সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'মহাভারতে ঠিক যেভাবে অভিমন্যুকে চক্রব্যুহে বন্দি করে ৬ জন মিলে হত্যা করেছিল। ঠিক সেভাবে গোটা ভারতকে চক্রব্যুহে বন্দি করেছে বিজেপি সরকার।' সংসদে বাজেট অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপি জমানায় তেমনই দেশের ৬ চক্রব্যুহের কথা তুলে ধরলেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। তাঁর অভিযোগ, মোদি জমানায় মন্ত্রী থেকে শুরু করে কৃষক, ভোটার, বেকার সকলে ভীত।
সংসদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাহুল গান্ধী বলেন, "হাজার বছর আগে হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রে অভিমন্যু নামে এক যুবককে চক্রব্যুহে বন্দি করে হত্যা করেছিল ৬ জন। আমি সেই চক্রব্যুহ নিয়ে কিছুটা পড়াশুনা করি। এবং জানতে পারি এই চক্রব্যুহের অন্য নাম হল হল পদ্ম ব্যুহ। পদ্মফুলের মতো আকার হওয়ায় এমন বলা হত। কিন্তু এই একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে এক নতুন চক্রব্যুহ তৈরি করা হয়েছে। এটাও পদ্মের আকারের। এবং প্রধানমন্ত্রী তা নিজের বুকে সেঁটে ঘুরে বেড়ান। এই চক্রব্যুহ ব্যবহার করা হচ্ছে দেশের কৃষকদের বিরুদ্ধে মাঝারি ব্যবসায়ী, অগ্নিবীর, পড়ুয়া, বেকার যুবকদের বিরুদ্ধে। আজও এই চক্রব্যুহে দ্রোণাচার্য, কর্ণ, কৃতবর্মা, শকুনি, কৃপাচার্য, অশ্বত্থমার মতো ৬ জন রয়েছে। বর্তমানে এই চরিত্রগুলি হল নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, মোহন ভাগবত, অজিত ডোভাল, আম্বানি ও আদানি।"
[আরও পড়ুন: ৩ পড়ুয়ার মৃত্যুতে ‘বুলডোজার অ্যাকশন’ দিল্লিতে, গুঁড়িয়ে দেওয়া হল অবৈধ নির্মাণ]
কেন্দ্রীয় বাজেটকে দিশাহীন বলে তোপ দেগে রাহুল বলেন, "করোনার সময় দেশের ছোট ও মাঝারি ব্যবসাকে পুরোপুরি শেষ করে দেওয়া হয়েছে। যার জেরে দেশে ভয়ংকরভাবে বেড়েছে বেকারত্ব। অর্থমন্ত্রী এখানে বসে আছেন। দেশের বেকার সময়া মেটাতে তিনি কী করেছেন? বাজেটে আপনি ইন্টার্নশিপ উল্লেখ করেছেন, যা নিছক রসিকতা ছাড়া আর কী। প্রথমে পা ভেঙে, এখন ব্যান্ডেজ লাগানোর চেষ্টা চলছে।" রাহুল আরও বলেন, "আজ প্রশ্ন ফাঁস দেশের পড়ুয়াদের জন্য এক বড় সমস্যা। যেখানেই যান, সেখানেই বেকারত্ব। একদিকে প্রশ্ন ফাঁসের চক্রব্যুহ অন্যদিকে বেকারত্বের চক্রব্যুহ । দশ বছরে ৭০ বার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। এবং এই প্রথমবার দেশের সেনাকে অগ্নিবীর নামের চক্রব্যূহের ফাঁদে ফেলা হয়েছে। এই বাজেটে অগ্নিবীরদের পেনশনের জন্য এক টাকাও বরাদ্দ হয়নি।"
[আরও পড়ুন: বিহারে ৬৫% সংরক্ষণ বাতিলের নির্দেশ বহাল, সুপ্রিম কোর্টেও জোর ধাক্কা নীতীশের]
একই সঙ্গে দেশে কর সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে রাহুল বলেন, "দেশে ছোট ও মাঝারি ব্যবসাকে লাটে তুলতে নোটবন্দি, জিএসটি ও কর সন্ত্রাস চালানো হচ্ছে। এটা আর এক চক্রব্যুহ। আপনাদের নীতি করোনা কালে বড় ব্যবসায়ীদের সাহায্য করতে গিয়ে ছোট ব্যবসা শেষ করা হয়েছে। ছোট-মাঝারি ব্যবসায়িদের উপর চলছে কর সন্ত্রাস। অথচ এটা বন্ধ করতে বাজেটে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি সরকার।" এছাড়া দেশের কৃষকদেরও চক্রব্যুহে বন্দি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন রাহুল।