সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাকিস্তানের হিন্দু শরণার্থী মেয়ের শিক্ষায় হাত বাড়াল রাজস্থান প্রশাসন। দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা নিয়ে প্রাথমিকভাবে জটিলতা তৈরি হলেও, রাজস্থানের শিক্ষামন্ত্রী গোবিন্দ সিং দোতাসারা তার পাশে দাঁড়িয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, প্রয়োজনে নিয়ম বদল করেও তাকে পরীক্ষায় বসার সুযোগ করে দেওয়া হবে। এ নিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পাকিস্তান দূতাবাসে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
দামি কোহলি বছর কয়েক আগে পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশ থেকে শরণার্থী হয়ে চলে আসে ভারতে। যোধপুরের অঙ্গনওয়া শরণার্থী শিবিরে ঠাঁই হয় এই হিন্দু কিশোরীর। পাকিস্তান থেকেই সে দশম শ্রেণির পরীক্ষায় পাশ করে এসেছিল। ২০১৮ সালে সে যোধপুরের স্থানীয় একটি স্কুলে বিজ্ঞান নিয়ে একাদশ শ্রেণিতে ভরতি হয়। সারাবছর মন দিয়ে পড়াশোনা সে দ্বাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণও হয় দামি। কিন্তু বোর্ডের পরীক্ষার আগেই গোল বাঁধে। সে জানায়, ”স্কুলের তরফে আমাকে একটা নোটিস দিয়ে জানানো হয় যে আমি বোর্ডের পরীক্ষায় বসতে পারব না। কিন্তু আমি সমস্ত রকমের প্রমাণ পেশ করেছিলাম। আমারও তো শিক্ষার অধিকার আছে।”
[আরও পড়ুন: CAA বিরোধী আন্দোলন চলছেই, বছরের প্রথম দিনই বন্ধ থাকল দিল্লির ৫ মেট্রো স্টেশন]
ন্যায্য কথা দামির। ভারতের নিরাপদ আশ্রয়ে এসে সে পড়াশোনাই এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। সেটাই তার স্বপ্ন। যোধপুরের স্কুলে ভরতি হওয়ার পরই যে স্বপ্নের দিকে এগিয়েছিল সে। কিন্তু শেষমেশ এ কী হতে চলেছে? স্বপ্ন বুঝি আর সফল হল না, এই ভেবেই মাথায় হাত পড়েছিল তার। তবু লড়াই ছাড়েনি। বারবার নিজের সমস্ত প্রমাণ দিয়েছে দামি।এই পরিস্থিতিতে অবশ্য ভেঙে পড়েছেন দামির বাবা। তিনি বলছেন, ”ও ক্লাস টেন পাশ করার পর আমরা এখানে চলে আসি। ট্রান্সফার সার্টিফিকেট নিয়ে এসেছিলাম। সেটা দেখাই। এখানে ভরতি হওয়ার জন্য যা যা প্রয়োজন, সবই করা হয়েছে। আমি জানি না, কর্তৃপক্ষ আর কী প্রমাণ দেখতে চায়। বোর্ডের পরীক্ষার একমাস আগে এসব দেখে আমি বিস্মিত, হতাশও।”
তবে দামির এই সমস্যার জট কাটাতে আসরে নেমেছেন স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী গোবিন্দ সিং দোতাসারা। তিনি জানিয়েছেন, ”আমরা জানি, মেয়েটি পাকিস্তান থেকে দশম শ্রেণি পাশ করে এখানে এসেছিল। এখান থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা দেবে। পাকিস্তান দূতাবাসকে আমরা চিঠি পাঠিয়েছি, ওখানকার পাঠ্যসূচি জানার জন্য। তাহলে মেয়েটির যোগ্যতা তুলনা করতে সুবিধা হবে। তবে ওরা যদি কোনও নেতিবাচক রিপোর্টও দেয়, তাহলেও আমি প্রয়োজনে নিয়ম পালটে ওকে পরীক্ষায় বসার ব্যবস্থা করে দেব।”
[আরও পড়ুন: ব্যাংক কিংবা আদালতের জরুরি নথিতে উল্লেখ করুন পুরো সাল, নাহলেই বিপদ!]
২০১১ সালে রাজস্থানে কংগ্রেস সরকার থাকাকালীন এ ধরনের পড়ুয়াদের শিক্ষার জন্য আইন সংশোধন করে পরীক্ষায় বসার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছিল। সেই নিয়মেই সবটা চলছে। তার উপর ভিত্তি করেই দামির সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে বলে আশা বর্তমান কংগ্রেস সরকারের শিক্ষামন্ত্রীর।
The post রাজস্থানে পরীক্ষায় বসতে বাধা পাক হিন্দু শরণার্থীকে, জট কাটাতে আসরে স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী appeared first on Sangbad Pratidin.