অভিরূপ দাস: এক লক্ষে মেরেকেটে একজনের হয়। এমনই বিরল অসুখ হানা দিয়েছিল শরীরে। গিঁয়াবারি সিন্ড্রোম। ক্রমশ দুর্বল হচ্ছিল বুকের মাংসপেশি। দুর্বলতার কারণে শ্বাস নিতে পারছিলেন না। প্রথমে এমার্জেন্সি সেখান থেকে ভেন্টিলেশন। ওখানেই কেটে গিয়েছে টানা ৩ মাস। ৯০ দিন পর নতুন জীবন। ক্রমশ জড়বস্তুতে পরিণত হওয়া খড়দহের অঞ্জলি এখন নিজের হাতে ভাত খেতে পারছেন। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. সুগত দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, “এখানে যখন অঞ্জলি আসে তখন নড়াচড়া করতে পারত না। সারাদিন ভেন্টিলেশনে। এদিকে লকডাউনে হাসপাতালে টেকনিশিয়ানদের সংখ্যাও কমে গিয়েছিল। তারপরেও ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট টিম যেভাবে কাজ করেছে তাতে সকলের ধন্যবাদ প্রাপ্য।”
চিকিৎসকদের ধন্যবাদ দিয়ে অঞ্জলির স্বামীও বলেছেন, “আবার স্ত্রীকে ফিরে পাবো ভাবতে পারিনি।” অসুখের শুরু মাস চারেক আগে থেকে। অন্তঃসত্ত্বা অঞ্জলির শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আচমকাই কমতে শুরু করে। নিজের পায়ে হারানোর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গিঁয়াবারি সিন্ড্রোম এমনই। প্রথমে সামান্য ভাইরাল সংক্রমণ, এরপর শরীরে এমন এন্টিবডি তৈরি হয় যা নার্ভগুলোকে পচিয়ে দেয়। পেশিগুলো সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে যায়। ৪ মার্চ এই সমস্ত সমস্যা নিয়েই আরজিকর মেডিক্যাল কলেজে আসেন অঞ্জলি। প্রথমে চিকিৎসক অনিরুদ্ধ রায়ের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসার শুরু। শ্বাস-প্রশ্বাস সমস্যা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যাওয়ায় তড়িঘড়ি দেওয়া হয় ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে।
[আরও পড়ুন: এঁরাই অনুপ্রেরণা , কলকাতার করোনাজয়ী পুলিশকর্মীদের সঙ্গে দেখা করবেন কমিশনার]
দুবেলা খাবার জোটে না। সেখানে এই অসুখের আইভিআইজি বা ইন্ট্রাভেনাস ইমিউনো গ্লোবিউল ইঞ্জেকশনের দামই দু লক্ষ টাকা। গোটা আরজিকর ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট টিম পাশে দাড়ায় মরণাপন্নর। এর মধ্যেই হানা দেয় বালবার পলিসি। নিজের গলার কফটাও তুলতে পারছিলেন না। চিকিৎসক সুগত দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, আমরা হাল ছাড়িনি। রোগীকে সুস্থ করতে পুরো প্লাজমাটাকেই পুরো পরিবর্তন করা হয়। শেষে ট্র্যাকিওস্টমি করা হয়। যদিও পেটের ষোল সপ্তাহের সন্তানটিকে বাঁচানো যায়নি।
The post বিরল অসুখের হানা শরীরে, টানা ৯০ দিন ভেন্টিলেশনে কাটিয়ে পুনর্জন্ম মহিলার appeared first on Sangbad Pratidin.