সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শর্তসাপেক্ষে বৈঠকের ডাক ফিরিয়ে দিয়েছেন কৃষকরা (Farmers)। লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে চাপের মুখে ফের বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার। আজ, মঙ্গলবার দুপুর তিনটেয় বৈঠক হওয়ার কথা।
এদিনের সেই বৈঠকেও যোগ দিতে নারাজ আন্দোলনকারী কৃষকদের একাংশ। যুক্তি, দেশজুড়ে অন্তত ৫০০টি কৃষক সংগঠন বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। বৈঠকে মাত্র ৩২টি সংগঠনকে ডাকা হয়েছে। যা একেবারেই অনৈতিক। বৈঠকে যোগ দেওয়া হবে কি না তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আলোচনায় বসেছে কৃষক সংগঠনগুলি।
এদিকে বৈঠকে কী প্রস্তাব রাখা হবে, বৈঠকের প্রস্তাব খারিজ হলে প্ল্যান বি কী হবে, সেই সমস্ত বিষয় নিয়ে বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার বাড়িতে চলছে বৈঠক। সেখানে রয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার।
[আরও পড়ুন : নিভারের পর এবার বুরেভি! ফের ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় কাঁপছে দক্ষিণের দুই রাজ্য]
পাঁচদিনের মাথায় সোমবার রাতে আন্দোলনকারী কৃষকদের আলোচনায় ডাকে কেন্দ্র। আজ, মঙ্গলবার দিল্লিতে বৈঠক হওয়ার কথা। আগে ঠিক ছিল ৩ ডিসেম্বর এই বৈঠক হবে। সোমবার রাতে কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র তোমার জানিয়েছেন, প্রবল ঠান্ডা ও করোনা সংক্রমণের কথা বিবেচনা করে কৃষকদের সঙ্গে আলোচনার দিন এগিয়ে আনা হল। কৃষকদের পালটা জবাব, “আমাদের সমস্যা কোভিড পরিস্থিতি বা শীতের চেয়ে অনেক বড়।”
এদিন সকালে কৃষকদের সমর্থনে টুইট করেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। কটাক্ষ করে কেন্দ্রীয় সরকারকেও। লেখেন, “আমাদের অন্নদাতারা যখন রাস্তায় আন্দোলন করছেন। তখন টেলিভিশনে লাগাতার মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। ওঁদের হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পরিবর্তে আমরা জীবনধারন করি। একমাত্র ওঁদের পাশে থেকেই সেই ঋণ শোধ করা সম্ভব। ওঁদের মারধর করে, কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে ওঁদের ঋণ শোধ করা সম্ভব নয়।”
[আরও পড়ুন : বারাণসীতে দাঁড়িয়েও বাংলার ভোটপ্রচার প্রধানমন্ত্রীর, কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে তোপ তৃণমূলকে]
কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্তে নিরাপত্তারক্ষীদের চোখে চোখ রেখে শান্তিপূর্ণ অথচ দৃপ্ত প্রতিবাদ করে চলেছেন কৃষকরা। পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় তৈরি হওয়া কৃষক বিক্ষোভ স্ফুলিঙ্গ ক্রমশ দেশজুড়ে দাবানলের রূপ নিচ্ছে। কিছুতেই যাতে এর ফলে দল ও সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট না হয় এবং কীভাবে আন্দোলন বন্ধ করিয়ে কৃষকদের মন পাওয়া যায় সেটাই এখন বিজেপি শীর্ষনেতৃত্বের প্রাথমিক লক্ষ্য।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র তোমর কৃষকদের কাছে আলোচনায় বসার বার্তা দেন। তার ঠিক পরদিনই আসরে নামেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর প্রস্তাবও নাকচ করে দেন কৃষকরা। তাই পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতে রবিবার রাতে একটি হাইপ্রোফাইল বৈঠক করেন তিনি। যেখানে ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, কৃষিমন্ত্রী তোমর ও বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। তারপরই সোমবার বৈঠকের প্রস্তাব দেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী। এবার সেই প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পাঞ্জাব কিষাণ সংঘর্ষ কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সুখবিন্দর এস সভরান জানান, “দেশজুড়ে ৫০০-এর বেশি কৃষক সংগঠন আন্দোলন চালাচ্ছে। অথচ মাত্র ৩২টি সংগঠনকে বৈঠকে ডাকা হয়েছে। সকলকে আলোচনায় না ডাকা পর্যন্ত আমরা বৈঠকে যাব না।”