ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: ছাত্রাবাসে ছাত্রমৃত্যু ঘিরে এখনও উত্তাল বিশ্বভারতী। মৃতদেহ নিয়ে শুক্রবার রাতেই পূর্বপল্লিতে উপাচার্যের বাস ভবনের গেটের তালা ভেঙে ঢুকে পড়েন ছাত্রছাত্রীরা। মৃতদেহ রাখা হয় বাসভবনের ক্যাম্পাসে। আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা জানিয়ে দেন, উপাচার্যকে মৃত ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে হবে, নইলে আন্দোলন জারি থাকবে। কিন্তু শনিবার সকাল পর্যন্তও তাঁদের দাবি পূরণ না হওয়ায় টিএমসিপি ও এসএফআই সমর্থিত ছাত্ররা বিক্ষোভ দেখিয়ে চলেছেন। কেন উপাচার্য বেরিয়ে এসে মৃত ছাত্রের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করলেন না, কেন পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন না, এই প্রশ্নই তোলা হয়েছে। দাবি পূরণ না হওয়া অবধি আন্দোলন চলবে বলেই সাফ জানিয়েছেন পড়ুয়ারা। এদিকে উপাচার্যের নিরাপত্তা সুরক্ষিত করতে টুইট করে পদক্ষেপ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar)।
আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের অধ্যক্ষ ও বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী একটি ভারচুয়াল বৈঠক করেছিলেন। ছাত্রমৃত্যু নিয়ে সেখানে আলোচনা হয়। ১৪ জনের একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই কমিটির শনিবার সকাল ১১টা নাগাদ মৃত ছাত্রের বাবা, মা এবং দাদুর সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শুক্রবার রাতেই আসরে নামেন রাজ্যপাল। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিশ্বভারতীর (Viswa Bharati) উপাচার্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে টুইট করেন তিনি। মুখ্যসচিবকে বিষয়টি দেখতে বলেন। এরপর নিজেই টুইট করে ফের জানান, বীরভূমের জেলাশাসককে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব।
[আরও পড়ুন: প্রবল ঝড়-বৃষ্টি জেলায়, মুর্শিদাবাদে বাজ পড়ে মৃত ৩, নদিয়ায় গাছ ভেঙে একজনের মৃত্যু]
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার সকালে হস্টেল থেকে অসীম দাস নামে দ্বাদশ শ্রেণির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারকে ঘিরে। মৃতের পরিবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে খুন, প্রমাণ লোপাট এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছে। এই খুনে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে উপাচার্যের বাড়ির সামনে ওই দিন বেলা ১২টা থেকেই অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন মৃতের পরিবারের লোকজন। শুক্রবার সকাল থেকে সাধারণ মানুষ এবং ছাত্রছাত্রীরাও বিক্ষোভে যোগ দেন।
এদিকে, এই ঘটনায় বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে কার্যত অসংবেদনশীলই বলে দিলেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা। এদিন ফেসবুকে তিনি লেখেন, “বিশ্বভারতীতে ছাত্রের মৃত্যু যথেষ্ট বেদনাদায়ক। সদ্য সন্তানহারা বাবা-মায়ের ব্যাকুল আর্তির কথা মাথায় রেখে উপাচার্যের উচিত ছিল অন্তত একবার ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা করা। একজন শিক্ষকের কাছ থেকে অন্তত এটুকু মানবিকতা কাম্য।”