অর্ণব আইচ: প্রমোটিং বিবাদের জেরে বোনের অনুপস্থিতিতে ভগ্নিপতিকে খুন করার অভিযোগ উঠল শ্যালকের বিরুদ্ধে। তোষকে দেহ মুড়ে বরফে চাপা দিয়ে দেহ লোপাটের চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ। আশ্চর্যজনকভাবে রোগীকে না দেখেই ডেথ সার্টিফিকেট দিয়ে দেন এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। হাড়হিম করা ঘটনাটি ঘটেছে রিজেন্ট পার্কে। যদিও খুনের অভিযোগ অস্বীকার আটক শ্যালকের। তাঁর দাবি, শারীরিক অসুস্থতাতে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে তার ভগ্নিপতির।
রিজেন্ট পার্ক কলোনির বাসিন্দা সমীররঞ্জন সুর দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। বাড়ি থেকে বিশেষ বেরোতেন না তিনি। তাঁকে বাড়িতে রেখেই পরিচিত বেশ কয়েকজনের সঙ্গে পাঞ্জাবে বেড়াতে গিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী জয়ন্তী সুর এবং মেয়ে। সেই সময় সমীরবাবুর দেখভাল করছিলেন তাঁর শ্যালক বিশ্বনাথ দাস। তাঁর দাবি, ইতিমধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন সমীরবাবু। বিশ্বনাথের দাবি, অসুস্থতার জেরে মারা যান তাঁর ভগ্নিপতি। সমীরবাবুর স্ত্রী এবং মেয়েকে খবর দেন সমীরবাবু। তবে তখনও ওই বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর পাননি তাঁর প্রতিবেশীরা।
এদিকে, ইতিমধ্যেই বাড়িতে তোষক এবং বরফের চাঁই নিয়ে ঢুকতে দেখা যায় বিশ্বনাথকে। তাতেই সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। তাঁদের দাবি, তোষকে মুড়ে বরফ চাপা দিয়ে মালঞ্চ প্রেক্ষাগৃহের সামনে দাঁড় করানো ম্যাটাডোরে চাপিয়ে সমীরবাবুর দেহ দাহ করতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বিশ্বনাথ। তাতেই রহস্য দানা বাঁধে। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, বিশ্বনাথ তাঁর ভগ্নিপতি সমীরকে প্রতিদিনই অত্যাচার করত। সেই তার ভগ্নিপতিকে খুন করে বলেও অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি, প্রমোটিং বিবাদের জেরেই ভগ্নিপতিকে নিজে হাতে খুন করে বিশ্বনাথ। এরপরই বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাড়িতে রাখা ফ্রিজার থেকে উদ্ধার করে বৃদ্ধের দেহ। এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে তাঁর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। নিহতের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন পুলিশ আধিকারিকরা। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পাঞ্জাব থেকে ফিরছেন নিহতের স্ত্রী জয়ন্তী সুর।
[আরও পড়ুন: ‘পুলিশের আরও সংযত হওয়া উচিত’, যাদবপুরে পড়ুয়াদের উপর লাঠিচার্জে বিরক্ত শিক্ষামন্ত্রী]
শ্যালককে আটক করে আপাতত জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে কীভাবে ডেথ সার্টিফিকেট জোগাড় করল ওই ব্যক্তি, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পুলিশ সূত্রে খবর আটক ওই ব্যক্তি জানিয়েছে, সমীরবাবু অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসককে বাড়িতে ডেকে আনে বিশ্বনাথ। তাঁর সঙ্গে নিজে কথা বলে সে। এছাড়াও ফোনে নিহতের স্ত্রী জয়ন্তীর সঙ্গেও কথা বলিয়ে দেয় সে। বিশ্বনাথ এবং জয়ন্তীর অনুরোধেই ওই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক ডেথ সার্টিফিকেট দেন। তবে চিকিৎসকের দাবি, তাঁকে সমীরবাবুর দেহ দেখতে দেওয়া হয়নি। নিয়ম বলছে, কোনও মৃত ব্যক্তিকে না দেখে ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করা যায় না। নিয়ম ভাঙলে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলাও রুজু হতে পারে। তা সত্ত্বেও কীভাবে চিকিৎসক এই কাজ করলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
The post দেহ না দেখেই ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু চিকিৎসকের, রিজেন্ট পার্কে বৃদ্ধের মৃত্যুতে রহস্য appeared first on Sangbad Pratidin.