স্টাফ রিপোর্টার: মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে রাজ্যপালের দায়ের করা মানহানির মামলা গৃহীত হল কলকাতা হাই কোর্টে। আগামী ১৫ জুলাই পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন বিচারপতি কৃষ্ণা রাও। কিন্তু এই সংক্রান্ত বিষয়ে রাজভবনের করা পোস্ট, ও কিছু সময় পর সেই পোস্ট তুলে নেওয়া ঘিরে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
রাজভবনের পোস্টে লেখা হয়েছিল, হাই কোর্ট রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অসম্মানজনক মন্তব্যের উপরে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে। শুনানিতে এদিন কোর্ট কোনও মন্তব্যই করেনি। কোর্ট কিছু না বলা সত্ত্বেও রাজভবনের মতো দায়িত্বশীল জায়গা থেকে কীভাবে একটা মিথ্যা পোস্ট করা হল, তা নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে বিতর্ক দানা বাঁধে। বিতর্কের মুখে পোস্টটি মুছে দেয় রাজভবন।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অসম্মানজনক মন্তব্যের অভিযোগে মানহানির মামলা দায়ের করেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও মামলায় যুক্ত করতে হয়েছে আরও তিনজনের নাম। তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ, ও সদ্য নির্বাচিত বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রায়াত হোসেন। বুধবার এই সংক্রান্ত মামলায় মুখ্যমন্ত্রীর হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী সঞ্জয় বসু। কুণাল ঘোষের হয়ে আইনজীবী ছিলেন অয়ন চক্রবর্তী।
[আরও পড়ুন: তিস্তায় তলিয়ে যাবে না তো ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক? লাগাতার ধস-ফাটলে বাড়ছে শঙ্কা]
আদালতে রাজ্যপালের আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদী জানান, এই মামলায় সংবাদমাধ্যমের কাউকে যুক্ত করা হয়নি। একই সঙ্গে তাঁর আবেদন ছিল, রাজ্যপাল সম্পর্কে মন্তব্যে যাতে অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেয় আদালত। কিন্তু এই আবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি বিচারপতিরাও। অসম্মানজনক মন্তব্যে কীভাবে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ হয় প্রশ্ন ওঠে তা নিয়ে। মন্তব্য যদি অসম্মানজনক হয়, তাহলে সেটা সবসময়ই অসম্মানজনক হয়। কখনও অসম্মানজনক মন্তব্য কাম্য নয়। কিছু সময়ের জন্য কীভাবে অসম্মানজনক বন্ধ রাখার আর্জি জানানো যেতে পারে? আগামী সোমবার অর্থাৎ ১৫ জুলাই সকাল সাড়ে ১০টায় মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করার পাশাপাশি, পরবর্তী শুনানির আগে মামলার সংশ্লিষ্ট সবপক্ষকে নথি আদান-প্রদানের নির্দেশ দেন বিচারপতি৷
এদিকে রাজভবনের এক্স হ্যান্ডলে বেলা ১২টা ৫৯ মিনিটে এনিয়ে একটি পোস্ট করা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। যেখানে প্রশ্নোত্তরের আকারে জানানো হয়, মমতার বিরুদ্ধে করা মানহানির মামলার শুনানিতে কী কী ঘটেছে। যা নিয়েই বিতর্কের শুরু। পোস্টে প্রশ্নটি ছিল, "কলকাতা হাই কোর্ট কি রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করার বিরুদ্ধে কোনও আদেশ দিয়েছে?" উত্তরে লেখা হয়, "কলকাতা হাই কোর্ট মৌখিকভাবে নির্দেশ দিয়েছে, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এই সময়ের মধ্যে কোনও অবমাননাকর মন্তব্য করা যাবে না।" বিচারপতি মামলায় একটি মন্তব্য না করা সত্ত্বেও রাজভবনের পোস্টে আইনজীবী জানিয়েছেন বলে কীভাবে স্থগিতাদেশের বিষয়টি ঢোকানো হল সেই প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি। কীসের ভিত্তিতে রাজভবনের হ্যান্ডল থেকে বুধবারের শুনানি সংক্রান্ত ওই পোস্টটি করা হল, কেনই বা তা সরিয়ে নেওয়া হল, তা নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়েছে।