বিশ্বদীপ দে: পুজো! এই ছোট্ট শব্দটা মনের ভিতরে কতরকমের যে অনুরণন তোলে! শিউলি ফুল আর নীল আকাশে পেঁজা মেঘের দৃশ্যে মনের কোণে বেজে ওঠে ঢাকের বোল। মনে পড়ে শচীন কর্তার গান- ‘টাকডুম টাকডুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল’। শুধু পুজোই নয়, বাংলার অন্যান্য বহু পার্বণের সঙ্গেই এর যোগাযোগ। সেই কবে লেখা ‘হুতোম প্যাঁচার নকশা’য় পাই ‘কলিকাতা সহরের চার দিকেই ঢাকের বাজনা শোনা যাচ্চে…।’ সেটা অবশ্য ছিল সংক্রান্তির বর্ণনা। তবে নিঃসন্দেহে দুর্গাপুজোর (Durga Puja) সঙ্গেই যেন ঢাকের বাদ্যির সবচেয়ে নিবিড় সম্পর্ক। এবারের পুজোতে তাই বাঙালির সেই চিরকালীন ঢাক আর ঢোলই হয়ে উঠেছে উল্টোডাঙা সংগ্রামীর (Ultadanga Sangrami) ৫৮তম বছরের পুজোর মণ্ডপ ভাবনা। ঢাক বা ঢোল বাজান যাঁরা, তাঁদের সম্মান জানিয়ে এবার এই ক্লাবের পুজোর থিম ‘ঢাক ও ঢোলে মায়ের আবাহন’।
পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা তুষার বলছিলেন, ‘‘ঢাক ছাড়া মা দুর্গার আগমন ভাবাই যায় না। তাই এবার ঢাক ও ঢোলই আমাদের থিম।’’ পুজোর মণ্ডপে যেমন থাকবে ঢাকের আদল, তেমনি প্যান্ডেলের সজ্জাজুড়েও থাকবে ঢাক। আর সেই ঢাক তৈরি হচ্ছে প্যান্ডেলেই। তবে এবার ঠাকুর হবে একচালার। থাকছে না প্যান্ডেলের ভিতরে প্রবেশ করে প্রতিমা দর্শনের ব্যবস্থাও।
[আরও পড়ুন: উৎসবেও সতর্ক থাকা জরুরি, মাস্ক কিনতে আলাদা বাজেট পুজো কমিটিগুলির]
করোনাকালে এভাবেই সাবধানতা অবলম্বন করতে চান উদোক্তারা। সামাজিক দূরত্ব (Social distancing) বজায় রাখার দিকে যেমন নজর রাখবেন তাঁরা, পাশাপাশি লক্ষ রাখবেন কাদের মুখে মাস্ক নেই। তাঁদের কাছে মাস্কও পৌঁছে দেবেন তাঁরাই। এভাবেই অতিমারীর আবহে সাবধানতার সঙ্গে পুজোর পরিকল্পনা করেছেন তাঁরা।
প্রতিবারই দর্শনার্থীর ঢল নামে এই পুজোয়। সেই সঙ্গে বিগত বছরগুলিতে মিলেছে অসংখ্য পুরস্কার ও স্বীকৃতি। এবার পরিস্থিতি অন্য রকম। তাই কিছুটা সংক্ষিপ্ত পুজোর আয়োজন। তবু তারই মধ্যে সমস্ত কিছু পরিকল্পনা করে পুজোকে সর্বাঙ্গীন সুন্দর করে তোলাই লক্ষ্য। পাশাপাশি রয়েছে সমাজসেবামূলক ভাবনাও। আমফান ও করোনার কবলে পড়া দুঃস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়াতে এর আগে করা হয়েছিল ত্রাণের ব্যবস্থা। এবার পুজোতেও তেমন কিছু করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এখনও সবকিছু চূড়ান্ত হয়নি।
