shono
Advertisement
Purulia

নারী সুরক্ষায় দেবীপক্ষের সূচনাতেই 'শক্তি' প্রকল্প, অভিনব উদ্যোগ পুরুলিয়া পুলিশের

আপাতত ৮ থেকে ১৬ বছর পর্যন্ত ছাত্রীদের প্রশিক্ষণ দেবে পুলিশ। দেবীপক্ষের সূচনায় জেলা পুলিশের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সকলে।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 09:51 PM Oct 03, 2024Updated: 09:51 PM Oct 03, 2024

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: দেবীপক্ষের সূচনাতেই শক্তি! অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে এবার আত্মরক্ষার পাঠ দেবে পুলিশই। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতের কথা মাথায় রেখে পুরুলিয়া জেলা পুলিশের নতুন প্রকল্প 'শক্তি'র আনুষ্ঠানিক সূচনা হলো বৃহস্পতিবার। এদিন বিকালে বেলগুমা পুলিশ লাইনের প্যারেড গ্রাউন্ডে এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রকল্পে স্কুল ও কলেজ ছাত্রীদের আত্মরক্ষার্থে ক্যারাটে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আপাতত ৮ থেকে ১৬ বছর পর্যন্ত ছাত্রীদের প্রশিক্ষণ দেবে পুলিশ। দেবীপক্ষের সূচনায় জেলা পুলিশের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সকলে।

Advertisement

প্রকল্পের প্রথম পর্বে থানায়-থানায় ২০ জন ছাত্রীকে নিয়ে একটি ক্যাম্প হবে। তাছাড়া বেলগুমা পুলিশ লাইনে আলাদা শিবিরে থাকবে পুরুলিয়া সদর, মফস্বল ও টামনা থানা। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমাদের এই নতুন প্রকল্পের উদ্দেশ্যই হলো অশুভ শক্তিকে বিনাশ করে সমাজে নতুন আলো দেখানো। এই কারণেই আমরা একেবারে দেবীপক্ষের সূচনাতেই 'শক্তি' প্রকল্প চালু করলাম। নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে আত্মরক্ষার্থে ছাত্রীদের ক্যারাটে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। স্কুল স্তর থেকে প্রকল্প চালু হবে। তার পর ধাপে ধাপে কলেজ স্তরেও আমরা এই প্রকল্প চালু করব।" এই প্রশিক্ষণ একেবারে অবৈতনিক বলে জানিয়েছে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। এদিন 'শক্তি'র জার্সি সামনে এনে প্রশিক্ষকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

'শক্তি' প্রকল্পের উদ্বোধন পুরুলিয়া জেলা পুলিশের। ছবি: প্রতিবেদক।

পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রত্যেকটি থানা এলাকায় আপাতত ২০ জনের একটি শিবির হলেও সংশ্লিষ্ট থানা এলাকার ছাত্রীদের উৎসাহের কথা মাথায় রেখে পরবর্তীকালে প্রশিক্ষণ নেওয়া ছাত্রীর সংখ্যা বাড়ানো হবে। প্রত্যেকটি থানা এলাকাতেই পুলিশ এক বা একাধিক প্রশিক্ষক নিয়োগ করেছে। শুধু তাই নয় এই প্রকল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এই জেলার বাসিন্দা তথা এই ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক স্তরে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ক্যারাটেকাদের মতামত নিচ্ছে। পুরুলিয়া জেলা পুলিশ চাইছে, প্রকল্পের মধ্য দিয়ে ছাত্রীদের শুধু আত্মরক্ষা নয়। শারীরিক ও মানসিকভাবে সবল করে তোলা। সেইসঙ্গে একটা আলাদা আত্মবিশ্বাস। মানসিক অস্থিরতা দূর করে সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছনো। প্রকল্পের ব্যাপ্তি এখানেই শেষ নয়। পুরুলিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিনহা রায় বলেন, "এই প্রকল্প জীবন দর্শনকে বদল করে দিতে পারে। আত্মসংযম তৈরি করে। এমনকী সঠিক মানুষ গড়ে তুলতেও সহায়ক হয়ে ওঠে। এই কারণেই আমরা আপাতত স্কুল স্তরে এই প্রকল্প চালু করলাম।"

জার্সি উদ্বোধনে পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: প্রতিবেদক।

পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার ছাড়াও এই প্রকল্পের রূপরেখা তৈরি করেছেন পুরুলিয়া জেলা পুলিশের ডিএসপি (শৃঙ্খলা ও প্রশিক্ষণ) শাশ্বতী শ্বেতা সামন্ত। ঝালদা ও বেলগুমা পুলিশ লাইনের ট্রেনার যথাক্রমে রামকৃষ্ণ সাউ ও দীপায়ন সিং বলেন, "বর্তমান সময়ের কথা মাথায় রেখে পুরুলিয়া জেলা পুলিশের এই উদ্যোগ ভীষণই প্রশংসনীয়। এই প্রকল্পের মধ্য দিয়ে শুধু আত্মরক্ষা নয়। ছাত্রীরা বিভিন্নভাবে উপকৃত হবেন।" এদিনের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া ঝালদা গার্লস হাইস্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী শ্রেয়া দে, অর্পিতা সাহা বলেন, "আমরা এই ক্যারাটে শিখে আমাদের মধ্যে একটা আলাদা আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। আমাদের মতো প্রত্যেক ছাত্রী ক্যারাটে শিখুক, সেটা আমরা চাই। ঘর থেকে বেরলে মাঝেমধ্যেই আমাদেরকে ইভটিজিং বা হেনস্তার শিকার হতে হয়। তা মোকাবিলা করতেই আত্মরক্ষার্থে এই প্রকল্প ব্যাপকভাবে কার্যকর হবে।"

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
Advertisement