আকাশ মিশ্র: উপন্যাস বা ছোট গল্প থেকে সিনেমা তৈরি করাটা প্রথম থেকেই একটা চ্যালেঞ্জ। কারণ, বইয়ের পাতার শব্দগুলো পাঠকের মনের ভিতর যে ছবি তৈরি করে তা সিনেমার পর্দায় নিয়ে আসা বেশ কঠিন। অন্তত, তার ৪০ শতাংশ এক হলেও, ছবিটি হেসে খেলে উতরে যায়। ঠিক এরকমই চ্যালেঞ্জ নিয়ে পরিচালক রাহত কাজমি তৈরি করেছেন লিহাফ ছবিটি। উর্দু সাহিত্যিক ইশমত চুঘতাইয়ের ‘লিহাফ’ (Lihaaf)গল্প থেকেই অনুপ্রাণিত হয়েছে এই ছবি। চুঘতায়িয়ের এই ছোটগল্পটি ১৯৪২ সালে নিষিদ্ধ বলেও ঘোষণা হয়েছিল। নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ, গল্পের বিষয়। নারীর যৌনতাকে বিশেষ করে সমকামীতা নিয়ে চুঘতাইয়ের খোলামেলা লেখার কারণেই সে সময় বিতর্ক উঠেছিল লিহাফ নিয়ে। এই গল্পের জন্য আদালতে হাজিরা দিতে হয়েছিল ইশমতকে। লিহাফ ইশমতের লেখা অনবদ্য একটি ছোটগল্প। তবে এই গল্প নিয়ে সিনেমা বানাতে গিয়েই গন্ডগোল করে ফেললেন পরিচালক রাহত কাজমি।
পরিচালক গল্পকে সাজালেন দু’ভাবে। একদিকে চলল, লিহাফ নিয়ে ইশমতের কোর্ট ড্রামা। আরেক দিকে পরিচালক লিহাফের গল্প বলে চললেন। উপস্থাপনায় নতুনত্ব এনে অবশ্যই চমক দিয়েছে পরিচালক রাহত। তবে এই অন্যরকম উপস্থাপনা করতে গিয়েই গোটা ছবির যেন তাল কাটল। দুই গল্পের মধ্যে খুব একটা যোগসূত্র রাখতে পারলেন না পরিচালক। তাই ছবি এগোতে থাকে, ছবির টানটান ভাবটা হারিয়ে ফেলে।
[আরও পড়ুন: Natkhat Review: দুষ্টুমির আড়ালে অস্বস্তিকর কথাগুলো কি বলে দিলেন বিদ্যা বালান?]
এই ছবির সবচেয়ে বড় সমস্যা হল দুর্বল চিত্রনাট্য। ইশমতের গল্প থেকে পরিচালক কয়েকটা ঘটনাপ্রবাহই শুধু নিলেন। যার ফলে পুরো গল্পটার আসল দিকটা স্পটলাইট থেকে বেরিয়ে গেল। হঠাৎ করেই যেন একের পর এক ঘটনা ঘটতে থাকল ছবির পর্দায়। কেন হচ্ছে, তার নেপথ্যে কি সবই অধরা রেখে দিলেন পরিচালক।
অভিনয়ের দিক থেকে ইশমতের চরিত্রে তনিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায় (Tannishtha chatterjee) বেশ ভাল। তবে ইশমতের তরুণী বয়সের চরিত্রে নজর কাড়েন অনুষ্কা সেন (Anushka Sen)। বেগম জানের চরিত্রে মানিয়ে যায় অভিনেত্রী সোনাল শেহগলকে (Sonal sehgal)। তবে এত ভাল অভিনেত্রীদের নিয়ে খুব একটা কিছু করতে পারলেন না পরিচালক। অভিনেতাদের পোশাকের যতটা মন দিয়েছেন পরিচালক, ততটা মন যদি চিত্রনাট্যে দিতেন তাহলে ‘লিহাফ’ কিছুটা হলেও ভাল ছবির তকমা পেত।