shono
Advertisement

কলকাতায় ডাকাতির ছক JMB’র? লিংকম্যান রাহুলের কাছে এসে থেকেছিল বাংলাদেশের জঙ্গি

কলকাতায় তহবিল বাড়াতে ডাকাতদল তৈরির ছক কষেছিল জঙ্গি বলেই ধারণা গোয়েন্দাদের।
Posted: 11:01 AM Jul 17, 2021Updated: 11:01 AM Jul 17, 2021

অর্ণব আইচ ও অর্ণব দাস: দু’মাস আগে জঙ্গি লিংকম্যান রাহুল সেনের বাড়িতে আসে জামাত উল মুজাহিদিন (বাংলাদেশ) বা JMB-র ‘ডাকাত’ সর্দার আনোয়ার আলি ওরফে হৃদয়। টানা এক সপ্তাহ রাহুলের বাড়িতে থাকে হৃদয়। যাওয়ার সময় নিজের ল্যাপটপ ও আইপ্যাড রাহুলের বাড়িতে রেখে পালিয়ে যায় সে। এই তথ্য পাওয়ার পর হতবাক লালবাজারের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের (STF) গোয়েন্দারা। কারণ, জেএমবি যে বাংলাদেশে ডাকাতির মতো অপরাধ করে নিজেদের তহবিল বৃদ্ধি করছে, সেই খবর এসেছে গোয়েন্দাদের হাতে। ফলে কলকাতায় তহবিল বাড়াতে ডাকাতদল তৈরির ছক কষেছিল হৃদয় বলেই ধারণা গোয়েন্দাদের।

Advertisement

গোয়েন্দাদের সূত্র জানিয়েছে, সাধারণভাবে জেএমবি ‘ইয়ানত’ বা মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করে তহবিল বাড়ায়। কিন্তু ভারত ও বাংলাদেশে বিদেশি টাকা আসার ব্যাপারে কড়াকড়ি করা হচ্ছে। সেই কারণে বাংলাদেশে তহবিল বৃদ্ধির জন্য বিশেষভাবে চিহ্নিত কিছু গয়নার দোকান, ধনীদের বাড়ি ও ব্যাংকে ডাকাতির সিদ্ধান্ত নেয়। তারা ডাকাতি শুরু করে। বাংলাদেশে এই ডাকাতদলের পান্ডা ছিল আনোয়ার আলি ওরফে হৃদয়। তার দলে রয়েছে দুর্ধর্ষ ও বেপরোয়া ডাকাত হাফিজুল শেখ ওরফে সকাল, আবু সালে, সোহায়েল, তাঞ্জিলবাবু ও আরও কয়েকজন। লুঠপাটের টাকা তারা বাংলাদেশে কাশিমপুরের জেলে জেএমবি নেতা আল আমিনের হাতে পৌঁছে দিয়েছে। আবার সেই টাকা হাত ঘুরে হৃদয়ের মাধ্যমে এসে পৌঁছেছিল বারাসতে রাহুলের হাতে। দু’মাস আগে হৃদয় বারাসতে এসে রাহুলের বাড়িতে ওঠে।

[আরও পড়ুন: মোবাইল গেম নিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে বিবাদ, মুর্শিদাবাদে অভিমানে আত্মঘাতী কিশোরী]

রাহুল প্রতিবেশীদের কাছে তাকে আত্মীয় হৃদয় সেন বলে পরিচয় দেয়। গোয়েন্দাদের ধারণা, হৃদয় কলকাতার দক্ষিণ শহরতলির হরিদেবপুর অথবা অন্য কোনও জায়গায় গিয়ে দেখা করে কলকাতার লিংকম্যান সেলিম মুন্সির সঙ্গে। ওই একই সময় জেএমবির অন্য জঙ্গি মেকাইল খান ওরফে শেখ সাব্বিরও কলকাতায় আসে। হরিদেবপুরের একটি বাড়িতে তাকে ভাড়া থাকার ব্যবস্থা করে সেলিম। সে কলকাতায় বসেই সোশ্যাল মিডিয়ায় জেএমবির হয়ে প্রচার শুরু করে। গোয়েন্দাদের মতে, ওই সাতদিনের মধ্যে হৃদয় তিন লিংকম্যান সেলিম মুন্সি, রাহুল সেন ও মহম্মদ শাকিলের সঙ্গে কলকাতায় (Kolkata) ডাকাতদল বানানোর জন্যই ছক কষে। সম্ভবত হৃদয়ের সঙ্গে সকাল বা আবু সালের মতো ডাকাত জঙ্গিরাও কলকাতায় মাস দুই আগে এসেছিল।

যেহেতু এর আগে জেএমবি কখনও কলকাতা বা তার আশপাশের কোনও অঞ্চলে ডাকাতি করেনি, তাই তারা ডাকাতি করে বেশি টাকা নিয়ে বাংলাদেশে পালালেও প্রথমে কলকাতা পুলিশ বা জেলা পুলিশের ধারণা হবে না যে, জঙ্গিরা এই ডাকাতি করেছে। যখন পুলিশ তা বুঝতে পারবে, ততদিনে তারা উধাও। এই ডাকাতি পরিচালনা করার কারণে নাজিউর রহমান পাভেল ও তার সঙ্গী রবিউল ইসলামকে বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় জেএমবি নেতারা পাঠিয়েছিল কি না, তা জানতে নাজিউর, রাহুলদের জেরা করা হচ্ছে। রাহুলের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া হৃদয়ের ল্যাপটপ ও আইপ্যাড ঘেঁটে তার পরিকল্পনাগুলি গোয়েন্দারা জানার চেষ্টা করছেন। তবে সেলিম, হৃদয়রা ধরা পড়লে এই ব্যাপারে আরও তথ্য মিলবে। জেএমবির এই ডাকাতির ছকের পর আরও সতর্ক হয়েছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। এদিকে, রাহুল মধ্য প্রাচ্যে শ্রমিক পাঠানোর নাম করে বেশ কয়েকজন জঙ্গিকেও পাচার করেছে বলে অভিযোগ। সেই তথ্য জানতে ধৃত জঙ্গিদের জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

[আরও পড়ুন: গুরুতর অসুস্থ সাধন পাণ্ডে, ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে ভরতি হাসপাতালে]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement