জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: ইছামতীর কচুরিপানা দিয়ে তৈরি রাখি এবার পৌঁছলো পদ্মাপারে৷ বুধবার বনগাঁ পুরসভার পক্ষ থেকে সেই রাখি, মিষ্টি পৌঁছে দেওয়া হল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে৷
এদিন সকালে বনগাঁ পেট্রাপোল বন্দরে যান বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ। ওপার বাংলা থেকে আসেন সাংসদ শেখ আফিলউদ্দিন ৷ তাঁর হাতে কচুরিপানা দিয়ে তৈরি রাখি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়ার জন্য তুলে দেওয়া হয়। গোপালবাবু বলেন, “দু’দেশের মৈত্রী বন্ধন আরও দৃঢ় করতে এবং স্থানীয় মহিলাদের তৈরি কচুরিপানার রাখি যাতে ভবিষ্যতে রপ্তানি করা যায় সেই লক্ষ্যেই এই রাখিগুলি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে উপহার স্বরূপ পাঠানো হল। আমরা কচুরিপানা থেকে তৈরি সামগ্রীর ব্যবসা করতে চাই।”
[আরও পড়ুন: মহিলার নগ্ন ছবি তোলা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ, সালিশি সভা বসতেই গুলি চালাল অভিযুক্ত]
বাংলাদেশের (Bangladesh) সাংসদ শেখ আফিলউদ্দিন বলেন, “দুই দেশ ও দুই বাংলার বন্ধন অনেক দৃঢ়। রাখিবন্ধন সেটাকে আরও মজবুত করে। কচুরিপানায় তৈরি রাখি ভবিষ্যতে ব্যবসায়িকভাবে অবশ্যই কাজে লাগানো যেতে পারে। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার একই ভাবে রাখি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর কাছে। রাখি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে৷
বনগাঁ পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, রাখিগুলি কুরিয়ার করে সেই দেশগুলির দূতাবাসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে সেগুলি পৌঁছে যাবে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে,সম্প্রতি বনগাঁ পুরসভার পক্ষ থেকে ইছামতী নদী থেকে কচুরিপানা তুলে মহিলাদের হস্তশিল্পের সামগ্রী তৈরি করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। ইতিমধ্যে ৫০০ মহিলাকে কর্মশালার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কর্মশালার নাম ছিল, ‘কচুরিপানা আনবে সোনা।’
পুরসভা দেশ-বিদেশে কচুরিপানার সামগ্রী বিপণনের পরিকল্পনা করেছে। প্রশিক্ষণ নিয়ে মহিলারা ইতিমধ্যে কচুরিপানার ব্যাগ, টুপি, রাখি ফাইল-সহ বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করা শিখছেন। তাঁরা কচুরিপানা দিয়ে ৩০ হাজার রাখি তৈরি করেছেন। ইতিমধ্যে একটি রাখির দাম ১৫ টাকা। ইতিমধ্যে ১৩ হাজার রাখি বিক্রি হয়ে গিয়েছে। পুরপ্রধান গোপাল শেঠ বলেন, “কচুরিপানা দিয়ে তৈরি সামগ্রীর বিপুল চাহিদা রয়েছে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বরাত আসতে শুরু করেছে।” কচুরিপানা থেকে শিল্পসামগ্রী তৈরি হলে নদী পরিষ্কার হওয়ার পাশাপাশি মহিলারাও স্বনির্ভর হবে বলে মনে করছেন বনগাঁবাসী।