সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে সরগরম আমেরিকা। জোর কদমে চলছে ভোট প্রচার। এবার লড়াই ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের সঙ্গে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ইতিমধ্যেই কয়েকটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ট্রাম্পকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভুত কমলা। আর বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উত্তরসূরি হিসাবে কমলাকেই পছন্দ করলেন ভ্লাদিমির পুতিন। কারণ এই ডেমোক্রেট নেত্রীর হাসিতেই যে মুগ্ধ হয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট!
চলতি বছরের নভেম্বরে ভোট দিয়ে নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নেবেন আমেরিকার জনগণ। নির্বাচনের দামামা বাজতেই ডেমোক্রেটদের প্রার্থী হিসাবে একপ্রকার নিশ্চিত ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কিন্তু মাঝপথে ভোটের ময়দান থেকে তিনি সরে দাঁড়ানোয় ডেমোক্রেট প্রার্থী নির্বাচিত হন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা। বিভিন্ন সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, এখন তাঁর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। ট্রাম্পের থেকে খানিক হলেও পাল্লা ভারী কমলারই। এবার তাঁর নাম শোনা গেল রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের গলাতেও। রয়টার্স সূত্রে খবর, রাশিয়ার ভ্লাদিভোস্টক শহরের একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় পুতিনের কথায় উঠে আসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রসঙ্গ। তখনই তিনি বলেন, "জো বাইডেনের সিদ্ধান্তকে আমি সমর্থন করি। তাঁর উত্তরসূরি হিসাবে আমার সমর্থন ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের দিকে থাকবে। আর ওঁর হাসি খুব সুন্দর। এই হাসি সকলের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। কমলার হাসিই বুঝিয়ে দেয় যে তাঁর জন্য সবকিছু ভালোই হবে।"
[আরও পড়ুন: নতুন প্রধানমন্ত্রী পেল ফ্রান্স, বামেদের আপত্তি উড়িয়ে দক্ষিণপন্থী নেতাকেই বাছলেন ম্যাক্রোঁ]
তবে ভারতীয় বংশোদ্ভুত এই নেত্রীকে পুতিনের সমর্থন জানানোর আরও কারণ রয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ও শিল্পক্ষেত্রগুলোর উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে আমেরিকা। এদিনের বক্তব্যে পুতিন বলেন, "কমলা হ্যারিসের ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে। যার অর্থ, তিনি হয়তো রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা থেকে বিরত থাকতে পারেন। তবে শেষ সিদ্ধান্ত জনগণের হাতেই। তাঁরাই রায় দেবেন।" প্রসঙ্গত, এর আগে একাধিকবার পুতিন উল্লেখ করেছেন যে, ক্ষমতায় থাকার সময় আমেরিকার ইতিহাসে ডোনাল্ড ট্রাম্পই সবচেয়ে বেশি নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছেন মস্কোর ঘাড়ে।
উল্লেখ্য, বাইডেন যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড়ে সামিল ছিলেন তখন তাঁকেই সমর্থন জানিয়েছিলেন পুতিন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, ফের বাইডেনকেই পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে দেখতে চান। বাইডেনের দূরদর্শিতা ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার জন্যই তাঁকে বেছে নিয়েছেন তিনি। রুশ প্রেসিডেন্টের এই বক্তব্যের পরই ক্ষোভ উগরে ট্রাম্প বলেছিলেন, “আমার সঙ্গে পুতিনের ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু উনি আমাকে চান না। বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট হিসাবে দেখতে চান। বাইডেন তো তাঁকে ইউক্রেন দিয়ে দিয়ে দেবেন।” বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে কমলাকে এগিয়ে রাখায় ফের পুতিনের বিরুদ্ধে সরব হবেন ট্রাম্প। এখন দেখার, ইউক্রেন যুদ্ধ আবহে কমলা ক্ষমতায় এলে কী রাশিয়ার সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক ভালো হবে? নাকি ট্রাম্প গদিতে বসলে আরও বেশি নিষেধাজ্ঞার খাঁড়া ঝুলবে মস্কোর ঘাড়ে? এর উত্তর আগামী দিনেই মিলবে।