shono
Advertisement

রাম নাম লেখা পাথরও ভাসে জলে, রামের প্রতি ভক্তিতেই জন্ম অজস্র জনশ্রুতির

হিন্দুদের কাছে রামায়ণ শুধুমাত্র ধর্মকথা নয়, বরং তার চেয়েও বেশি কিছু।
Posted: 02:23 PM Mar 30, 2023Updated: 04:07 PM Mar 30, 2023

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সমুদ্রের ওপারে রাবণের লঙ্কাপুরী। সেখানেই বন্দি রামপত্নী সীতা। বানর সেনা সঙ্গে নিয়ে সম্মুখ সমরের জন্য প্রস্তুত শ্রীরাম। কিন্তু এতবড় সমুদ্র পার করবেন কীভাবে? সিদ্ধান্ত নেওয়া হল সেতু বানানোর। সেখানেই শ্রী রামচন্দ্রকে সাহায্য করতে হাজির হয়েছিল এক ছোট্ট কাঠবিড়ালি। রামায়নের সেই সেতুবন্ধন পর্বের সঙ্গে জড়িয়ে একাধিক জনশ্রুতি। আসুন শুনে নেওয়া যাক।

Advertisement

হিন্দুদের কাছে রামায়ণ শুধুমাত্র ধর্মকথা নয়। বরং তার চেয়েও বেশি কিছু। সেই রামায়ণের বিভিন্ন পর্বে রয়েছে এমন কিছু ঘটনা যা ধর্মের গণ্ডি পেরিয়ে জনশ্রুতিতে পরিণত হয়েছে। রামের সঙ্গে সম্পর্কিত সেইসব কাহিনিই আজ শুনে নেব।

[আরও পড়ুন: স্নান সেরে বন্ধুত্ব পাতানোই রীতি, বাসন্তী পুজোয় বাংলার কোথায় এমন নিয়ম পালন করা হয়? ]

প্রথমেই বলতে হয় কাঠবিড়ালির পিঠের তিনটে দাগের কথা। এর নেপথ্যেও রয়েছেন স্বয়ং শ্রীরাম। রামায়ণ অনুযায়ী, সমুদ্রের উপর সেতুবন্ধনের সময় হাজার হাজার বানর শ্রীরামচন্দ্রকে সাহায্য করেছিল। মূল কাজ বলতে ভারী পাথর বয়ে সমুদ্রে ফেলা। তা বানরের দলের কাছে সেই কাজ করা মোটেও কঠিন ছিল না। কিন্তু হঠাৎ একটি কাঠবিড়ালি এসে হাজির হয় সমুদ্রতীরে। সেও নাকি সেতু বন্ধনে সাহায্য করবে। কিন্তু আকারে বহরে সে এতটাই ছোট, যে সবথেকে ক্ষুদ্রতম পাথরে টুকরো তুলতেও ব্যর্থ হয় ওই কাঠবিড়ালি। বানরের দল রীতিমতো হাসাহাসি শুরু করে তাকে দেখে। তবু সে রামের সাহায্য করতে বদ্ধপরিকর। তাই অদ্ভুত এক ফন্দি বের করে ওই কাঠবিড়ালি। প্রথমে নিজেই সমুদ্রের জলে গিয়ে ভালো করে গা ভেজায়। তারপর ভেজা গায়ে বালির উপর এসে শুয়ে পড়ে। স্বাভাবিক ভাবেই তার গায়ে বেশ কিছুটা বালি লেগে যায়, সেই অবস্থাতেই সে আবার ছোটে সমুদ্রের দিকে। আবার স্নান করে। গায়ের সব বালি সমুদ্রে ঝরে পরে। তারপর আবার ওই একইভাবে বালির উপর লুটিয়ে পড়ে সে। এভাবেই বেশ কিছুক্ষণ সমুদ্রে বালি ফেলার কাজ করতে থাকে সে। হয়তো পরিমাণে একেবারেই যৎসামান্য, তবু তার মনে হয়েছিল শ্রী রামের জন্য এতটুকু সে করবেই। দূর থেকে কাঠবিড়ালির এই কাণ্ডকারখানা দেখছিলেন শ্রীরাম। তিনি ছুটে এসে কাঠবিড়ালিকে কোলে তুলে নেন। সে কেন এমনটা করেছে তা সহজেই বুঝতে পারেন রাম। তারপর বানরের দলকে একজায়গায় জড়ো হতে বলেন। সবার সামনে কাঠবিড়ালির পরিশ্রমের কথা বলেন তিনি। আকারে এত ছোট হয়েও সে যেভাবে রামের জন্য সাহায্য করেছে, তা প্রমাণ করে দিয়েছিল তার রামভক্তির কথা। তাতেই আপ্লুত হয়ে কাঠবিড়ালির পিঠে হাত বুলিয়ে দেন শ্রী রাম। সেই থেকেই তার পিঠে তিনটি দাগ হয়ে যায়।

এরপর বলতে হয় সমুদ্রে পাথর ভাসার কথা। কথিত আছে, পাথরে গায়ে রামের নাম লেখার পরি নাকি সেইসব পাথর জলে ভাসতে শুরু করেছিল। তাই প্রত্যেকটা পাথরের গায়ে রামনাম লিখে তা জলে ভাসিয়ে দেয় বানরের দল। যদিও এর নেপথ্যে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও রয়েছে। তবে রামায়ণের যুগে সেই ব্যাখ্যা আদৌ কারও জানা ছিল কি না তা নিয়ে অবশ্যই সন্দেহ থাকবে। অন্যদিকে রামায়ণের সঙ্গে জড়িয়ে আছে দুর্গাপুজোর শুরুর কথা। সেতুবন্ধনের পর শ্রীরাম মহামায়ার আরাধনা করেছিলেন। তাঁর হাতেই অকালবোধন হয়েছিল দেবীর দুর্গার। শরৎকালের সেই দুর্গাপুজোই আজ বাঙালির প্রধান উৎসব। এমনই আরও অনেক কাহিনি যা রামায়ণের অন্দরে জন্ম নিয়েও স্বতন্ত্রভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবু শ্রীরামের উল্লেখ এখনও মুছে যায়নি গল্পগুলি থেকে। বরং শ্রী রামই যেন সেইসব জনশ্রুতির অন্যতম উপাদান হয়ে উঠেছেন।

[আরও পড়ুন: বাসন্তী পুজো ঘিরে শারদোৎসবের আমেজ কালনায়, সন্ধিপুজোয় আজও প্রচলিত বলি প্রথা ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement