয়েছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক।
The post পাকিস্তানকে কড়া বার্তা, সাংহাই সামিটে কাছাকাছি মোদি-জিনপিং appeared first on Sangbad Pratidin.