shono
Advertisement

শক্তিগড় শুটআউট: কয়লা মাফিয়া রাজু হত্যায় দিল্লি-যোগ! ক্রমশ জটিল হচ্ছে নীল গাড়ির রহস্য

একটি নয়, চারটে নীল গাড়ির খোঁজে হন্যে পুলিশ।
Posted: 09:25 AM Apr 06, 2023Updated: 09:33 AM Apr 06, 2023

সৌরভ মাজি, বর্ধমান: একটা নয়, চার চারটে নীল রঙের ব্যালেনো গাড়ি ‘জড়িয়ে গিয়েছে’ কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে। পুলিশকে ঘোল খাওয়াতে দিল্লি থেকে চুরি করা নীল রঙের ব্যালেনো গাড়িতে লাগানো ছিল কলকাতার নীল ব্যালেনো গাড়ির নম্বর প্লেট। উদ্ধার হওয়া গাড়িতে রাখা ছিল আরও তিনটি নম্বর প্লেট। সেগুলিও নীল রঙের ব্যালেনো গাড়ির।

Advertisement

খুনের রহস্যভেদে এই নীল গাড়িই হতে পারত তদন্তকারীদের তুরুপের তাস। কিন্তু নীল গাড়ির জট ছাড়াতেই হিমশিম খাচ্ছেন তদন্তকারীরা। একটা জট খুলতে সক্ষম হলেও আরও কঠিন ফাঁসে আটকে যাচ্ছে তদন্তের গতি। তার মধ্যেও পুলিশ যতটুকু এগোতে পেরেছে তাতে শুধুমাত্র নীল গাড়িরই জাল বিস্তৃত রয়েছে সুদূর দিল্লি পর্যন্ত। সেখান পর্যন্ত পৌঁছতে পারলেও আততায়ীদের পর্যন্ত পৌঁছনোর লিঙ্ক কেটে গিয়েছে। দিল্লির পরের লিঙ্ক পর্যন্ত পৌঁছতে পারলেই আততায়ীদের খুব কাছে চলে যাবে তদন্তের কাজ। এমনটাই মনে করছেন তদন্তকারীরা।

[আরও পড়ুন: শ্রদ্ধা কাণ্ডের ছায়া হরিয়ানায়, বিদেশ থেকে ডেকে এনে তরুণীকে খুন, দেহ পুঁতেও দিলেন প্রেমিক!]

গত শনিবার ‌পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ে একটি ল্যাংচার দোকানের সামনে খুন হন রাজেশ ওরফে রাজু ঝা। আততায়ীরা একটি নীল রঙের ব্যালেনো গাড়িতে করে এসেছিল। রাজুকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে নীল গাড়িতে চেপে চম্পট দেয় তারা। পরে সেই নীল ব্যালেনো গাড়ি উদ্ধার হয় শক্তিগড় থানার অদূরে। প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীরা মনে করছেন, গুগল ম্যাপ ধরে পুরনো জিটি রোড ধরে এগিয়েছিল ওই নীল গাড়ি। কিন্তু রাস্তা যে শক্তিগড় থানায় গিয়ে শেষ হয়ে যাবে তা বোধহয় জানা ছিল না বাইরে থেকে আসা আততায়ীদের। তাই তারা গাড়িটি সেখানে ফেলে পালায়। এর পর দুষ্কৃতীরা রেলপথ ধরে পালিয়ে থাকতে পারে কাছেই স্টেশন থাকায়। আবার এমনও হতে পারে, পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে ইচ্ছাকৃতভাবে নীলগাড়িটি থানার অদূরে ফেলে রেখে গিয়েছিল। সেখানে থাকা কোনও ব্যাকআপ গাড়িতে পালিয়েছে তারা। কোনও সম্ভাবনাই উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ।

তবে উদ্ধার হওয়া নীল গাড়ি নিয়ে তদন্ত যত এগিয়েছে ততই যেন অবাক হওয়ার পালা ছিল। নীল গাড়ির নম্বর প্লেটের সূত্রে পুলিশ জানতে পারে গাড়ির মালিক কলকাতার জনৈক মহিলা। কিন্তু নীল গাড়ির ইঞ্জিন ও চেসিস নম্বর বিকৃত করা ছিল। বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে পুলিশ জানতে পারে কলকাতার ওই মহিলার গাড়ি ওটা নয়। তাহলে গাড়িটি কার?

[আরও পড়ুন: একাই সব মাংস সাবাড়! প্রতিবাদ করায় ছেলেকে পিটিয়ে মারল বাবা]

আততায়ীদের নীল গাড়ি থেকে আরও তিনটি নম্বর প্লেট বাজেয়াপ্ত করেছিল পুলিশ। সেই সূত্রে তদন্তকারীরা জানতে সব ক’টি নম্বর প্লেটই কোনও না কোনও নীল রঙের ব্যালেনো গাড়ির। তার মধ্যে একটি গাড়ির নম্বর দিল্লির। এছাড়া গাড়ির ইঞ্জিন ও চেসিস নম্বর বিশেষজ্ঞদের দিয়ে উদ্ধার করিয়ে দিল্লীর নীল ব্যালেনো গাড়ির নম্বরের বিষয়ে নিশ্চিত হয় পুলিশ। পাশাপাশি, পাশের রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সিসি ক্যামেরায় দিল্লির দিক আসা ব্যালেনো গাড়িটির ফুটেজ পায় পুলিশ। ঝাড়খণ্ডের অংশে নীল গাড়িতে কলকাতার নম্বর প্লেটই লাগানো ছিল। শনিবার ভোর ৩ টে ৫৫ মিনিট নাগাদ গাড়িটি ডুবুরডিহি চেকপোস্ট দিয়ে ঝাড়খণ্ডের দিকে গিয়েছিল। আবার রাজ্যে ঢুকেছিল ওইদিন দুপুর দেড়টা নাগাদ।

তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, আততায়ীদের ব্যবহৃত গাড়িটি দিল্লির জনকপুর এলাকা থেকে চুরি হয়েছিল বেশ কিছুদিন আগে। ওই নীল গাড়ির মালিক গুরুগ্রামের বাসিন্দা। এখনও পর্যন্ত পুলিশ নিশ্চিত, শক্তিগড়ে হত্যাকাণ্ড চালাতে দিল্লির চুরি করা গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছিল। এর পরেই লিঙ্ক হারিয়ে গিয়েছে। আততায়ীদের কাছাকাছি গিয়েও থমকে যেতে হয়েছে তদন্তকারীদের। তবে হাল ছাড়েনি পুলিশ। গাড়ির সূত্রেই হয়তো হত্যাকাণ্ডের ক্লু বেরিয়ে আসবে, আশাবাদী পুলিশকর্তারা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার