স্টাফ রিপোর্টার: ঘটনার রাতে নির্যাতিতা মহিলা চিকিৎসক হিসাবে একাই ডিউটিতে ছিলেন! গত ৮ আগস্ট হাসপাতালের এক বা একাধিক কর্মীর থেকে এই তথ্য জানতে পারে আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়। এমনই তথ্য পেয়েছে সিবিআই।
তবে কার বা কাদের থেকে কীভাবে সঞ্জয় এই তথ্য পেল, তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, সঞ্জয়কে জেরা করে সিবিআই কিছু তথ্য পেয়েছে। তবে নির্যাতিতার চার সঙ্গী ডাক্তারের পলিগ্রাফ পরীক্ষা করিয়ে এই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চান সিবিআই আধিকারিকরা। এছাড়াও আরও কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী ও নার্সকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও এ ব্যাপারে তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
হাসপাতালের বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সিবিআই জেনেছে ঘটনার দিন রাতে হাসপাতালে গিয়েছিল ধৃত। এই তথ্যের ভিত্তিতেই তদন্ত করতে গিয়ে সিবিআই আধিকারিকরা জেনেছেন যে, আর জি কর হাসপাতালের চারতলায় মেরামতির কাজ চলছে। সেই কারণেই ভেঙে ফেলা হয়েছে বেশ কিছু ঘর। যে সেমিনার হলে তরুণী চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ, তার অদূরে একটি বাথরুম মেরামতির কাজ চলছে। এ ছাড়াও একটি ঘরও ভাঙা হচ্ছে। সেখানেই চিকিৎসকদের জন্য একটি ঘর ও সংলগ্ন বাথরুমও তৈরি হচ্ছে। মূলত সেই কারণেই চিকিৎসকদের আলাদা বিশ্রাম নেওয়ার কোনও ভালো জায়গা নেই।
[আরও পড়ুন: সাম্রাজ্যবাদ বিরোধিতা ভুলে এবার ইস্যু আর জি কর, লাগাতার আন্দোলনে সিপিএম]
অন্য একটি ছোট জায়গা থাকলেও সেমিনার হলে চিকিৎসকরা যে বিশ্রাম নিতেন, সেই তথ্য সঞ্জয়ের কাছে ছিল। সন্ধ্যা থেকে রাতের সিসিটিভির ফুটেজ দেখে সিবিআই নিশ্চিত হয় যে, রাতে তিনতলা ও চারতলায় ঘিরে কয়েকজন চিকিৎসক অথবা নিরাপত্তারক্ষী, নার্সদের কাছ থেকে সঞ্জয় খবর নেয় যে, নির্যাতিতা রাতে ডিউটিতে আছেন। তাঁর সঙ্গে যে সহ-চিকিৎসকরা ছিলেন, তাঁরা কেউই মহিলা নন। রাতের ডিউটিতে নির্যাতিতা ছিলেন একাই মহিলা।
সিবিআইয়ের মতে, এই তথ্য জানতে পারার পর অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় তাঁকে ডিউটিরত অবস্থায় দেখেও আসে। যদিও ধৃত সিবিআইয়ের কাছে দাবি করেছে, তার সঙ্গে ওই তরুণী চিকিৎসকের পরিচয় ছিল না। সেই ক্ষেত্রে রোস্টার দেখে কে তাকে খবর দিল, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে সিবিআই। এমনকী, সিবিআইয়ের সূত্র জানিয়েছে, এই তালিকায় রয়েছেন আর জি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষও।
যেহেতু সঞ্জয়ের সঙ্গে সন্দীপের ভালো সম্পর্ক ছিল, তাঁর কাছ থেকেই এই তথ্য সঞ্জয় জানতে পারে কি না, সিবিআই তা জানার চেষ্টা করছে। আবার ৮ আগস্ট রাতে যে চার সহ-চিকিৎসকের সঙ্গে সঞ্জয় ডিনার করেছিলেন, তাঁদের কারও সঙ্গে সঞ্জয়ের কোনওভাবে ঘনিষ্ঠতা ছিল কি না, সেই তথ্যও সিবিআই জানার চেষ্টা করছে। কারণ, তাঁদের কারও কাছ থেকেও ওই নির্যাতিতার ব্যাপারে কোনও তথ্য সঞ্জয় পেয়েছিল কি না, সেই দিকও খতিয়ে দেখছে সিবিআই। সন্দীপ ঘোষ ও চার চিকিৎসকের পলিগ্রাফ পরীক্ষা করানোর পর এই ব্যাপারে কিছু তথ্য মিলতে পারে বলে জানিয়েছে সিবিআই।