ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: সংক্রমণ সর্বত্র, কোথাও কোথাও যেন তা লাগামছাড়া হয়ে উঠছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের এগারোটি অঞ্চলকে চিহ্নিত করে সেখানে গণহারে অ্যান্টিবডি টেস্টের প্রস্তুতি শুরু করল সরকার। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর, এলাকাগুলির মধ্যে রয়েছে কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা ও হাওড়ার একাধিক জায়গা। এ বিষয়ে আইসিএমআর-কে ইতিমধ্যে অবহিত করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রাথমিক তথ্য মোতাবেক, বর্তমানে করোনা ভাইরাস (Corona Virus) দ্রুত ছড়াচ্ছে। আটচল্লিশ ঘণ্টা আগেও রাজ্যে তিনটি জায়গায় গোষ্ঠী সংক্রমণের ইঙ্গিত মিলেছিল। বুধবার সংখ্যাটা প্রায় চারগুণ। স্বাভাবিকভাবেই চিকিৎসক মহলে উদ্বেগ বেড়ে চলেছে। আরও চিন্তার কারণ, সংক্রমিত অধিকাংশ এলাকা কলকাতা বা তার আশপাশে। হাওড়ার কয়েকটি ঘিঞ্জি মহল্লাতেও গোষ্ঠী সংক্রমণের আঁচ মিলেছে। এ সব তল্লাটে রোগ কতটা ছড়িয়েছে, তা যাচাই করতে আইসিএমআর-কে প্রস্তাব দিচ্ছে রাজ্য। পাশাপাশি ওখানে পুরসভার সঙ্গে হাত মিলিয়ে গণহারে লালারসের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার কাজ জোরদারভাবে শুরু হয়েছে।
গত সোমবার নবান্ন জানায়, রাজ্যের কয়েকটি এলাকায় কোভিড-১৯ অতিমারী গোষ্ঠী সংক্রমণের চেহারা নিয়েছে। পরে জানা যায়, গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়েছে তিনটি এলাকায়। এবং সংক্রমণের পরিধি দ্রুত বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট সব অঞ্চলে সেরো-সার্ভে করার জন্য আইসিএমআর-কে অনুরোধ করেছে রাজ্য। রাজ্যের স্বাস্থ্য-অধিকর্তা ডা. অজয় চক্রবর্তী এদিন বলেন, “অ্যান্টিবডি টেস্ট করে সহজ ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে যাতে গোষ্ঠী সংক্রমণের আকার বোঝা যায়, সে ব্যাপারে আইসিএমআর-কে প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে।”
[আরও পড়ুন: লকডাউনে বন্ধ রাজ্যের সমস্ত রেশন দোকান, পরিবর্ত ব্যবস্থার কথা জানালেন খাদ্যমন্ত্রী]
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, রাজ্যে আইসিএমআরের নোডাল এজেন্সি হল নাইসেড (NYCED)। একমাত্র এই সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অ্যান্টিবডি টেস্ট সম্ভব। দেড় মাস আগেই কলকাতা পুরসভার তিনটি ওয়ার্ডে নাইসেড ও রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর একযোগে করোনার প্রভাব বুঝতে অ্যান্টিবডি টেস্ট শুরু করেছিল। তখন ধরা পড়েছিল, মহানগরের প্রায় ১৭% নাগরিকের মধ্যে করোনা ভাইরাসের প্রভাব স্পষ্ট। স্বাস্থ্য দপ্তরের ইঙ্গিত, উত্তর দমদমের নিমতা বা কলকাতার রাজাবাজার-মানিকতলা এবং দক্ষিণের বারুইপুর ছাড়াও উত্তর শহরতলির বরানগর, দক্ষিণের রাজপুর-সোনারপুরের কয়েকটি এলাকায় লাগামছাড়া সংক্রমণের প্রাথমিক ইঙ্গিত মিলেছে। হাওড়াতেও দ্রুত ছড়াচ্ছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. সঙ্ঘমিত্রা ঘোষের কথায়, “গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা করে মে মাসে স্বাস্থ্যভবনকে জানানো হয়েছিল। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছিল।”
[আরও পড়ুন: ‘তৃণমূল ওর উপর চাপ দিতে শুরু করেছিল’, মেহতাবের দলত্যাগ প্রসঙ্গে সাফাই দিলীপের]
The post করোনা রুখতে মরিয়া রাজ্য, শুরু গণহারে অ্যান্টিবডি টেস্টের প্রস্তুতি appeared first on Sangbad Pratidin.