ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: আচমকা বিশ্বভারতীর (Visva-Bharati University) কেন্দ্রীয় অফিসের সামনের রাস্তা বন্ধ করে দিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু হাই কোর্টের নির্দেশ অনুসারে এই রাস্তা বন্ধ করতে পারে না বিশ্বভারতী। এমনটাই দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বিশ্বভারতীর এই সিদ্ধান্তের ফলে পূর্বপল্লি, দক্ষিণপল্লি-সহ একাধিক এলাকায় বসবাসকারী কয়েক হাজার মানুষ বিপদে পড়েছেন।
উল্লেখ্য, বিশ্বভারতীতে সমস্যা শুরু হয়েছিল মেলার মাঠে পাঁচিল তোলাকে কেন্দ্র করে। বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় অফিসের সামনের রাস্তাতেই পৌষ মেলার মাঠটি। পাঁচিল দেওয়ার সময় সেখানে দু’টি গেট বসিয়ে দেওয়া হয়। এই গেটের পাশে আবার দু’টি ছোট গেট ছিল। ওই গেট দিয়ে এলাকার বাসিন্দারা যাতায়াত করতেন। শুক্রবার থেকে সেই ছোট গেটও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা তণ্ময় ভট্টাচার্য বলেন, “এই রাস্তা দিয়ে সাধারণ মানুষ যাতায়াত করেন। এভাবে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া যায় নাকি? উপাচার্য নিজের ইচ্ছে মতো সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।” ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, “সাধারণ মানুষ যে রাস্তায় যাতায়াত করে তা বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ নয়। জেলা প্রশাসনের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিৎ।”
[আরও পড়ুন: প্রচারে বেরিয়ে আক্রান্ত নারায়ণগড়ের তৃণমূল প্রার্থী, গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে]
মেলার মাঠে পাঁচিল তোলা নিয়ে আগেই স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল। তারপর একাধিক কারণে বারবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বারবার অন্যায়ভাবে অধ্যাপকদের সাসপেন্ড করার অভিযোগ উঠেছে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর (Bidyut Chakrabarty) বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন পড়ুয়ারা। শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে প্রতিবাদী পড়ুয়াদেরও। এসবের মাঝেই নয়া বিতর্ক উসকে দেয় কিছুদিন আগে ভাইরাল হওয়া একটি অডিও ক্লিপ। অডিও ক্লিপে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে বলতে শোনা যায়, “আমি বিশ্বভারতী বন্ধ করার ব্যবস্থা করে যাব। আমি এখানে চোর ধরছি। তাই আমার বিরুদ্ধে বলা হচ্ছে। এই চোরদের তাড়াবো। আমাকে কিছু বললে আপনারা কিছু বলেন না। তার বদলে কুকুরের মতো চিৎকার করছেন। আমি কামড়াতে যাব না। কারণ আমি এই শিক্ষা পাইনি।” উপাচার্যের এহেন মন্তব্যেও তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এবার গেট বন্ধ করা বিক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা।
[আরও পড়ুন: দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভের জের, জনপ্রিয়তায় জোর, রাজ্যের ৪ কেন্দ্রে প্রার্থী বদল তৃণমূলের]
শুক্রবার বোলপুরের কার্যালয়ে বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে তোপ দেগেছেন মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা। এদিন শান্তিনিকেতন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত কয়েক বছর ধরে বোলপুরের পরিস্থিতি একদমই পালটে গিয়েছে। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ নিজেদের একঘরে করে ফেলতে চাইছে। সীমানা নির্ধারণের জন্য প্রাচীরের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু বিশ্বভারতীর ঐতিহ্য মেনে সেটা করা প্রয়োজন ছিল। বিদায়ী মৎস্যমন্ত্রী এদিন বিশ্বভারতী প্রসঙ্গে বর্তমান উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে ‘স্বার্থপর দৈত্য’ সঙ্গে তুলনা করেন।