ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ঘণ্টা দেড়েকের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। কিন্তু এক আলোচনাতেই সমাধান সূত্র মিলল না মোটেই। বরং জল্পনা জিইয়ে রেখেই দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) এবং ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের (Prashant Kishor) সঙ্গে আলোচনা সেরে বেরলেন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তাঁর বক্তব্য, ”দলীয় আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছিল, এসেছিলাম। আলোচনা হল। পরেও প্রয়োজনে আলোচনা হবে।”
এমন এড়িয়ে যাওয়া উত্তর দিলেও ক্ষোভ কিন্তু গোপন করলেন না বনমন্ত্রী। স্পষ্টই বললেন, ”মনে করি, দলের কারও যদি দলের প্রতি কোনও ক্ষোভ তৈরি হয়ে থাকে, তাহলে তা আলোচনার মাধ্যমেই মিটিয়ে ফেলা উচিত। দলকে এ বিষয়ে সতর্ক হতে হবে।” আলোচনা কি সন্তোষজনক? নাহ, এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তরও মিলল না। বললেন, ”আলোচনা হয়েছে, এটুকুই। এর বেশি কিছু বলার নেই।” অর্থাৎ রাজীবকে নিয়ে তৃণমূলের অবস্থান অথবা দল নিয়ে রাজীবের মনোভাব কী, এ নিয়ে জল্পনা জিইয়ে রইলই।
[আরও পড়ুন: রক্তচাপ স্বাভাবিক, বলছেন কথা, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শারীরিক অবস্থার আরও উন্নতি]
শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে টানাপোড়েনের মাঝেই জল্পনা বাড়িয়ে তুলেছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajib Banerjee)। দলে কোণঠাসা, কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে, এমনিই নানা অভিযোগের সুর শোনা গিয়েছিল তাঁর গলায়। তবে কখনওই সেসব নিয়ে খুব বেশি সোচ্চার হতে দেখা যায়নি দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য সদস্য তথা রাজ্যের এই মন্ত্রীকে। এরপর ‘আমরা দাদার অনুগামী’ স্টাইলে তাঁরও পোস্টার, ব্যানার ছয়লাপ হয়ে যায় হাওড়াজুড়ে। যদিও তার বয়ান ছিল ভিন্ন। শনিবার রাতেও ডোমজুড়ে ‘রাজীবদা ভরসা’ লেখা হোর্ডিং চোখে পড়ে। এসব নিয়ে গুঞ্জন শুরু হতেই সতর্ক হয় দলীয় নেতৃত্ব। রবিবার দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকতলার বাড়িতে ডেকে পাঠানো হয় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ঘণ্টা দেড়েকের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরও।
[আরও পড়ুন: ‘তোমার মতো ছেলেদেরই দরকার’, মুখ্যমন্ত্রীর এক ফোনে বিলেতের চাকরি ছাড়লেন চিকিৎসক]
বৈঠক সেরে বেরনোর পরও রাজীবের কথায় তেমন কোনও স্পষ্ট আভাস মিলল না। বরং দলের সঙ্গে মনোমালিন্য মিটল কি না, সেই ধোঁয়াশা জিইয়ে রাখলেন তিনি। পোস্টার নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে স্পষ্ট বললেন, ”কারা করছে, জানি না। এটা যাঁরা করছে, তাঁদের নিজেদের ব্যাপার। আমার এ নিয়ে কিছু বলার নেই।” জবাব দিলেন শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে তোলা প্রশ্নেরও। উভয়ের তুলনা মোটেই পছন্দ নয় বনমন্ত্রীর। তাঁর কথায়, ”শুভেন্দু অধিকারী আলাদা, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় আলাদা। কারও সঙ্গে কারও তুলনা চলে না। উনি ওঁর কথা বলেছেন, আমি আমারটা বলেছি।”রাজনৈতিক মহলের একাংশের অনুমান, হয়ত রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের কিছু শর্ত জানিয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্বকে। তার ভিত্তিতে পরবর্তী আলোচনা হতে পারে।
শুনুন বনমন্ত্রীর বক্তব্য: