সুদীপ রায়চৌধুরী: রাজ্যে এসআইআর ঘোষণার পর থেকেই বিজেপি নেতারা বারবার দাবি করেছেন, বহু সংখ্যালঘু ভোটারের নাম বাদ যেতে চলেছে। কীসের ভিত্তিতে এই দাবি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সঙ্গে কমিশনের আঁতাতের অভিযোগও তোলা হয়েছে। কিন্তু রাজ্যের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের আগেই উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। কমিশন সূত্রে খবর, সংখ্যালঘু এলাকা নয়, মতুয়াগড়েই আনম্যাপড ভোটারের সংখ্যা বেশি। এতেই এসআইআর বিজেপির জন্য বুমেরাং হওয়ার আশঙ্কা করছে ওয়াকিবহাল মহল।
রাত পোহালেই প্রকাশিত হতে চলেছে রাজ্যের খসড়া ভোটার তালিকা। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দুপুরেই এই তালিকা নির্বাচন কমিশন ও রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও)-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। একইসঙ্গে জেলাশাসকের কার্যালয়েও সেই তালিকা টাঙানো থাকবে। তালিকা দেওয়া হবে রাজনৈতিক দলের হাতেও। খসড়া তালিকা থেকে যে ৫৮ লক্ষেরও বেশি নাম বাদ পড়ছে, তাদের নামের তালিকা পৃথকভাবে ছাপিয়ে বুথে বুথে টাঙিয়ে দেওয়া হবে। এরপর শুনানি পর্ব চলবে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। কিন্তু কোথায় আনম্যাপড কত ভোটার? কমিশন সূত্রে পাওয়া নতুন তথ্য অনুযায়ী, আনম্যাপড ভোটারের সংখ্যা বেশি উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়ার মতুয়া অধ্যুষিত কেন্দ্রগুলিতে। যার অধিকাংশই বিজেপি জিতেছিল। অর্থাৎ সংখ্যালঘু নয়, মতুয়াদের মধ্যেই আনম্যাপড ভোটারের সংখ্যা বেশি। সূত্রের খবর, সবথেকে বেশি আনম্যাপড ভোটার শান্তনু ঠাকুরের দাদা সুব্রত ঠাকুরের আসন উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটায়, ১৪.৫ শতাংশ। একইভাবে হাবড়ায় ১৩.৬ শতাংশ, বাগদায় ১২.৭ শতাংশ, কল্যাণীতে ১১.৯ শতাংশ, অশোকনগরে ১১.৮ শতাংশ, বনগাঁ উত্তরে ১১.৩ শতাংশ, রানাঘাট উত্তর পূর্বে ১১.২ শতাংশ, বনগাঁয় ১০.৮ শতাংশ, কৃষ্ণগঞ্জে ১০.৪, রানাঘাট উত্তর পশ্চিমে ১০.৩, রানাঘাট দক্ষিণে ৯.৩, চাকদহে ৯ শতাংশ, শান্তিপুরে ৮.৫ শতাংশ, কৃষ্ণনগর উত্তরে ৭.৫ শতাংশ, ও হরিণঘাটায় ৭.২ শতাংশ ভোটার আনম্যাপড হিসাবে চিহ্নিত হয়েছেন।
অন্যদিকে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদে আনম্যাপড ভোটারের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কম। এই জেলার সর্বাধিক আনম্যাপড ভোটার রয়েছে ভগবানগেলায়, ২.৬ শতাংশ। লালগোয়ায় ১.১ শতাংশ, সামশেরগঞ্জে ১ শতাংশ,রানীনগরে ০.৯ শতাংশ, রঘুনাথগঞ্জে ০.৭ শতাংশ, হরিহরপাড়ায় ০.৬ শতাংশ, ডোমকলে ০.৪ শতাংশ ভোটার আনম্যাপড। মালদহের সুজাপুরে আনম্যাপড ভোটারের সংখ্যা ০.৫ শতাংশ। উল্লেখ্য, যে ৩১ লক্ষের কাছাকাছি ভোটারদের আনম্যাপড হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তাঁরাই ডাক পাবেন শুনানিতে। এই শুনানির তালিকার কোনও নাম নিয়ে কারও আপত্তি বা দাবি থাকলে তাও ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জানানো যাবে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি।
