দেবাশিস সেন, নিউ ইয়র্ক: নিউ ইয়র্কের নাসাও কাউন্টি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম বর্তমানে রীতিমতো দুর্গ বিশেষ! একখানা মশা বা মাছিও সে অঞ্চল দিয়ে নিশ্চিন্তে গলবে, তার উপায় নেই। পাঁচশো মিটার পরপর একটা করে এনওয়াইপিডির পুলিশ ভ্যান। মাঠের সমস্ত ‘এন্ট্রি পয়েন্ট’-এ কড়া ‘চেকিং’। স্নাইপার। হেলিকপ্টার। কম্যান্ডো। কে নেই? কারা নেই? দেখলে সময়-সময় মনে হবে, বিশ্বকাপ কভার করতেই মার্কিন মুলুকে এসেছি তো? নাকি যুদ্ধ-বিগ্রহ কভার করতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে?
এ যে সাক্ষাৎ ‘ওয়ার জোন’!
আসলে আগামী ৯ জুন ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে জঙ্গি হানার আশঙ্কা রয়েছে যেহেতু, তাই নিরাপত্তার সঙ্গে সামান্যতমও আপস করা হচ্ছে না প্রশাসনের পক্ষ থেকে। নাসাও কাউন্টির মাঠেই ভারত গ্রুপ পর্বের সমস্ত ম্যাচ খেলবে। পাকিস্তান যুদ্ধও এ মাঠে। তাই নিরাপত্তার এমন বজ্রআঁটুনি। সব মিলিয়ে কেমন যেন একটা শনশনে আবহ বিশ্বকাপের মঞ্চ জুড়ে। যেখানে ক্রিকেট ব্যাটের আওয়াজ কম, বেয়ানেটের আওয়াজ বেশি!
[আরও পড়ুন: কার্লসেন, কারুয়ানার পর ফের কিস্তিমাত, নরওয়েতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ডিংকে হারালেন প্রজ্ঞানন্দ]
সোমবার নাসাও কাউন্টির মাঠ থেকে সাত কিলোমিটার দূরের ক্যান্টিয়াগ পার্কের মাঠে পূর্ণ প্র্যাকটিস সেশনে নেমে পড়লেন রোহিত শর্মারা। টিম প্র্যাকটিসে নামার পূর্বে দেখা গেল, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে নিরাপত্তার ভারপ্রাপ্ত প্রধান যিনি, সেই ব্রুস ব্লেকম্যানকে ভারতীয় কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের (Rahul Dravid) সঙ্গে একপ্রস্থ আড্ডা দিতে। মার্কিন ভদ্রলোক দ্রাবিড়কে বলছিলেন যে, আমেরিকা বেসবলের দেশ। কিন্তু তাঁরাও ধীরে ধীরে ক্রিকেট নামক খেলাটা বোঝার চেষ্টা করছেন! তখনও বোঝা যায়নি, আড্ডা শেষে দ্রাবিড় নিজেই শোরগোল ফেলে চলে যাবেন! দ্রাবিড় তো সাংবাদিক সম্মেলনে এসে বলে দিলেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর তিনি আর ভারতীয় দলের কোচ থাকবেন না!
দেখতে গেলে, এ দিন আকর্ষণের মূল কেন্দ্রবিন্দু হওয়ার কথা ছিল বিরাট কোহলির। দীর্ঘক্ষণ ধরে প্র্যাকটিস করলেন যিনি। কিছু পরে রোহিত শর্মা, সূর্যকুমার যাদব, ঋষভ পন্থদের নেটে যেতে দেখা গেল। হার্দিক পাণ্ডিয়াকে দিয়ে অনেকক্ষণ টানা বোলিং করানো হল। আগামী ৫ জুন আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করছে ভারত। দ্রাবিড় বলছিলেন, ‘‘টিমের প্রথম দশ কারা হতে পারে, এখনই বলে দিতে পারি। একজন শুধু চূড়ান্ত করা বাকি।’’ কিন্তু তার পর যেটা বললেন, তা প্রত্যাশিত হয়েও অপ্রত্যাশিত!
[আরও পড়ুন: গড়াপেটার শাস্তি শুধু আর্থিক জরিমানা! টালিগঞ্জ-উয়াড়িকে ‘মুক্তি’ দেওয়ার পথে আইএফএ]
এটা সর্বজনবিদিত যে, দ্রাবিড় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আর কোচ থাকবেন না। নতুন করে তিনি কোচের পদে তিনি আবেদনও করেননি। এ দিন ভারতীয় ক্রিকেটের ‘দ্য ওয়াল’ তাতে সিলমোহর দিয়ে গেলেন। দ্রাবিড় বলছিলেন, ‘‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপই কোচ হিসেবে আমার শেষ অ্যাসাইনমেন্ট। দুর্ভাগ্যজনক হলেও নতুন করে আবেদন করা আমার পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না।’’
এরপর শিরোনাম তিনি ছাড়া আর কে হবেন?