সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সম্প্রতি বিভিন্ন স্টেশনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) ছবি দিয়ে সেলফি বুথ তৈরি হয়েছে। সেগুলি তৈরি করার খরচ প্রকাশ্যে আসায় বিড়ম্বনায় পড়েছে কেন্দ্র। বিষয়টি নিয়ে সরকারকে তীব্র আক্রমণ করছে বিরোধীরা। তার জেরে এবার তথ্যের অধিকার আইনে জবাব দেওয়ার নীতি কঠোর করেছে ভারতীয় রেল। বিশেষত, জোনাল রেলওয়ের ক্ষেত্রে। নয়া নিয়মে সমস্ত জবাব জোনাল রেলের জেনারেল ম্যানেজার (GM) বা ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারকে (DRM) দেখিয়ে ছাড়পত্র নিতে হবে। তাঁদের সম্মতি ছাড়া কোনও তথ্য প্রকাশ করা যাবে না।
গত ২৭ ডিসেম্বর তথ্যের অধিকার আইনে প্রশ্ন করে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত স্থায়ী সেলফি বুথ তৈরি করতে প্রতিটির ক্ষেত্রে ৬.২৫ লক্ষ টাকা, অস্থায়ী বুথে ১.২৫ লক্ষ টাকা করে খরচ হয়েছে। সেন্ট্রাল রেলওয়ের তরফে তথ্য প্রকাশ হতেই রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়। রেলমন্ত্রীকে চিঠি লিখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাজ্যসভার এক সাংসদ। এক্স হ্যান্ডলে স্টেশনে অপেক্ষারত যাত্রীদের দুর্দশার ছবি ও সেলফি বুথের ছবি পোস্ট করেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। এরপরই ২৮ ডিসেম্বর সমস্ত জোনের জিএম-দের কাছে পৌঁছয় রেল বোর্ডের ‘উপদেশ’।
[আরও পড়ুন: রেশন দুর্নীতির তদন্তে গিয়ে আক্রান্ত ইডি, পালিয়ে প্রাণে বাঁচলেন জওয়ানরা!]
তাতে সাফ বলা হয়েছে, ‘জোনাল রেলওয়ে এবং অন্যান্য ফিল্ড ইউনিটের দেওয়া আরটিআই আবেদনের উত্তরের মান খারাপ হয়েছে। জবাব দেওয়ার সময়সীমা অনেক ক্ষেত্রে অতিক্রান্ত হয়েছে। যার ফলে কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনের (CIC) সামনে প্রচুর সংখ্যক আপিল দাখিল হয়েছে। তাতে শুধু কাজ বাড়েনি, পাশাপাশি সংস্থার বদনাম হয়েছে।’ সমস্যা মোকাবিলায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আরটিআই আবেদনের জবাব দেওয়ার সঙ্গেই সমস্ত উত্তর জোনের ক্ষেত্রে জিএম এবং ডিভিশনের ক্ষেত্রে ডিআরএমকে দিয়ে অনুমোদন করতে বলেছে রেল বোর্ড। অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনাল বা কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনে জবাব দিতে হলেও তা জিএম, ডিআরএমদের দিয়ে অনুমোদন করাতে হবে।
[আরও পড়ুন: দিনেদুপুরে প্রকাশ্যে শুটআউট কামারহাটিতে, তৃণমূল কর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি]
প্রসঙ্গত, আরটিআই আর্জির জবাব দিতে চিফ পাবলিক ইনফরমেশন অফিসার ও পাবলিক ইনফরমেশন অফিসার নিয়োগ করেছিল রেল। এ বিষয়ে জিএম, ডিআরএমদের কোনও ভূমিকা থাকে না। সেলফি বুথ সংক্রান্ত তথ্য দিয়েছিলেন সেন্ট্রাল রেলওয়ের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার অভয় মিশ্র (Abhay Mishra)। কিন্তু বিতর্কের জেরে সেন্ট্রাল রেলওয়ের জনসংযোগ আধিকারিক শিবাজি মানাসপুরেকে দায়িত্ব গ্রহণের সাত মাস পরেই বদলি করা হয়েছে। সাধারণত, দুবছরের জন্য এই পদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই বদলির পরই রাহুল এক্স হ্যান্ডলে কটাক্ষ করেন, ‘শাহেনশাহ কি রাজা, সচ কা ইনাম সাজা’ (শাস্তি দিয়ে সততার পুরস্কার দিলেন রাজা)। যদিও বদলি নিয়ে আলোচনা ধামাচাপা দিতে চেয়েছেন রেলের পদস্থ কর্তারা। এমনকী, রেল বোর্ডের নয়া নির্দেশিকার সঙ্গে বিতর্কের কোনও সম্পর্ক নেই বলে জানান তাঁরা।