সুব্রত বিশ্বাস: পুজো একেবারে দোরগোড়ায়। এই সময় রোজগারের আসায় মানুষ মরিয়া। যে কোনও প্রকারে গ্রাম থেকে শহরমুখী হওয়ার চেষ্টা চলছে। উপায় নেই, সড়ক পথে যাত্রা সময়ের সঙ্গে খরচ অনেক বেশি। বিশেষত দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনার মানুষজনের অসুবিধা সবচেয়ে বেশি। হতদরিদ্র মানুষগুলির মূল ভরসা ট্রেন। এদিকে সাড়ে ছ’মাসের উপর বন্ধ লোকাল ট্রেন। এখন রেলকর্মীদের যাতায়াতের জন্য বেশ কিছু ট্রেন চলছে। যে ট্রেনে বাধ্য হয়ে উঠে পড়ছেন অ-রেল কর্মীরা। ভিড় বাড়ছে ট্রেনগুলিতে। এই অবস্থায় রেলকর্মীরা অসন্তোষ প্রকাশের পাশাপাশি সংক্রমণের আশঙ্কা করে রেলকে আবেদন করছেন, যাতে সাধারণ যাত্রীরা ট্রেনে না উঠতে পারেন। যার ফলে ট্রেনে আরপিএফ ও টিকিট পরীক্ষকদের চেকিং বাড়ানো হয়েছে শিয়ালদহে। চেকিং বাড়তেই ফল হল উলটো। বৃহস্পতিবার সকালে সোনারপুর স্টেশনে ঘটে গেল ধুন্ধুমার কাণ্ড।
মন্দিরতলা থেকে বহু এমন সাধারণ মানুষ বিশেষ ট্রেনটিতে চড়ে ছিলেন। টিটিই, আরপিএফ সোনারপুর স্টেশনে তাঁদের নামানোর চেষ্টা করে, তখনই ঘটে বিপত্তি। সোনারপুর স্টেশনে বহু সাধারণ মানুষ ট্রেনটিতে ওঠার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন। বাধা পান তাঁরাও। এরপর ট্রেনে আসা ও চড়তে উদ্যোগীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। ট্রেনটিতে পাথর ছোঁড়েন বলে অভিযোগ। রেল লাইন অবরোধ করে। প্রায় পনেরো মিনিট অবরোধের পর ট্রেনটি ফের যাত্রা শুরু করে। অবরোধকারীদের অভিযোগ, কর্মস্থলে যেতে বিকল্প কিছু নেই। অধিকাংশ অতি সাধারণ পেশায় যুক্ত। ফলে ট্রেন ভরসা। ট্রেন চালু করতে হবে।
[আরও পড়ুন: মণীশ খুনের ছক কষা হয়েছিল মাস তিনেক আগে! চাঞ্চল্যকর তথ্য CID’র হাতে]
শিয়ালদহের ডিআরএম এসপি সিং বলেন, “রেলকর্মীদের কাজে আসতে হবে। এজন্য কিছু বিশেষ ট্রেন চলছে। তবে তা শুধু রেলকর্মীদের জন্য। এই ট্রেনে সাধারণ মানুষ চড়ছেন। রেলকর্মীরা সংক্রমণের আশঙ্কা করে বারবার অভিযোগ করেছেন। সংক্রমণ বাড়লে রেল চলাচল ব্যাহত হবে। এই আশঙ্কায় রেল কড়া পদক্ষেপ করে। আরপিএফ ও টিটিই বাড়ানো হয়। এতেই ঘটে বিপত্তি। ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে মানুষজন। করোনা পরিস্থিতিতে এই প্রথম রেল অবরোধ। এই প্রক্রিয়ায় সংক্রমণের মতো ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে রেল।” ডিআরএম বলেন, ট্রেনগুলির নিরাপত্তায় বাড়ানো হবে আরপিএফ ও টিটিই।
পুজোর আগে লোকাল ট্রেন চলার স্থির সিদ্ধান্ত দিতে পারেনি রেল। রাজ্যের মূল ভূমিকা রয়েছে ছাড়পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে। ডিআরএম এসপি সিং বলেন, “ট্রেন চালানোর বিষয়ে রাজ্য শুধুমাত্র মেট্রোর সঙ্গে বৈঠকে বসেছে। পরে তা চালু হয়েছে। পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব রেলকে বৈঠকে না ডাকায় লোকাল ট্রেনের বিষয়টি ঝুলে রয়েছে। রেল বৈঠকের জন্য প্রস্তুত হয়ে রয়েছে। রাজ্য বসলেই স্থির সিদ্ধান্তে আসা যাবে।”