অর্ণব আইচ: প্রোমোটিংয়ে ‘না’। বাধা পেয়ে মহিলা অধ্যাপককে আক্রমণ প্রোমোটারের ‘মহিলা বাহিনীর’। ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে মারধরের অভিযোগ উঠল দুই মহিলার বিরুদ্ধে। পালানোর সময় মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করায় ওই অধ্যাপকের কপাল ফেটে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বুধবার সন্ধেবেলা দক্ষিণ শহরতলির হরিদেবপুরে (Haridevpur) ঘটেছে এই ঘটনা। বৃহস্পতিবার তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ মোনা মোদক নামে এক মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সেবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায় নামে ওই মহিলা হরিদেবপুরের যদুনাথ উকিল রোডের বাসিন্দা। তিনি দক্ষিণ কলকাতার একটি কলেজের অধ্যাপক। তাঁর বাবা কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার (Ex ACP) শিশির বন্দ্যোপাধ্যায়। সেবন্তী জানান, এখানেই তাঁদের পারিবারিক জমি ও বাড়ি রয়েছে। তার উপর নজর পড়ে এলাকার এক প্রোমোটারের। ওই প্রোমোটার জমিটি কিনতে চান। তবে ওই অধ্যাপিকা ও তাঁর বাবা প্রাক্তন পুলিশকর্তা সাফ জানিয়ে দেন, তাঁরা ওই জমি বিক্রি করতে রাজি নন। অভিযোগ, এর পরই ওই প্রোমাটার ও তাঁর লোকেরা তাঁদের পরিবারের উপর চাপ দিয়ে শুরু করে। এই বিষয়ে তিনি গত সেপ্টেম্বরে ই-মেল করে বিষয়টি কলকাতা পুলিশকে জানান। তারপরও গোলমাল হতে থাকে। তাঁধের কটূক্তিও করা হত বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: ২৫ ডিসেম্বর নোয়াপাড়া-দক্ষিণেশ্বর মেট্রোর উদ্বোধন! গুজব ওড়াল কর্তৃপক্ষ]
শেষে বিষয়টি অসহ্য হয়ে ওঠায় গত অক্টোবরে ওই অধ্যাপিকা পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ জানান। গত ১৭ নভেম্বর সেবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায় হরিদেবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। শুরু হয় মামলা। এরপর প্রোমোটার বাহিনী সরাসরি হুমকি দিতে থাকে। অভিযুক্ত প্রোমোটার ও তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গোরা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। না হলে এই এলাকায় তাঁরা থাকতে পারবেন না, এমনও হুমকি দেওয়া হয়। এতেও পরিবারের কেউ গুরুত্ব দেয়নি। তাতেই বিপদ বাড়ে।
বুধবার সন্ধ্যায় সেবন্তী বাড়ির কাছে কয়েকটি কুকুরকে বিস্কুট খাওয়াচ্ছিলেন। পিছনে দাঁড়িয়েছিল দুই মহিলা। তাদের মধ্যে ধৃত মোনাকে তিনি চিনতেন। তাঁর অভিযোগ, হঠাৎই দুই মহিলা সেবন্তীর উপর হামলা চালায়। তারা ধারালো অস্ত্র নিয়ে এমনভাবে আক্রমণ করে যে, কাপড় ভেদ করে তাঁর হাতে আঘাত লাগে আঘাত। সেসময় ওখান দিয়ে আসছিলেন সেবন্তীর বাবা। তিনি চিৎকার করে উঠলে বেগতিক বুঝে পালানোর সময় তারা ইট ছোঁড়ে। সেবন্তীর কপালে আঘাত লাগে।
[আরও পড়ুন: ‘জয় হিন্দ’ সেতু তৈরিতে রাজ্যের টাকা ফেরতের দাবি, উদ্বোধনেও রেলকে কটাক্ষ মুখ্যমন্ত্রীর]
এই ঘটনা দেখে তাঁর বাবাও অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি প্রথমে বাঙুর হাসপাতাল ও তারপর বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে যান। সেখানেই তাঁর চিকিৎসা হয়। রাতে হরিদেবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। তারই ভিত্তিতে মোনাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। সেবন্তীর অভিযোগ, প্রোমোটারই ওই দুই মহিলাকে তাঁর উপর হামলার জন্য পাঠান। অন্য অভিযুক্তর সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।