সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মেয়েকে নিয়ে স্বপ্ন ছিল অনেক। কিন্তু পুলওয়ামায় ঘটে যাওয়া হঠাৎ অঘটনটাই পিতৃহারা করল মেয়েটাকে। ছোট্ট ইশাকে ডাক্তার বানানোর স্বপ্ন কী তবে স্বপ্নই থেকে যাবে? ইশার পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এলেন দেশের অন্যতম চর্চিত একজন মহিলাই। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। যিনি গত মাসেই সক্রিয় রাজনীতিতে প্রবেশ করে সাড়া ফেলেছেন গোটা দেশে। পুলওয়ামা সন্ত্রাসবাদী হামলায় শহিদ অজিত কুমার আজাদের মেয়ের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিলেন তিনি।
[দেশের সেবা করতে সেনাকর্মী হতে চান কাশ্মীরের ২৫০০ যুবক]
ছোট থেকেই মেধাবী ইশা। বাবা অজিতের চোখের মণি ছিল সে। শুধু বাবার ইচ্ছে বলে নয়, সে নিজেও চায় ডাক্তার হতে। কিন্তু বাবার মৃত্যুতে সেই ইচ্ছেপূরণে যখন সংশয়, তখনই এগিয়ে এসে ইশার পাশে দাঁড়ালেন প্রিয়াঙ্কা। উত্তরপ্রদেশের উন্নাও জেলার অজিত কুমার আজাদের বাড়িতে গিয়েছিলেন স্থানীয় কংগ্রেস নেত্রী অন্নু ট্যান্ডন। তাঁর কাছ থেকেই ইশার ঘটনা ও তাঁর ইচ্ছের কথা শোনেন প্রিয়াঙ্কা। এমনকী কথাও বলে এসেছেন ছোট্ট মেয়েটির সঙ্গে। ইশার ইচ্ছের কথা শুনে তাকে প্রিয়াঙ্কা বলেন,‘‘তোমার স্বপ্নপূরণ হবে। তোমার যা সাহায্য লাগবে আমি তোমাকে করব, প্রতিজ্ঞা করলাম।” প্রিয়াঙ্কার কথা শুনে এই চরম দুঃসময়ে আশ্বস্ত শহিদ অজিতের পরিবার। তাঁরা জানিয়েছেন,“পুলওয়ামা কাণ্ডের পর বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আসে। প্রিয়াঙ্কাজির আশ্বাস পেয়ে ভরসা পেলাম। বাচ্চা মেয়েটার কেউ নেই আর।” প্রিয়াঙ্কা গান্ধী জানান, রাজীব গান্ধীর সঙ্গে একই কাণ্ড ঘটেছিল। হঠাৎ পিতৃহারা হন প্রিয়াঙ্কা। তাই ইশার দুঃখ তিনি বোঝেন।
[গত ডিসেম্বরেই কাশ্মীরে ঢোকে জইশের ‘ফিদায়েঁ স্কোয়াড’]
শহিদকন্যার চোখের জলে যে শুধু প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর মন কেঁদে উঠেছে তা নয়৷ বিহারের শেখপুরার জেলাশাসককেও সমানভাবে নাড়া দিয়েছে পুলওয়ামার জঙ্গিহামলা৷ গত বৃহস্পতিবার সেনা কনভয়ে ঢুকে আত্মঘাতী হামলা চালায় জইশ জঙ্গি৷ ওই হামলায় শহিদ হন রতন কুমার ঠাকুর এবং সঞ্জয় কুনার সিনহা৷ তাঁরা দুজনেই বিহারের বাসিন্দা৷ উপত্যকা থেকে দুঃসংবাদ ঠিক পরেরদিনই পৌঁছয় তাঁদের বাড়িতে৷ আচমকা জওয়ানদের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন পরিজনেরা৷ চোখের জল বাঁধ মানছে না শহিদদের দুই কন্যাসন্তানের৷ কফিনবন্দি বাবাকে মোটেও মেনে নিতে পারছে না খুদেরা৷ তাঁদের দুঃখে সমব্যথী শেখপুরার জেলাশাসক ইনায়াত খান৷ এই বিপদের দিনে শহিদদের পরিজনদের পাশে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা করেন তিনি৷ দুই শহিদ জওয়ানের শিশুকন্যাদের দত্তক নিলেন ওই জেলাশাসক৷ এছাড়াও একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলেছেন জেলাশাসক৷ শহিদ পরিবারের সাহায্যে ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অন্যান্য আধিকারিকদের টাকা জমা দেওয়ারও অনুরোধ করেছেন তিনি৷ বিপদের দিনে জেলাশাসককে পাশে পেয়ে যেন খানিকটা অক্সিজেনের সন্ধান পেয়েছেন শহিদদের পরিজনেরা৷