সুব্রত বিশ্বাস: ‘ডিপি’। এই দুই অক্ষর এখন রেলযাত্রীদের কাছে চরম আতঙ্কের। ট্রেনের সিটের উপর রং দিয়ে এই দু’টি অক্ষর লেখা থাকলে সেই সিটগুলিতে বসতে পারবেন না বৈধ যাত্রী। ওই অক্ষরই জানিয়ে দেবে সিটটি ‘ডেলি প্যাসেঞ্জার–এর দখলে। বৈধতা নিয়ে বসলেও উঠিয়ে দেওয়া হবে জোর করে। এটাই রেওয়াজ। শুধু ‘ডিপি’ লেখা সিটই নয়, সংঘবদ্ধতার জোরে দখল নেওয়া হয় অন্য সিটও। নিত্যযাত্রীদের এই অত্যাচারে রীতিমতো তটস্থ যাত্রীরা। বর্ধমানের বাসিন্দা তরুণ চক্রবর্তী দিনকয়েক আগে স্ত্রীকে নিয়ে ময়ূরাক্ষী এক্সপ্রেসে চড়ে চরম হেনস্তার শিকার হন। বাদ যাননি তাঁর স্ত্রীও। তরুণবাবুর কথায়, “দেশলাইয়ের খোল, কাঠি দিয়ে সিটের দখল। হাওড়া থেকে দখল নেওয়া হয়, লিলুয়ায় সহযাত্রীরা উঠবেন বলে আগে থেকে সিট দখল। বৈধ যাত্রীরা বসতে পারবেন না। এমনকী মহিলারও।”
[আরও পড়ুন : কেন্দ্রের ডাকা এনপিআর সংক্রান্ত বৈঠকে যাচ্ছেন না, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর]
নিত্যযাত্রীদের এই অত্যাচারে হাওড়ায় শুরু হল ‘অপারেশন সিট কর্নারিং’। মঙ্গলবার স্টিল ও পুরুলিয়া এক্সপ্রেসে এই সিট দখলের অভিযোগে সাত নিত্যযাত্রীকে গ্রেপ্তার করে আরপিএফ। বুধবার গ্রেপ্তার করা হয় ছ’জনকে। আরপিএফ কর্তাদের কথায়, চরম বেআইনি এই কাজে যুক্ত থাকেন নিত্যযাত্রীরা। সিটে বসে থাকা যাত্রীদেরও তুলে দেন। প্রয়োজনে গায়ে হাত দিতেও কসুর করেন না। বারবার এ নিয়ে অভিযোগ উঠছিল। হাওড়ায় যাতায়াতকারী স্বল্প দূরত্বের মেল–এক্সপ্রেসে এই অত্যাচার সীমাহীন বলে জানিয়েছে আরপিএফ। বিশ্বভারতী এক্সপ্রেস, ব্ল্যাক ডায়মন্ড এক্সপ্রেস, কোলফিল্ড এক্সপ্রেস, ময়ূরাক্ষী ফাস্ট প্যাসেঞ্জার, স্টিল এক্সপ্রেস, পুরুলিয়া এক্সপ্রেস ইত্যাদি। সকালে ডাউনে আসা ও বিকেলে আপে যাওয়া স্বল্প দূরত্বের ট্রেনগুলিতে এই অত্যাচার বেশি। এই ধরনের অত্যাচারী যাত্রীদের শায়েস্তা করতে গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত বলে আরপিএফ জানিয়েছে। এতে সচেতন হবেন অন্য নিত্যযাত্রীরা। রেলের আইনে ১৫৫ ধারায় আদালত এদের জরিমানা করে জামিন দেয়। ধৃতদের মধে্য চাকরিজীবী যেমন রয়েছেন, রয়েছেন ব্যবসায়ী থেকে ছাত্রও। এদের ‘সবক’ শেখাতে রেলের এই ধরপাকড়কে সাধুবাদ জানিয়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
The post ট্রেনে সিট জবরদখল রুখতে কড়া রেল, চলছে ধরপাকড় appeared first on Sangbad Pratidin.