স্টাফ রিপোর্টার, নয়াদিল্লি: জয়পুর জয়গাথা লিখতে গিয়ে কি তা হলে দিল্লির সুযোগ দুরমুশ করে ফেললেন অশোক গেহলট (Ashok Gehlot)?
রবিবারের মিডনাইট মেলোড্রামার পর কংগ্রেস (Congress) সদর দপ্তরের চারিদিকে রাতারাতি বিরক্তির পাত্র হয়ে উঠেছেন রাজস্থান মুখ্যমন্ত্রী (CM Rajasthan)। যাঁকে দলের সর্বাধিনায়ক করার পরিকল্পনা চলছিল, হঠাৎ করে তিনি হয়ে গিয়েছেন খলনায়ক। যা পরিস্থিতি, তাতে হাইকমান্ডের প্রাথমিক পছন্দের প্রার্থী হলেও আদৌ তিনি সভাপতি (Congress President) নির্বাচিত হতে পারেন কি না, তা নিয়েই গুঞ্জন শুরু হয়ে গেল কংগ্রেসের অন্দরে।
প্রথমে তাঁর অনুগামীদের বিদ্রোহ। তারপর তাঁদেরই আবার একের পর এক শর্ত আরোপ করে হাইকমান্ডকে কার্যত চ্যালেঞ্জ করা। সবশেষে বিদায়ী অন্তর্বর্তীকালীন দলনেত্রী সোনিয়া গান্ধীর (Sonia Gandhi) নির্দেশে দুই পর্যবেক্ষক মল্লিকার্জুন খাড়গে ও অজয় মাকেনের ডাক উপেক্ষা করে বৈঠকে না যাওয়া। গত কয়েকঘণ্টায় গেহলট ও গেহলট-সঙ্গীদের ধারাবাহিক কাজ ও পদক্ষেপে ‘বৃদ্ধ রাজপুত’-এর উপর ক্ষুব্ধ হাইকমান্ড। সবদিক বজায় রেখে পরিস্থিতি সামাল দিতে মাঠে নামানো হয়েছে কমলনাথকে।
[আরও পড়ুন: কাশ্মীরে ফের নিরাপত্তা বাহিনীর সাফল্য, উপত্যকায় নিকেশ পাক জইশ জঙ্গি]
ঘটনার ঘনঘটায় অগ্নিশর্মা সোনিয়া পর্যবেক্ষকদের থেকে লিখিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন। মঙ্গলবার সকালের মধ্যে তা জমা দেওয়ার কথা খাড়গে-মাকেনের। তারপরই নির্ধারিত হতে পারে গেহলটের ভবিষ্যৎ। যদিও সুত্রের খবর, সোমবার রাতে অনুগামীদের আচরণের জন্য সোনিয়ার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন গেহলট। তবে তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে এ হেন দলবিরোধী আচরণের জন্য পদক্ষেপ করা হতে পারে কংগ্রেসের তরফে। তার আগেই অবশ্য সোনিয়ার তলবে দিল্লি এলেন মধ্যপ্রদেশ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ। তাঁর হঠাৎ দিল্লি আসার পিছনে দু’টি সম্ভাবনা সামনে আসছে। কারও বক্তব্য, গেহলটের সঙ্গে মধ্যস্থতা করতে তাঁকে ডেকেছেন সোনিয়া। কারও দাবি তাঁকে নতুন প্রার্থী করা হতে পারে। যদিও তাঁর বক্তব্য, “সভাপতি পদ নিয়ে আমার কোনও আগ্রহ নেই। আমি নবরাত্রির শুভেচ্ছা জানাতে এসেছি শুধু।”
এর মধ্যেই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। শীর্ষনেতৃত্বের বিরুদ্ধাচারণ করার কী শাস্তি পেতে পারেন অশোক গেহলট? তা হলে কি তাঁকে সভাপতি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর বার্তা দেওয়া হবে? কংগ্রেসের অন্দরের ফিসফাস, তা করলে অনেকটা নিজেদের থুতু চাটার মতো বিষয় হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে? একদিকে যখন প্রশ্ন উঠছে গেহলটের ভবিষ্যৎ নিয়ে, তখন কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে কটাক্ষ করল বিরোধীরা। তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি, আম আদমি পার্টি প্রত্যেকেরই বক্তব্য প্রায় এক। ভারত জোড়ো পরে হবে আগে কংগ্রেস নিজেদের জুড়ুক।
[আরও পড়ুন: চাপে শিশির অধিকারী, দলবদল মামলায় সশরীরে হাজিরার নির্দেশ লোকসভার প্রিভিলেজ কমিটির]
কলকাতায় সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূলের (TMC) রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন, “কংগ্রেস ভারত জোড়ো পরে করবে। আগে কংগ্রেস জোড়ো তে হাঁটুন রাজস্থানে গিয়ে। গুলাম নবি আজাদ চলে যাচ্ছে। রাজস্থানে টলমল অবস্থা। পুরনো জমিদারি মেজাজ। আমরা ভেবেছিলাম আমাদের বাদ দিয়ে হবে না। কেউ বলেনি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেননি সে কথা যে, তোমাদের বাদ দিয়ে হচ্ছে। আগে আপনারা নিজেদের ঘর সামলান। পাঞ্জাব সামলাতে পারলেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন কংগ্রেস দায়িত্ব পালন করুক। একদিন হাত ধরে ছবি তুলে লাভ নেই।” রাজস্থান থেকে বিজেপি (BJP) সাংসদ রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোরের কটাক্ষ, “কেউই কংগ্রেসের সভাপতি হতে চাইছে না। গোটা দলটা ঘুণে খেয়ে ফেলেছে।”