সুব্রত বিশ্বাস: পরিবহণ পরিষেবায় রেলের (Indian Railways) ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। মানুষজন নির্ভর করে রেল পরিষেবার উপর। আর এই পণ্য পরিবহণের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে দুর্নীতির বহর। যার জেরে ক্রমাহত সমস্যায় পড়ছেন যাত্রীরা। এবার সেই দুর্নীতি দমনে তৎপর রেল। দুর্নীতি দেখলেই লিখিতভাবে রেলের কাছে আবেদন করা যাবে। ফলে রেলের যে কোনও আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো যাবে।
সেই অভিযোগের গোপনীয়তা রাখতে অভিনব পদ্ধতি নিয়েছে রেল। রেল বোর্ডের ভিজিল্যান্স বিভাগ চালু করেছে ‘পাবলিক ইনটারেস্ট ডিসক্লোজার অ্যান্ড প্রোটেকশন অফ ইনফরমেশন’ বা ‘পিআইডিপিআই’। অভিযোগকারীরা একেবারে সিল বন্ধ খামে অভিযোগ সরাসরি পাঠাতে পারবেন সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশনের সচিবের কাছে। সচিবের নামে চিঠি পাঠাতে হবে, সতর্ক ভবন-ব্লক এ, জিপিও কমপ্লেক্স আইএনএ, নিউ দিল্লি ১১০০২৩—র ঠিকানায়। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগ একেবারে গোপন রাখা হবে। রেলের যে কোনও স্তরের আধিকারিকের নামে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ জানাতে পারবেন।
[আরও পড়ুন: ভারতীয় গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার অস্ত্র পেগাসাস, সুপ্রিম রায়কে হাতিয়ার করে তোপ রাহুলের]
জোনাল রেলকে এনিয়ে ব্যাপক প্রচার করতেও বলেছে রেল বোর্ড। প্রতিটি যাত্রী যাতে এই অভিযোগ জানানোর পদ্ধতি ও ঠিকানা সম্পর্কে অবগত থাকেন সেজন্য, কলকাতা রেলের ভিজিল্যান্স দপ্তর বিভিন্ন ডিভিশনকে নির্দেশ পাঠানোর পাশাপাশি সচেতনতার পোস্টারও পাঠিয়েছে। যে পোস্টার প্রতিটি দপ্তর, স্টেশন, বুকিং কাউন্টার, রিজার্ভেশন কাউন্টারের বাইরে সাঁটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পোস্টার সাঁটাতে গিয়ে বহু জায়াগায় বাঁধার সম্মুখীন হন রেলকর্মীরাই। বিশেষত রিজার্ভেশন কাউন্টারগুলি থেকে বাঁধা আসে বলে কর্মীদেরই অভিযোগ। বহু জায়াগা থেকে বলা হয়, এমন জায়গাতে পোস্টার লাগানো হোক, যা সাধারণ যাত্রীর চোখে না পড়ে।
গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন ও পিআরএসের সামনে দালালদের আনাগোনা যাত্রীদের ক্ষোভের কারণ, এটা জানেন রিজার্ভেশন কর্মীরাও। অভিযোগ, টিকিট পরীক্ষকদের একাংশও নানা ধরণের বেআইনি কাজে লিপ্ত। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দুর্নীতি আরও বড়সড়। নানা সময় ঠিকাদাররাই এজন্য সমস্যার মুখে পড়েন। কমার্শিয়াল বিভাগের পার্সেলেও নানা নীতিহীন কাজকর্মে ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। কিন্তু দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে ভয় পান বহু মানুষ ও রেলকর্মী। অহেতুক হয়রানি, কাজ হারানোর আশঙ্কা (বিশেষত ঠিকা শ্রমিকদের)। এই জন্য গোপনীয়তা রক্ষা করে সঠিক পদ্ধতিতে তদন্ত পরিচালনা করার জন্য এই উদ্যোগ বলে ভিজিল্যান্স কর্তাদের মত।