সুব্রত বিশ্বাস: ট্রেনে মাদক পাচারের রমরমা কারবার। তাতে রাশ টানতে নির্বাচনের আগেই আরপিএফকে বিশেষ নারকোটিক আইনের ক্ষমতা দিল কেন্দ্রীয় রাজস্ব বিভাগ। ১১ এপ্রিল দ্য নারকোটিক ড্রাগস সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্স অ্যাক্ট ১৯৮৫-এর ৪২ ধারা ও ৬৭ ধারা কার্যকর করার ক্ষমতা দেওয়া হয় তাদের। এর ফলে আটক মাদক বাজেয়াপ্ত, তদন্ত ও গ্রেপ্তারের ক্ষমতা এবার আরপিএফের হাতে এল।
[আরও পড়ুন-ফেসবুকে বন্ধুত্বের ফাঁদ পেতে যুবতীকে অপহরণ ও ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ২ অভিযুক্ত]
যাত্রীবাহী ট্রেনের কামরা ও পার্সেল ভ্যানে ভুয়ো নামে নানা জাতীয় মাদক পাচার হয়। হাওড়া থেকে বাঘ এক্সপ্রেস, অমৃতসর মেল, দানাপুর এক্সপ্রেস, জামালপুর এক্সপ্রেস প্রভৃতি ট্রেনে মদ দেদার হারে পাচার হয় বলে অভিযোগ উঠেছে বারবার। অনেকবার মালদহ থেকে ট্রেনে তোলা আফিম যেমন ধরা পড়েছে তেমনই শিয়ালদহ স্টেশনে উত্তরবঙ্গ থেকে আসা ট্রেনগুলি থেকে আটক হয়েছে গাঁজা। আরপিএফ এই মাদক আটক করলেও নারকোটিক শাখার হাতে তা তুলে দিতে হয়। তদন্তের কোনও ক্ষমতা না থাকায় আটক মাদক বহু সময় নয়ছয় হয়ে যায় বলে জানাও গিয়েছে।
[আরও পড়ুন-সোনমার্গে পড়ছে বরফ, পুলওয়ামার আতঙ্কে কাটিয়ে বাড়ছে পর্যটকের সংখ্যা]
এতদিন ট্রেনে মাদক পাচার আর সেবন রমরমিয়ে চললেও অপরাধীকে গ্রেপ্তার করার বা মাদক বাজেয়াপ্ত করার কোনও ক্ষমতা ছিল না আরপিএফ-র হাতে। এই ক্ষমতা ছিল জিআরপির হাতে। ট্রেনে যাত্রী সুরক্ষা ও অপরাধের তদন্তের দায়িত্ব কেন্দ্র ও রাজ্যের দুই বাহিনীর হাতে থাকলেও অপরাধের তদন্ত আর মামলা দায়ের করে জিআরপি। আর রেল সম্পত্তি চুরি হলে তার মামলা করে আরপিএফ। দুই বাহিনীর কার্যপদ্ধতি আলাদা হওয়ায় নানা বিষয়ে মতবিরোধ থেকে পারস্পারিক দ্বন্দ্ব থেকে যায়। বিশেষত যাত্রীবাহী ট্রেনে মাদক পাচারের ক্ষেত্রে। আরপিএফের মাদক আটক, ওই মামলায় গ্রেপ্তারের ক্ষমতা না থাকায় তারা এই ধরনের অপরাধ দমনে মাথা ঘামাতো না। বরং পাচারকারীদের সঙ্গে গোপন সমঝোতা গড়ে তুলত বহু ক্ষেত্রে। এই সমস্যা এড়াতে আরপিএফকে এই বিশেষ নারকোটিক ক্ষমতা দেওয়ার দাবি উঠেছিল বহুবার। যা এতদিনে কার্যকর হল।
[আরও পড়ুন-সুপ্রিম কোর্টে ‘ক্ষমা চাওয়া’র পর ফের ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ লিখে টুইট রাহুলের]
লোকসভা নির্বাচনের মধ্যেই এই আইনি ক্ষমতা পাওয়ায় খুশি আরপিএফ কর্মীরা। তাঁদের কথায়, অপরাধীকে মাদক-সহ ধরা হলেও অন্য এজেন্সির উপর নির্ভর করা হত আইনি পদক্ষেপের জন্য। এজন্য পরোমুখাপেক্ষী থাকা জরুরি ছিল। যা এখন হবে না। তবে এক শ্রেণির আরপিএফ যে এই ক্ষমতার অপব্যবহার করে বেআইনি কাজকর্ম করবে তেমন আশঙ্কাও উড়িয়ে দেননি তাঁরা। রাতে বিহারগামী ট্রেনে এখনও দেদার মদ পাচার হয় এবং এই পাচারের সঙ্গে এক শ্রেণির আরপিএফ কর্মী সরাসরি যুক্ত বলে অভিযোগ উঠেছে। আর এই কথা আরপিএফ কর্তাদের অজানা নয় বলেও জানা গিয়েছে।
The post ট্রেনে মাদক পাচার ও সেবন রুখতে আরপিএফকে বিশেষ ক্ষমতা কেন্দ্রের appeared first on Sangbad Pratidin.