সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেষ পর্যন্ত পতঞ্জলির 'বিভ্রান্তিকর' বিজ্ঞাপনের জন্য সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) হাজিরা দিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন যোগগুরু রামদেব (Ramdev)। ক্ষমা চাইলেও 'অপরাধে'র বিষয়ে রেয়াত করল না আদালত।মঙ্গলবার রামদেব এবং সহযোগী বালকৃষ্ণকে চরম ভর্ৎসনা করে বিচারপতিরা বলেন, 'সহ্যের সীমা অতিক্রম করেছেন আপনারা। গোটা দেশের কাছে ক্ষমা চান।'
বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন নিয়ে একাধিকবার সুপ্রিম কোর্টের তোপের মুখে পড়েছে পতঞ্জলি। গত নভেম্বর মাসে শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, ভুয়ো তথ্য দেওয়া বিজ্ঞাপন তৈরি করলে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা ভুগতে হবে। কেবল রামদেব নয়, পতঞ্জলির বিজ্ঞাপন ঘিরে সুপ্রিম কোর্টের তোপে পড়েছে কেন্দ্রও। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ”সরকার চোখ বন্ধ করে বসে আছে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ করতে হবে।” ইতিমধ্যে সংস্থাটিকে নোটিসও দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।
[আরও পড়ুন: কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে ইডির তৎপরতায় কংগ্রেসের ‘হাত’! বিস্ফোরক বিজয়ন]
ওই নোটিসে সুপ্রিম কোর্টে হাজির দিয়ে ‘নিঃশর্ত ক্ষমা’ চাইতে বলা হয়েছিল রামদেব এবং পতঞ্জলির ম্যানেজিং ডিরেক্টর আচার্য বালকৃষ্ণকে। এর পরই টনক নড়ে সংস্থার দুই প্রধানের। গত সপ্তাহে হলফনামা দিয়ে ক্ষমা চান তাঁরা। মঙ্গলবার আদালতের নির্দেশ মতো শীর্ষ আদালতে হাজিরা দিয়ে ক্ষমা চান রামদেব। যোগগুরুর আইনজীবী বলেন, 'আমরা নিঃশর্ত ক্ষমা চাইছি। তিনি (বাবা রামদেব) এখানে ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমা চাইতে উপস্থিত রয়েছেন।' এর পরেও আদলতের চরম ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় রামদেবকে।
[আরও পড়ুন: বিজেপিতে যোগ না দিলেই গ্রেপ্তার! কেজরির পর আশঙ্কায় অতিশী, রাঘব চাড্ডারা]
বিচারপতিরা মন্তব্য করেন, এই ক্ষমা চাওয়াও আসলে 'লোক দেখানো'। 'গোটা দেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। সমস্ত সীমা অতিক্রম করেছেন...এখন বলছেন দুঃখিত!' এদিন ফের কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধোনা করে আদালত বলে, 'অবাক করা কাণ্ড হল পতঞ্জলি যখন শহরগুলিতে ছড়াচ্ছিল যে অ্যালোপ্যাথিতে কোভিডের চিকিৎসা নেই, তখন কেন চোখ বন্ধ করেছিল কেন্দ্র!' এদিন বিচারপতিরা নির্দেশ দেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আরও একটি বিস্তারিত হলফনামা জমা দিত হবে পতঞ্জলিকে।
উল্লেখ্য, রামদেবের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ঝুলছে সুপ্রিম কোর্টে। কোভিড অতিমারীর সময়ে করোনার চিকিৎসায় অ্যালোপ্যাথির ব্যবহার নিয়ে একাধিক নেতিবাচক মন্তব্য করেছিলেন যোগগুরু। চিকিৎসকদেরও তোপ দাগেন তিনি। তার পরেই একাধিক রাজ্যে এফআইআর দায়ের করে আইএমএফ। সমস্ত অভিযোগের তদন্তে স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন যোগগুরু। সেই তদন্ত চলাকালীনই পতঞ্জলির বিজ্ঞাপন নিয়ে অস্বস্তি বাড়ল।