সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: ব্যাংক থেকে ১৬ কোটি টাকা লোপাটের দায়ে হাজতে গিয়েছিলেন ম্যানেজার। আদালতে হাজিরার দিনই সংশোধনাগারে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্য়ু হল তাঁর। এই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দুর্গাপুরের উপ-সংশোধনাগারে।
দুর্গাপুরের নিউটাউনশিপ থানা এলাকায় ফুলঝোরে দুর্গাপুর উপ-সংশোধনাগারে বিচারাধীন বন্দি ছিলেন ব্যাংক ম্যানেজার শান্তনু মণ্ডল। শনিবার দুপুরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বর্ধমানের অনাময় হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। ব্যাংক জালিয়াতি মামলায় এদিনই দুর্গাপুর আদালতে তাঁর হাজিরার দিন ছিল। দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক সৌরভ চট্টোপাধ্যায় জানান, “গত ২ মার্চ দুর্গাপুর উপ সংশোধনাগারে কয়েদিদের রুটিন শারীরিক পরীক্ষা হয়। যদিও সেই সময় তাঁর কোনও সমস্যা ধরা পড়েনি। ৩ মার্চ মাঝরাতে প্রায় তিনটে নাগাদ শারীরিক অস্বস্তি হওয়ায় ব্যাংক ম্যানেজারকে তড়িঘড়ি দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করা হয়।”
[আরও পড়ুন: মমতাকে ক্ষমতাচ্যুত করার শপথ! জামিন পেয়েই মাথা মুড়িয়ে ফেললেন কৌস্তভ]
হাসপাতাল সূত্রে খবর, সিসিইউতে চিকিৎসার পর ভোরে ওই বন্দিকে বর্ধমানে রেফার করা হয়। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শারিরীক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বর্ধমান অনাময় হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। যেখানে ছোট একটি অস্ত্রোপচারও হয়। শনিবার দুপুরে ওই হাসপাতালেই মৃত্যু হয় বিচারাধীন বন্দির।”
প্রসঙ্গত, জালিয়াতির অভিযোগে গত ২০২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ব্যাংক ম্যানেজার শান্তনু মণ্ডল। সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ওই ব্যাংকেরই এক মহিলা কর্মী স্মৃতি ভট্টাচার্যকে। ঘটনাটি অণ্ডাল থানার একটি বেসরকারি ব্যাংকেরর বহুলা শাখার। অভিযোগ, ওভারড্রাফটের মাধ্যমে প্রায় ১৬ কোটি টাকা ৮টি অ্যাকাউন্টে সরিয়ে দেওয়া হয়। টাকা সরানোর অভিযোগ ওঠে খোদ ব্রাঞ্চ ম্যানেজার শান্তনু মণ্ডলের বিরুদ্ধে। ব্যাংকের আঞ্চলিক অফিসের পক্ষ থেকে অণ্ডাল থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। জালিয়াতিতে ম্যানেজারকে সঙ্গ দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় ওই ব্যাংকেরই অপর এক মহিলা কর্মীকে। পরে দুর্গাপুরের এক ব্যবসায়ী প্রনব রুজকেও এই প্রতারণা কাণ্ডে গ্রেপ্তার করা হয়। কয়েকদিন পুলিশি হেফাজতে থাকার পর জেল হেফাজত হয়েছিল ব্যাংক ম্যানেজারের। তারপর থেকেই দুর্গাপুর উপ সংশোধনাগারেই বিচারাধীন বন্দি হিসেবে ছিলেন তিনি।