সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সক্রিয় রাজনীতিতে আসার আচমকা খবরে শুধু বিজেপি বা অন্য দলগুলি চমকে যায়নি। হতচকিত কংগ্রেসের অনেক শীর্ষ নেতাও। গত সপ্তাহে সিদ্ধান্ত হলেও অত্যন্ত গোপনীয়তা বজায় রেখেছিল কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। রাহুল গান্ধীর আমেঠি সফরের সময় ঘোষণার পরিকল্পনা ছিল। সেটাই হয়েছে। খবর ফাঁসের আশঙ্কায় কাকপক্ষীকেও টের পেতে দেওয়া হয়নি। তবে জল্পনা, একজন সে খবর জানতেন আগেই। তাঁর পরামর্শেই প্রিয়াঙ্কার চূড়ান্ত সম্মতি। যাঁর সঙ্গে গান্ধী পরিবারের অতীত সৌহার্দ্য ও বর্তমান তিক্ততার খবর কারও অজানা নয়। জল্পনা ছড়িয়েছে, সেই অমিতাভ বচ্চন বা ‘মামু’র আশীর্বাদ নিয়েই নাকি প্রিয়াঙ্কা রাজনীতির মঞ্চে পা রেখেছেন।
[‘ব্যালটে ফেরার প্রশ্নই ওঠে না’, ইভিএম নিয়ে অনড় নির্বাচন কমিশন]
শোনা যাচ্ছে, অমিতাভকে ছোটবেলা থেকে ‘মামু’ বা ‘মামা’ বলেই ডাকেন প্রিয়াঙ্কা। বিশেষ সূত্রের খবর, তাঁর রাজনীতিতে আসার কয়েকদিন আগেই দিল্লিতে অমিতাভের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেন প্রিয়াঙ্কা। এরপরই বুধবার রাহুল বোনের রাজনীতিতে আসার খবর ঘোষণা করেন। প্রায় ১৮ বছর পর এই ঘটনা দিয়েই গান্ধী পরিবারের সঙ্গে বচ্চন পরিবারের পুরনো সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে। ঠিক তখনই, যখন ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের দামামা বেজে গিয়েছে। ব্যক্তিগত কারণেই গান্ধী-বচ্চন পরিবারের মধ্যে বিচ্ছেদ হয় ২০০০ সালে। যদিও একসময় প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর অন্তরঙ্গ বন্ধু ছিলেন অমিতাভ। তাঁর কথায় লোকসভা ভোটে প্রার্থীও হয়েছিলেন। বন্ধুর আকস্মিক মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছিলেন অমিতাভ।
সূত্রের খবর, দিল্লিতে রাহুল, প্রিয়াঙ্কা এবং সোনিয়ার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করেছেন অমিতাভ বচ্চন। কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে যখন বলিউডের অভিনেতা-পরিচালকরা গিয়েছিলেন, সেখানেও দেখা যায়নি বিগ বি’কে। সম্প্রতি বাকস্বাধীনতা, সেন্সরশিপ-সহ একাধিক ইস্যুতে মুখ খুলে দক্ষিণপন্থী সংগঠনের রোষের মুখে তাঁকে পড়তে হচ্ছে। সূত্রের দাবি, প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল বছর খানেক আগে। টুইটারে রাহুল, মণীশ তিওয়ারি-সহ কংগ্রেস নেতাদের ফলো করা শুরু করেন অমিতাভ। গুজরাত সরকার ও আয়কর দপ্তরের বিজ্ঞাপনে মুখ দেখালেও সম্প্রতি মোদি প্রশাসনের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছেন তিনি। যার সঙ্গে যোগ হয়েছে এই মামা-ভাগ্নির আলোচনার খবর।
[মোদির বিরুদ্ধে বারাণসীতে প্রার্থী হতে পারেন প্রিয়াঙ্কা]
এদিকে, প্রিয়াঙ্কা রাজনীতিতে নামতেই বোনের কাঁধে গুরুদায়িত্ব চাপিয়ে দিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি। প্রথমত, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে দল পূর্ণ শক্তিতে লড়াই করবে। যত বেশি সম্ভব আসন দখল করতে হবে উত্তরপ্রদেশ থেকে। দুই, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে সরকার গঠনের জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র আমেঠিতে রাহুল বলেছেন, প্রিয়াঙ্কাকে দায়িত্ব দিয়ে তিনি উত্তরপ্রদেশকে একজন (ভাবী) মুখ্যমন্ত্রী দিলেন। রাজ্য থেকে বিজেপিকে মুছে ফেলতে হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।