রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বাংলায় এবার বুদ্ধিজীবীদের লড়াই! একপক্ষ, যারা সরাসরি কারও সঙ্গে যুক্ত নন। তবে তাঁদের অধিকাংশই বামমনস্ক। আরেক পক্ষ ঘোষিত গেরুয়া পন্থী। যারা সরাসরি যুক্ত RSS বা বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সঙ্গে।
ব্যাপারটা একটু স্পষ্ট করে বলা যাক। রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে রাজ্যের কয়েকটি জায়গায় যে গোষ্ঠী সংঘর্ষের খবর প্রকাশ্যে এসেছে, সেসব নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করে দিন চারেক আগে বিবৃতি দিয়েছিলেন বাংলার বুদ্ধিজীবীদের একাংশ। সুজন মুখোপাধ্যায়, কৌশিক সেন (Kaushik Sen), রেশমী সেন, ঋদ্ধি সেন, সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্য (Anirban Bhattacarya), বোলান গঙ্গোপাধ্যায়, শ্রীকান্ত আচার্য-সহ বেশ কয়েকজন তথাকথিত বুদ্ধিজীবী রাজ্যে ধর্মীয় আগ্রাসন নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেছিলেন।
[আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীকে না জানিয়েই পার্কিং ফি বৃদ্ধি! ফিরহাদকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের নির্দেশ, জানালেন কুণাল]
বিবৃতিতে অপর্ণা সেন, অনির্বাণ ভট্টাচার্যরা লিখেছিলেন, “রামনবমীকে (Ramnavami) কেন্দ্র করে বাংলায় যে ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সক্রিয় হয়ে উঠেছে, তাতে নাগরিক হিসাবে আমরা আতঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন। তীব্রভাবে এই ঘটনাবলির প্রতিবাদ জানাচ্ছি।” সরাসরি কোনও পক্ষকে না বিঁধলেও বঙ্গের বুদ্ধিজীবীমহলের নিশানায় ছিল মূলত গেরুয়া শিবির এবং অতি দক্ষিণপন্থী মনোভাবাপন্নরা। যার মধ্যে পড়ে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, হিন্দু জাগরণ মঞ্চও। রামনবমীর হিংসার নেপথ্যে অনেকেই এই হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলিকে কাঠগড়ায় তুলছে। সেই ‘ন্যারেটিভ’ পালটে দিতে এবার পালটা নিজেদের বুদ্ধিজীবীদের পথে নামাতে চলেছে গেরুয়া শিবির। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ভাষায় যাঁদের বলা হচ্ছে ‘প্রবুদ্ধ’।
[আরও পড়ুন: রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে নির্দেশ! রাজভবনের চিঠি প্রত্যাহারের দাবি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যর]
জানা গিয়েছে, রাজ্যে সাম্প্রতিক অশান্তির ঘটনা নিয়ে ১০ এপ্রিল রাজ্যপালের কাছে যাবে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সাধুসন্তরা। ১৩ এপ্রিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (Vishwa Hindu Parishad) উদ্যোগে সংগঠনের বুদ্ধিজীবীদের মিছিল হবে ওয়েলিংটন থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বঙ্গ বিবেক’। এই কর্মসূচি ঘোষণা করতে গিয়ে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বাংলার এক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বলেছেন, “সনাতন সমাজের উপরে যে আঘাত আসছে তার প্রতিবাদে আমরা প্রবুদ্ধদের, অর্থাৎ যাদের সবাই বুদ্ধিজীবী বলেন তাঁদের নিয়ে মিছিল করব। অন্যান্য সংগঠনের বিশিষ্টরাও তাতে অংশ নেবেন।” অর্থাৎ বিশ্ব হিন্দু পরিষদ সরাসরি বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে ‘লড়াই’ বাঁধানোর মতলব করছে। এখন দেখার ১৩ এপ্রিল তাদের মিছিলে কেমন সাড়া পড়ে।