রিংকি দাস ভট্টাচার্য: জোড়াতাপ্পি দিয়ে কোনওমতে দুর্গাপুজো বেঁচেছে। কিন্তু ফুটবল-‘পুজো’র ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
আজ, রবিবার যুবভারতীতে অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ। কিন্তু আলিপুরের পূর্বাভাস বলছে, আজ সকাল থেকেই মেঘলা থাকবে আকাশ। দিনভর দফায় দফায় বৃষ্টি হবে। তবে আশার বাণী একটাই, ভারী বর্ষণ নয়, হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিতেই ভিজবে দক্ষিণবঙ্গ। “উত্তর—পূর্ব বঙ্গোপসাগরে দানা বেঁধেছে ঘূর্ণাবর্ত। অবস্থান পরিবর্তন করে তা ক্রমশ সরে আসবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের দিকে। আর তাতেই বৃষ্টি হবে শহর ও শহরতলির বিভিন্ন এলাকায়।” এমনই খবর জানিয়েছেন দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস।
বস্তুত, এর প্রভাব শনিবারই সকাল থেকে টের পাওয়া গিয়েছে। দফায় দফায় নাগাড়ে বৃষ্টি হয়েছে কলকাতা ও আশপাশে। আকাশে ঘন কালো মেঘ। ক্ষণে ক্ষণে ঝুপঝুপিয়ে বৃষ্টি। শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আলিপুরে ৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আসলে বিদায়বেলায় বর্ষা সক্রিয় হয়ে যাওয়ায় এই বিপত্তি বলে জানাচ্ছেন তিনি। মৌসম ভবনের হিসাব অনুযায়ী, এ রাজ্যে বর্ষা ঢোকার কথা ৮ জুন৷ বিদায় নেওয়ার কথা ১০ অক্টোবর। যদিও বর্ষার এই ক্যালেন্ডার তৈরি হয়েছিল প্রায় ৪০ বছর আগে। এখন দেরি করে এখন বর্ষা আসছে। ফলে থেকেও যাচ্ছে বেশিদিন।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, আগে বর্ষার বেশিটাই হয়ে যেত আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে। ভাদ্রের মাঝামাঝি কাটিয়ে বাংলা থেকে বিদায় নিত বর্ষা। কিন্তু নতুন পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে বর্ষা পিছিয়ে গিয়েছে অনেকটাই। একইসঙ্গে হয়েছে দীর্ঘায়িতও। গত এক দশক ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আবহাওয়াবিদরা দেখেছেন, ১০ অক্টোবর বর্ষা বিদায় তো নিচ্ছেই না, থেকে যাচ্ছে অক্টোবর মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। গোটা দেশেও বর্ষার এই বিলম্বিত লয়। পাশাপাশি অক্টোবর মাস ঘূর্ণিঝড় প্রবণ। এই সময় বঙ্গোপসাগরে ঘন ঘন ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়। তা শক্তি বাড়িয়ে প্রথমে নিম্নচাপ পরে আরও শক্তি নিয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। যা পরোক্ষভাবে পুষ্টি জোগায় বর্ষাকে।
যদিও বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে ফুটবল-উৎসবের রোশনাইয়ে সেজে উঠেছে শহর। পুজো-লক্ষ্মীপুজোর পর বাস্তবিকই ফুটবল-পুজো। কিন্তু বৃষ্টিতে যদি ম্যাচ পণ্ড হয়!
এতটাও নিরাশ করছেন না বিশেষজ্ঞরা। হওয়া অফিসের এক আবহাওয়াবিদ জানিয়েছেন, এই সময় বৃষ্টি হয় মূলত বজ্রগর্ভ মেঘ থেকে। ঘূর্ণাবর্তের ফলে বঙ্গোপসাগর থেকে মেঘ ঢুকতে থাকবে। সেগুলি স্থানীয়ভাবে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়ে বৃষ্টি ঘটাবে। বৃষ্টি হলেও বেশিক্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা কম।
সেই আশাতেই বুক বেঁধে আজ যুবভারতীমুখী হবে ফুটবলপাগল জনতা।
The post মেঘ মাথায় নিয়েই আজ শহরে ফুটবল পুজো appeared first on Sangbad Pratidin.