সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: চব্বিশ ঘণ্টা পাখা চললে খারাপ হয়ে যায়। তাই পাখা কতক্ষণ চলবে তার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডির বিডিও ও ওই ব্লকের ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আধিকারিক। রুখাশুখা পুরুলিয়ায় (Purulia) ৪০ ডিগ্রি প্রখর দাবদাহে বাঘমুন্ডি পাথরডি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই বিজ্ঞপ্তিতে বিতর্কে জড়িয়েছেন বাঘমুন্ডির বিডিও দেবরাজ ঘোষ ও বাঘমুন্ডি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আধিকারিক রামকৃষ্ণ ঘোষ।
ব্যাপারটা ঠিক কী? বাঘমুন্ডি পাথরডি ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জরুরী বিভাগের বাইরে সাদা কাগজের উপর ছাপানো কালো কালিতে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। তাতে লেখা, “এতদ্বারা সকলকে জানানো যাইতেছে যে, হাসপাতাল ওয়ার্ডের ফ্যান সকাল পাঁচটা থেকে আটটা পর্যন্ত ও সন্ধে ছ’টা থেকে আটটা পর্যন্ত বন্ধ থাকিবে। কারণ ২৪ ঘন্টা পাখা চললে খারাপ হয়ে যায়।” নিচে আদেশ অনুসারে ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক বাঘমুন্ডি ব্লক লেখার ওপরে বিডিও দেবরাজ ঘোষের সইl একইভাবে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক পাথরডি হাসপাতাল লেখার উপরে রয়েছে রামকৃষ্ণ ঘোষের স্বাক্ষর। রয়েছে ব্লক মেডিক্যাল অফিসার অফ হেলথ, পাথরডি বিপিএইচসি, জেলা পুরুলিয়ার স্ট্যাম্প।
[আরও পড়ুন: বউবাজারের আতঙ্ক এবার সোনারপুরে, বহুতল নির্মাণে কাজ চলাকালীন একাধিক বাড়িতে ফাটল]
এমন বিজ্ঞপ্তির কথা কোন রাখঢাক না করেই স্বীকার করে নিয়েছেন বাঘমুন্ডির বিডিও দেবরাজ ঘোষl তিনি বলেন, “এই নিয়ে অযথা বিতর্ক হচ্ছে। ওয়ার্ডের ১৩টি ফ্যান খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। মাত্র চারটে ফ্যান চলছে। এটা মাত্র তিনদিনের জন্য। ফিমেল ওয়ার্ডে খুব শীঘ্রই আমরা এসির ব্যবস্থা করছিl” বিডিও এই কথা বললেও ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রামকৃষ্ণ ঘোষকে একাধিকবার ফোন ও মেসেজ করা হলেও এই বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, এদিন পুরুলিয়ার সর্বোচ্চ ছিল ৪০.৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। সেই সঙ্গে সম্প্রতি পার হওয়া ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বাতাসে জলীয় বাষ্প থাকায় এই রুখাশুখা জেলাতেও আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল যথেষ্ট। একদিকে লু সেইসঙ্গে ঘাম। সব মিলিয়ে একেবারে হাঁসফাঁস অবস্থা বাঘমুন্ডি পাথরডি ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের রোগীদেরl তাঁদের কথায়, “পাখা খারাপ হয়ে যাবে বলে সারাদিনে পাঁচ ঘণ্টা ফ্যান বন্ধ হাসপাতলেl এমন বিজ্ঞপ্তিতে সত্যিই আমরা হতবাক।” সব মিলিয়ে রীতিমতো ক্ষোভে ফুঁসছেন ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রোগীরা ও তার আত্মীয়রা। পরিস্থিতি এমনই যে আত্মীয়রা তার রোগীদেরকে গাছতলায় নিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।