shono
Advertisement

মায়ের জন্য একা হাতে কুয়ো খুঁড়ে রাতারাতি বিখ্যাত রানিগঞ্জের ববিতা, ধন্যি মেয়ের পাশে প্রশাসন

ব্লক প্রশাসনিক কর্তারা আদিবাসী মেধাবি ছাত্রীকে সংবর্ধনা দেন। The post মায়ের জন্য একা হাতে কুয়ো খুঁড়ে রাতারাতি বিখ্যাত রানিগঞ্জের ববিতা, ধন্যি মেয়ের পাশে প্রশাসন appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 08:42 PM Jun 28, 2020Updated: 08:53 PM Jun 28, 2020

চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় নিজেই কুয়ো খোঁড়া শুরু করেছিলেন রানিগঞ্জের মেধাবি ছাত্রী ববিতা সোরেন। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালে খবরটি প্রকাশিত হয় শনিবার। রবিবারই ববিতার বাড়ি গিয়ে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিল ব্লক প্রশাসন। বাড়িতে গিয়ে তাঁকে সম্মান জানালেন বিধায়ক। আদিবাসী ওই ছাত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন রানিগঞ্জের (Ranigunj) বিডিও অভিক বন্দ্যোপাধ্যায় ও আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। অসম্পূর্ণ কুয়োটি তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাসের পাশাপাশি ববিতাকে সম্বর্ধনা জানান তাঁরা। সোরেন পরিবারের সবার হাতে জবকার্ড দেওয়ারও আশ্বাস দেওয়া হয় বল্লভপুর পঞ্চায়েতের তরফ থেকে।

Advertisement

রাস্তা তৈরির জন্য একাই পাহাড় ভেঙেছিলেন বিহারের মাউন্টেন ম্যান দশরথ মাঁঝি। যা নিয়ে সেলুলয়েডে সিনেমাও হয়। এবার পানীয় জলের জন্য একাই কুয়ো খুঁড়ে ফেলেছেন আদিবাসী কন্যা ববিতা। বাড়িতে পানীয় জলের সমস্যা। অনেক দূর থেকে জল বয়ে নিয়ে আসেন মা। মায়ের কষ্ট মেটাতে নিজেই পাতকুয়ো খুঁড়েছেন ববিতা। রানিগঞ্জ বল্লভপুর পঞ্চায়েতের বক্তানগর আদিবাসী পাড়ার লাইনপাড় এলাকায় ববিতা থাকেন মা, বাবা, ভাই ও দিদির সঙ্গে। ববিতা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন। বর্তমানে গলসি থেকে বিএড করছেন। আনলক ওয়ানে কলেজ এখনও বন্ধ। তাই হাতে অফুরন্ত সময়। ফাঁকা সময়ে মায়ের কষ্ট লাঘব করতে শাবল, ঝুড়ি, কোদাল হাতে নিজেই কুয়ো খোঁড়ার কাজ শুরু করেছিলেন। তবে ববিতাকে এই কাজে সাহায্য করছেন মা ও বোন।

[আরও পড়ুন: ‘ভারচুয়াল সভা দেখে তৃণমূলের মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে’, কটাক্ষ রাহুল সিনহার]

ববিতার মা মীনা সোরেন বলেন, “ববিতার বাবা হোপনা সোরেন কারখানায় কাজ করেন। ভাই বৈদ্যানাথ ভাড়া গাড়ি চালায়। বোন সুমিত্রা কাপড়ের দোকানে কাজ করে। লকডাউনে সবাই কর্মহীন হয়ে পড়েছে। টাকাপয়সা না থাকায় লোক লাগিয়ে কুয়ো করতে পারিনি।” ববিতা বলেন, “প্রথমে একটু কষ্ট হয়েছিল কুয়ো খুঁড়তে। পরে মা ও বোনের সাহায্য পেয়ে দ্রুত গতিতে কুয়ো খোঁড়ার কাজ চলছে। মাটির সঙ্গে চাঁই ও পাথর সরিয়ে ইতিমধ্যেই ১৮ ফুট খোঁড়া হয়ে গিয়েছে।”

মেধাবি ছাত্রীর কাজ অবাক করেছে বিডিও অভিক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি বলেন,  “আমি ববিতার বাড়ি গিয়েছিলাম। অসম্পূর্ণ কুয়োর কাজ সরকারিভাবে করে দেওয়া হবে। ১৮ ফুট পর্যন্ত কুয়ো খুঁড়তে যে খরচা হয়েছে সেই মূল্য ববিতাকে দিয়ে দেওয়া হবে। ওই পাড়ায় যাতে পানীয় জলের সমস্যা না থাকে তাই আরও নলকূপ বসানো হবে।”  আদিবাসী পরিবাবের মেধাবি ছাত্রীর মানসিক দৃঢ়তা অবাক করেছে বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। তিনি বলেন, “ওকে সম্মানিত করতে পেরে আমরা সম্মানিত হলাম। ভবিষ্যতে ওর পড়াশোনা ও চাকরি ক্ষেত্রে আমরা যতটা পারব সাহায্য করব।”

[আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে রেকর্ড বৃদ্ধি, রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল ১৭ হাজার]

কুয়ো খুঁড়ে যে এত সম্মান পেতে পারেন তা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি ববিতা। তিনি বলেন, “বিডিও সাহেব এবং বিধায়ক এসেছিলেন। আমাকে অভিনন্দন জানালেন। বাড়ির প্রত্যেকের জব কার্ড তৈরি করে দেবেন বলেছেন। সোমবার আমাকে আসানসোল এসডিএম অফিস যেতে বলেছেন। সেখানে সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। যা চাকরি ক্ষেত্রে কাজে লাগবে। বিধায়ক আমাকে একটা ল্যাপটপ দেবেন বলেছেন। আর পঞ্চায়েতে ডেটা এন্ট্রির কাজের দায়িত্ব দেওয়ার কথাও বলে গিয়েছেন। পাশাপাশি আমাদের এলাকায় একশো দিনের কাজে যে গাছ লাগানো হবে তাতে সুপারভাইজার হিসাবে দায়িত্ব নিতে বলেছেন।” ববিতার এই কৃতিত্বে যেমন পরিবারের লোকজন খুশি তেমনই তাঁকে নিয়ে গর্ব করছেন রানিগঞ্জের বাসিন্দারাও।

The post মায়ের জন্য একা হাতে কুয়ো খুঁড়ে রাতারাতি বিখ্যাত রানিগঞ্জের ববিতা, ধন্যি মেয়ের পাশে প্রশাসন appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup ছাঁদনাতলা toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার