সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ডোমজুড়ে রেলকর্মীর রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় প্রকাশ্যে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। শুধুমাত্র বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক বা আত্মীয়র নাবালিকা কন্যার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক নয়, নিজের মেয়ের সঙ্গে নাকি যৌনতায় লিপ্ত হয়ে চেয়েছিল রেলকর্মী সুরজ সাউ। স্বামীর একের পর এক ব্যভিচার মানতে পারেনি স্ত্রী। তাই নাকি সুরজকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল স্ত্রী রাজেশ্বরী সাউ। তদন্তে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। যদিও সরকারিভাবে এসম্পর্কে পুলিশের তরফে কিছু জানানো হয়নি।
পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সুরজ অভিযুক্ত রাজেশ্বরীর দ্বিতীয় স্বামী। তাঁদের ১১ বছরের মেয়েও আছে। সেই মেয়ের সঙ্গেই নাকি যৌনতায় লিপ্ত হতে চেয়েছিলেন সুরজ। এনিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তুমুল অশান্তি হয়। মেয়েকে নিয়ে বাপেরবাড়ি বিশাখাপত্তনমে চলে যান রাজেশ্বরী। এর আগেই আত্মীয়ের নাবালিকা সন্তানের সঙ্গেও শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করেছিল সুরজ। সূত্রের খবর, অন্ত্বঃসত্তাও হয়ে পড়েছিল সে। এনিয়ে দুজনের মধ্যেই আগে অশান্তি চলছিল। একের পর এক এধরনের বিষয় সামনে আসতেই তলানিতে ঠেকেছিল সুরজ-রাজেশ্বরীর সম্পর্ক। এরপরই খুনের ছক কষে বলে পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে। যদিও পুলিশ সরকারিভাবে কোনও কথাই স্বীকার করেনি। এমনকী, সন্তানের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক তৈরির জল্পনাও উড়িয়ে দিয়েছে তারা।
[আরও পড়ুন: ‘ভারতে মুসলিমরাই সবচেয়ে বেশি কন্ডোম ব্যবহার করে’, ভাগবতকে তোপ ওয়েইসির]
উল্লেখ্য, দশমীর রাতে হাওড়ার ১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া ডোমজুড়ের পীরডাঙায় একটি অন্ধকার রাস্তার ঝোপের ধার থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় মুন্ডহীন দেহ উদ্ধার হয়েছিল সাঁতরাগাছির এক রেলকর্মীর। সুরজ সাউ (৪২) নামে ওই রেলকর্মীর মুন্ডুটি শনিবার দুপুরে হাওড়ারই নিবড়া থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। দশমীর রাতে দেহটি উদ্ধারের পরই এই নৃশংস খুনের পিছনে কারা তার তদন্তে নেমেছিল ডোমজুড় ও জগাছা থানার পুলিশ। টানা তিনদিন তদন্তের পর পুলিশ জানতে পারে, রেলকর্মীর স্ত্রী রাজেশ্বরী সাউই পরিকল্পনা করে তার স্বামীকে খুন করেছে। তার স্বামীকে খুন করার জন্য সে কাজে লাগায় তার দিদির ছেলে গুড্ডু রাও শেখর ও রেলকর্মীর নিজস্ব বাসের রক্ষনাবেক্ষনকারী এক কর্মী শেখ আফরোজ ওরফে মিঠুনকে। তিনজনকেই শনিবার বিকেলে গ্রেপ্তার করে জগাছা থানার পুলিশ।
পুলিশের জেরায় গুড্ডু রাও শেখর স্বীকার করে সে-ই ধারালো অস্ত্র দিয়ে সুরজের মুন্ডুচ্ছেদ করে। আর এভাবে খুন ও দেহ লোপাটে সাহায্য করে শেখ আফরোজ ওরফে মিঠুন। অন্যদিকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনাটি বিশাখাপত্তনমে বাপের বাড়িতে বসে মনিটরিং করে সুরজের স্ত্রী রাজেশ্বরী। পরিকল্পনা স্ত্রী রাজেশ্বরীর হলেও সুরজকে খুনে গুড্ডু ও মিঠুনের লাভ কী? এই প্রশ্নের উত্তরে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, স্ত্রী রাজেশ্বরীর মতোই পরিবারের এক নাবালিকার সঙ্গে সুরজের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি গুড্ডুও। তাই সে নৃশংশভাবে নিজের মেসোকে খুন করে। অন্যদিকে সুরজকে খুন করলে পুরো বাসের মালিকানা সে পেয়ে যাবে বলে মিঠুন এই কাজে গুড্ডুকে সাহায্য করে।