সুব্রত বিশ্বাস: রেল হাসপাতালগুলির শতবর্ষের রেওয়াজ বদলে দিল করোনা। পরিস্থিতির চাপে হাসপাতালে ঢুকে পড়ল অক্সিজেনের সেন্ট্রাল সাপ্লাই সিস্টেম। রোগীর বেডেই অক্সিজেনের পাইপ লাইন যুক্ত হচ্ছে। কলকাতা মেট্রো রেল ও আসানসোল ডিভিশনাল রেল হাসপাতালে এই প্রক্রিয়ায় রোগীকে অক্সিজেন দেওয়া শুরু হয়েছে।
[আরও পড়ুন: বিশ্বভারতীর পাঁচিলকাণ্ডের নেপথ্যে টেন্ডার জট, তদন্তের পর দাবি ED আধিকারিকদের]
পূর্ব রেলের অন্য হাসপাতালগুলিতে এই প্রক্রিয়া চালু করার জন্য দ্রুত কাজ শুরু হয়েছে। হাওড়া অর্থোপেডিক, লিলুয়া, কাঁচড়াপাড়া, মালদহ রেল হাসপাতাল কিছু দিনের মধ্যেই এই পরিষেবা শুরু হয়ে যাবে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। হাওড়া অর্থোপেডিক, লিলুয়া হাসপাতালে পঞ্চাশটি বেড়ে এই সুবিধা যুক্ত হবে। অন্য হাসপাতালগুলিতে কুড়িটি বেড়ে লাইন থাকবে। মূলত আইসিইউ, আইটিইউ, এসএনসিইউ ও অপারেশন থিয়েটারের এই লাইনের সংযোগ থাকবে। সঙ্গে থাকবে নাইট্রাস অক্সাইড লাইনও।
জরুরী ভিত্তিতে এই অক্সিজেন লাইনের সংযোগ করোনা পরিস্থিতির চাপেই বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। পঞ্চাশটি লাইনের সংযোগকারী সিস্টেমের খরচ ন'লক্ষ টাকার মতো। এই সামান্য খরচ হলেও রেল শতাব্দী ও অর্ধ শতকের বেশি সময় এই পথে হাঁটেনি। চিকিৎসকদের কথায়, বর্তমান পরিস্থিতি বাধ্য করেছে এই সিস্টেম চালুতে। মেট্রো রেলের হাসপাতালের চিকিৎসকের কথায়, চিকিৎসা বাদেও শুধু অক্সিজেনের দৌলতে এই হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল পাঁচ রোগীকে সুস্থ করা গিয়েছে।
১৯০০ সালে তৈরি কাঁচড়াপাড়া রেল হাসপাতাল। লিলুয়া হাসপাতালের জন্ম ১৯৪৮ সালে। অর্থোপেডিক হাসপাতাল ১৯৫০ সালে, আসানসোল হাসপাতাল ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠা হয়। এতকাল হাসপাতালগুলিতে অক্সিজেন সিলিন্ডারে রাখা হতো। এখন সম্ভব হচ্ছে না। চিকিৎসকদের কথায়, ফেস মাস্ক দিয়ে প্রতি মিনিটে দশ লিটার অক্সিজেন দেওয়া যায়। রিব্রিদিবল দিয়ে মিনিটে পনেরো লিটার অক্সিজেন দেওয়া যায়। এইচএফএনও দিয়ে ষাট লিটার দেওয়া যায়। সিলিন্ডার শেষ হওয়া ও পরিবর্তনে সময় প্রভৃতি ঝামেলা এখন বিপত্তি বাড়াতে পারে। ভেন্টিলিটারে থাকা রোগীদের প্রচুর অক্সিজেন যোগান দিতে হয়। যা একমাত্র এই সিস্টেমে সম্ভব। তাই পদ্ধতিগত বদল না আনলে ক্ষতির সম্ভাবনা থেকে যায়। যা এড়াতে রেল হাসপাতালগুলিতে চালু হচ্ছে অক্সিজেনের সেন্ট্রাল লাইন। এই পরিবর্তন আগামী দিনে করোনার মতো অতিমারী চলে গেলেও হাসপাতালগুলোর প্রয়োজনে লাগবে। তবে স্মরণে থাকবে যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছিল করোনার হাত ধরেই বলে রেলের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তাদের মত।